সিলেট ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মুদি দোকানের কর্মচারী সজল বিশ্বাস পটল (৩৮) হত্যা মামলার দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আাদেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আসামিদের ২৮২ ধারায় ২ বছর ও ৪৪৯ ধারায় ৫ বছরের কারাদণ্ডেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দায়রা ৫২০/২৩ মামলায় এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন– মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার ভোলারকান্দি গ্রামের মৃত দছির আলীর ছেলে শাকিল (২০) ও মিয়াধন মিয়ার ছেলে সুমন আহমেদ (২২)। এই মামলার অপর তিন আসামি হত্যার ঘটনার সময়ে আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শিশু আদালতে (মামলা নং-১৫৭/২৩) তাদের বিচারিক কার্যক্রম বর্তমানে শুরুর পর্যায়ে রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন।
তিনি জানান, মামলার রায় দেয়ার সময় আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রসিকিউশন পক্ষ সর্বতভাবে মামলাটি প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। মামলার আসামিদের বয়স যেহেতু খুবই কম, সেকারণে তাদেরকে মৃত্যুদন্ড না দিয়ে তাদেরকে সংশোধনের সুযোগ হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হল। একটা সময় আসামীরা নিজেদের অল্প বয়সের ভূল বুঝতে পেরে কারাগারে শাস্তি ভোগ শেষে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
মামলার ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে বাদিপক্ষের এ আইনজীবী জানান, আইনের সাথে সংঘাতে জড়িত স্থানীয় তিন শিশু প্রায়ই ঋষিকেশ দে এর মুদি দোকানে আসতো। ২০ বছর ধরে দোকানে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত সজল বিশ্বাস পটলের কাছ থেকে শিশুরা বাকিতে জিনিসপত্র নিতো। পূর্বের বাকির টাকা না দিয়ে নতুন করে বাকিতে মালামাল দেয়ার জন্য দোকান কর্মচারী সজলকে তারা চাপাচাপি করতো। এ নিয়ে হত্যাকান্ডের পূর্বে ভিক্টিম সজলের সাথে তাদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে ২০২২ সালের ২০ জুলাই রাতে স্থানীয় ৩ শিশুর সাথে ঐ এলাকায় বেড়াতে আসা আসামী শাকিল ও সুমনসহ সর্বমোট পাঁচ জন যুক্ত হয়ে দোকানের সামনের কালভার্টে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে নিহত সজলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন নিহত সজল প্রতিদিনের মতো দোকান মালিকের বাড়ি থেকে রাতের খাবার শেষে দোকানে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে ফেরত আসলে দোকানে ঢুঁকে ঘটনায় জড়িত ৫ জনের মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪ জন ভিক্টিম সজলের গলায় গামছা পেছিয়ে একে অপরের সহায়তায় শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এসময় দোকানের বাইরে রাস্তার উপর একজন বাইরে দাঁড়িয়ে থেকে স্থানীয়দের আসা যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখছিল। সজল হত্যাকান্ড নিশ্চিত করার পর আসামিরা দোকানের ক্যাশে থাকা নগদ ৩হাজার ২শত ৩০ টাকা চুরি করে লাশ দোকানের দোকানের মেঝেতে ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা এদের দেখে ফেলায় তারা দ্রুতই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ভোর রাতে ঘিলাছড়া আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা থেকে শাকিল ও সুমনসহ ৪জনকে আটক করে। তাৎক্ষণিকই তারা স্থানীয়দের সামনে সজল হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পরবর্তীতে হত্যাকান্ডে জড়িত অপর এক শিশুকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকান্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এক শিশুসহ ৩ জন বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। এই মামলায় মোট ৩১ সাক্ষীর মধ্যে মোট ১৯ জন সাক্ষী আদালতে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. নিজাম উদ্দিন। এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ হওয়া দুই আসামির আইনজীবী হিসেবে আদালতে মামলা পরিচালনা করেন মো. জয়নাল আবেদীন।
এদিকে মামলায় রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন।
(সুরমামেইল/এমকেএইচ)
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি