মথুরাপুর বিদ্যালয়ে পড়ছে ২০ যমজ ভাই-বোন

প্রকাশিত: ৩:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৩

মথুরাপুর বিদ্যালয়ে পড়ছে ২০ যমজ ভাই-বোন

মো: ইসলাম, ঠাকুরগাঁও :
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মথুরাপুর পাবলিক হাইস্কুলে এক সাথে বিভিন্ন শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন ২০ জন যমজ ভাই-বোন। তাদের নামগুলো প্রায় একই রকম ও চেহারার মিলও দেখা যায়। সে কারণে কোনটা কে সেটা বুঝতে মাঝে মাঝে বিড়ম্বনায় পরতে হলেও যমজ বিষয়টি বেশ উপভোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষাকরা।

 

বিদ্যালয়টির ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে তাহসিন-তাসনিম ও সান-মুন, সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে কার্তিক-গণেশ, হাবিব-হাফিজ ও সুমাইয়া-সাদিয়া, অষ্টম শ্রেণিতে শুভ-সৌরভ, নবম শ্রেণিতে হাসি-খুশি ও তাহবি-তাসবি এবং দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করেন আবিদ-অমিত ও রাহুল রাহা- চঞ্চল রাহা। তারা যমজ ভাই বোন৷

যমজ ভাই-বোনদের চেহারায় মিল থাকায় তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে খানিকটা বিড়ম্বনা হলেও তাদের সাথে কাটানো সময়টা বেশ উপভোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহপাঠীরা।

 

অপরদিকে দুইজন একসাথে বেড়ে ওঠাকে এবং তাদের মত আরো জমজ ভাই বোনদের একই স্কুলে পড়ার বিষয়টিকে বেশ গর্বের সাথেই দেখছেন যমজ ভাই-বোনেরা৷

 

ষষ্ঠ শ্রেণীর যমজ দুই ভাই সান ও মুন বলেন, আমরা দুই ভাই একসাথে খাওয়া, খেলাধুলা ও স্কুলে আসা যাওয়াসহ প্রায় সব কাজ একসাথে করি৷ তবে আমাদের খাওয়া দাওয়ার পছন্দ এক হলেও দুজনের দুই রঙ পছন্দ৷ একজনের লাল আরেকজনের নীল৷ আমরা একই পোশাক পরে বিভিন্ন জায়গায় যাই৷ শুধু পোশাক না আমাদের জুতা, চশমা, প্যান্ট সব একরকম। এসব আমাদের খুব ভালো লাগে৷ তবে আমরা কে কোনটা তা অনেকে চিনতে পারেন না। আমরা এ বিষয়টাকে আরো বেশী উপভোগ করি।

 

সপ্তম শ্রেণীর যমজ দুই বোন সুমাইয়া ও সাদিয়া বলেন, আমাদের সব কাজগুলো আমরা একসাথে করি। আমাদের দুজনের প্রিয় রঙ হল নীল৷ আমরা একসাথে স্কুলে আসি। একসাথে ক্লাশে বসি৷ টিফিনের সময় আবার একসাথে খেলাধুলা করি। সব কাজগুলো আমরা একসাথে করি৷ ক্লাসের সময় একজনকে বকা দিলে আমাদের আরেকজনকে খুব খারাপ লাগে৷ স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাদের চিনতে পারেনা বেশিরভাগ সময়৷ তখন একসাথে দুজনকে ডাকলে আমাদের খুব ভালো লাগে।

 

নবম শ্রেণির যমজ দুই বোন হাসি ও খুশি বলেন, আমাদের একটা বড় সুবিধা হল কেউ কোন ভুল করলে একজন আরেক জনকে চাপিয়ে দেওয়া যায়৷ পরে আবার আমরা একসাথে মিলে যাই৷ আর পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের কাছে এবং শিক্ষকদের কাছেও আমরা বেশ আদর পাই৷ আমরা আমাদের পুরো সময়টা একসাথে কাঁটাই।

 

এছাড়াও সুমাইয়া-সাদিয়া, হাবিব-হাফিজ, তাহবি-তাসবি সহ অন্যান্য যমজ ছাত্র ছাত্রীরা একই কথা ব্যক্ত করেন।

 

বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, যমজ বিষয়টি আমি বেশ উপভোগ করি৷ তারা যখন পাশাপাশি বসে তখন তাদের দেখতেও ভালো লাগে। তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ অনেক বেশী। তারা যাতে ভালো কিছু করে সেই বিষয়ে আমরা তাদের উৎসাহিত করি৷

 

মথুরাপুর পাবলিক হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে ২০ জন যমজ ভাই-বোন পড়াশোনা করেন৷ তাদের নামগুলো প্রায় একই রকম ও চেহারার মিলও দেখা যায়। সে কারণে কোনটা কে সেটা বুঝতে মাঝে মাঝে বিড়ম্বনায় পরতে হয়। তবুও আমরা যমজ বিষয়টি বেশ উপভোগ করছি৷ তাদের মেধাও প্রায় সমান হয়৷ একজনের শ্রেণীর রোল নাম্বার দুই হলে অপরজনের তিন হয়। তাদের আচার-আচরণ, পোশাক পরিচ্ছদ একই রকম৷ তারা একসাথে থাকতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আমার আশা করছি তারা সকলে ভালো কিছু করবে।

 

(সুরমামেইল/এফএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com