কাদিনায়ানীদের কাফের ঘোষণার দাবি

প্রকাশিত: ১০:২৬ অপরাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৩

কাদিনায়ানীদের কাফের ঘোষণার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আহমদিয়া মুসলিম জামাত বা কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘বিভাগীয় খতমে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৭ মে) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

“মহাসমাবেশে বক্তারা মহান জাতীয় সংসদে আইন পাস করে কাদিনায়ানিদের কাফের ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।”

 

‘উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’ নামের অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠনের ডাকে আয়োজিত এই মহাসমাবেশে অর্ধলক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। দুপুরের আগে থেকেই বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি নিয়ে মিছিল সহকারে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও মাদরাসা শিক্ষার্থীরা মহাসমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। জোহরের নামাজের পর রেজিস্ট্রারি মাঠে আর তিল ধারণের জায়গা থাকে না। এক পর্যায়ে মাঠ উপচে একদিকে তলতলা পয়েন্ট ও অপরদিকে কামরান চত্বর পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে। জনস্রোত থেকে কিছুক্ষণ পরপর স্লোগান উঠে- ‘নবীর পরে নবী নাই- সংসদে আইন চাই’। বিকেল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শেষ হয়।

এদিকে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে’ ধর্মীয় নেতাদের পাশাপাশি একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য দেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানও এতে বক্তব্য দেন।

 

মহাসমাবেশে বক্তারা বলেন, আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। তিনি এক ও দ্বিতীয়। এটা যেভাবে মুসলমানদের মূল বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত। ঠিক তেমনি আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সা. সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ। প্রিয়নবী সা.-এর পর কোনো নবী আসবেন না। এটা মুসলমানদের মূল বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ সা. সর্বশেষ নবী, এটাই খতেম নবুয়ত। নবীজির পর আর কোনো নবী এ পৃথিবীতে আগমন করবেন না। এ ব্যাপারে কোনো মুসলমান যদি সামান্য পরিমাণ সন্দেহ করে সে মুসলমান থাকতে পারবে না।

 

মহাসমাবেশে উলামা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবুল খায়ের বিতঙ্গলী সরকার বরাবরে কয়েকটি প্রস্তাবনা পেশ করেন।

 

মাওলানা শায়েখ জিয়া উদ্দিন, মাওলানা আলিমুদ্দিন দুর্লভপুরী ও মাওলানা শায়েখ মহসিন আহমদের যৌথ সভাপতিত্বে এবং মাওলানা আবুল হুসাইন চাতুলী, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা নিয়মত উল্লাহ খাসদবীরি, মুফতি রশিদ আহমদ ও মাওলানা আহমদ সগীর বিন আমকুনীর যৌথ পরিচালনায় মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন মাওলানা নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুনা, মাওলানা আব্দুস সোবহান জাউয়া, মাওলানা আব্দুল বছির সুনামগঞ্জী, মাওলানা সামসুদ্দিন দুর্লভপুরী, প্রিন্সিপাল মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ, মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান, মাওলানা মোস্তাক আহমদ খান, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন আহমদ রাজু, মাওলানা আহমদ আলী চিল্লা, মাওলানা আতাউর রহমান কোম্পানিগঞ্জী, মাওলানা মুহিবুর রহমান মিটিপুরী, মাওলানা মাশুক আহমদ সালামী, মাওলানা আহমদ কবির বিন আমকুনী, মাওলানা শাহ মমশাদ আহমদ, মাওলানা মুহিবুর রহমান মক্তিরচক, মাওলানা শায়েখ সাইফুল্লাহ, মাওলানা রেজাউল কবির আবরার, মাওলানা নজরুল ইসলাম তৌয়াক্কুলী, মুফতি মুজিবুর রহমান আঙ্গরা, মাওলানা ইউসুফ আহমদ খাদিমানি, মুফতি আবুল হাসান লামারগ্রামী, এডভোকেট শাহিনুর পাশা চৌধুরী, ক্বারী আব্দুল হাফিজ শাহবাগ, মাওলানা এনামুল হক বহরগ্রাম, মাওলানা হিলাল আহমদ হরিপুর, মাওলানা জিলাল আহমদ শ্রীরামপুরী, মাওলানা আহমদ বিলাল মৌলভীবাজার, প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা মাহমুদুল হাসান এল এল বি, মাওলানা তফজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা গাজী রহমত উল্লাহ, মাওলানা জুনাইদ কিয়ামপুরী, মাওলানা মুহি উদ্দিন, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মাওলানা জাকারিয়া মাহমুদ, মাওলানা তালিব উদ্দিন, মাওলানা ইমরান আলম, মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাব, মাওলানা নুর আহমদ কাসিমী, মাওলানা আব্দুর রহমান শাহ জাহান, মাওলানা সৈয়দ মাসরুর আহমদ, মাওলানা সাইদ আহমদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ গাজীনগরী, মাওলানা দিলওয়ার হোসেন, মাওলানা এহিয়া খান, গোয়াইঘাট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েছ, কানাইঘাট উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকের, রাজাগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা শামসুল ইসলাম, মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মোহম্মদ আলী, মুফতি এবাদুর রহমান ও ক্বারি হারুনুর রশিদ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ‘উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র সভাপতি ছিলেন সিলেটের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দীন আল্লামা মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ী)। শনিবারের মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু গত ১৭ মে তিনি শেষে নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই মহাসমাবেশে তাঁর সভাপতিত্ব করার কথা ছিল। মহাসমাবেশে আল্লামা মুহিব্বুল হক (গাছবাড়ী)-এর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

 

আহমদিয়া মুসলিম জামাত
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের সুন্নি মুসলিমদের অনেকে ‘অমুসলিম’ বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।

 

ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানী বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তানে আহমদিয়াদের সব ধরণের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

(সুরমামেইল/এমএইচ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com