সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২২
অনলাইন ডেস্ক :
স্বাস্থ্যজ্জ্বল দীঘল কালো লম্বা চুল সব নারীর পছন্দ। প্রাচীনকাল থেকেই লম্বা চুলের প্রতি নারীদের অন্যরকম একটা টান রয়েছে। লম্বা চুল শুধু একজন নারীর সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে তা নয়। বরং চুলের কিছুটা প্রভাব নারীর ব্যক্তিত্বের উপরেও পড়ে থাকে। তাই চুলের যত্নে কোন রকমের অবহেলা তারা করেন না।
নারীর জীবনের অন্যতম প্রিয় বস্তু হচ্ছে তার নিজের লম্বা চুল। তবে নারীদের লম্বা কালো চুল ঐতিহ্যের অংশ ও অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে চীনের হুয়াংলু গ্রামের স্থানীয় ইয়াও গোষ্ঠীর কাছে। চীনের বাসিন্দারা ঐ গ্রামকে ‘লনগেস্ট হেয়ার ভিলেজ’ হিসেবেই চেনে। এমনকি গিনেস বুকেও নাম রয়েছে এই গ্রামের। ইয়াও উপনিবেশ ‘বিশ্বের দীর্ঘতম চুলের গ্রাম’ হিসেবে সার্টিফিকেট পেয়েছে। এদের কাছে চুলের ধর্ম শুধুই বেড়ে যাওয়া। সারা জীবনে মাত্র একবারই চুল কাটেন এই চীনা এই নারীরা।
দুই হাজার বছর ধরে চীনের এ গ্রামটিতে চলে আসছে এই চুল না কাটার প্রথা। এই গ্রামের নারীরা ১৮ বছর বয়সে শুধু একবার চুল কাটতে পারবে। যখন তাদের বয়স ১৮ হয় অথবা তারা জীবনসঙ্গী খুঁজতে শুরু করেন তখনই চুল কাটা যাবে। তবে ঐ কাটা চুল ফেলে দেওয়া যাবে না। কাটা চুলের অংশ কিশোরীর দাদীমার হাতে দিতে হবে। এ চুল দিয়ে তৈরি অলঙ্কৃত শিরস্ত্রাণ ঐ কিশোরীর বিয়ের দিন তার বরকে উপহার দেওয়ার নিয়ম হিসেবে প্রচলিত আছে।
কয়েক যুগ আগেও এ গ্রামের নারীদের চুল নিয়ে সবাই ছিল বেশ রক্ষণশীল। রেড ইয়াওদের জীবনে চুল ছিল সম্পদের মতো। একসময় স্বামী-সন্তান ছাড়া কেউ নারীদের খোলা চুলে চোখ রাখার অনুমতি পেতো না। তখনকার দিনে গ্রীষ্ম বা শরতে নারীরা মাথায় নীল ওড়না বেঁধে নদীতে চুল ধুতে যেত। যদি কোন স্থানীয় বা বিদেশি কোন তরুণীর চুল দেখার জন্য বাড়াবাড়ি করতো, তাহলে শাস্তি হিসেবে তিনবছর তাকে ঐ তরুণীর বাড়িতে জামাই হিসেবে থাকতে হতো।
কিন্তু পুরনো এ নিয়ম ভেঙে ফেলা হয় ১৯৮৭ সালে। এখন ইয়াও নারীরা স্বগর্বে উন্মুক্ত ভাবে নিজের চুল প্রদর্শনী করতে পারে। আপাতত এই লম্বা চুলকেই ব্যবহার করে পর্যটকদের থেকে টাকা আয় করেন ঐ প্রদেশের নারীরা। এছাড়াও লম্বা চুলের নারীরা দলবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে নাচ, গান করে পর্যটকদের থেকে মাসে ৩০০ ডলার করে রোজগার করে। তারা চুলে কোন কাটছাঁট করে হেয়ারস্টাইল না করলেও তাদের মধ্যেও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হেয়ারস্টাইল।
যদি কোনো নারী চুল সাধারণভাবে মাথার চারপাশে জড়িয়ে রাখে তাহলে বুঝতে হবে সে বিবাহিত। তবে তার কোনো সন্তান নেই। যদি সে তার মাথায় রুমাল জড়িয়ে রাখে, তার মানে সে জীবনসঙ্গী খুঁজছে। বলা হয়ে থাকে, রেড ইয়াও নারীর চুলের তিনটি স্তবক। প্রথম হলো চুল যা প্রতিদিন গাজায়। দ্বিতীয়ত, কেটে ফেলা অংশ ও তৃতীয় হচ্ছে, ঝরে পড়া চুল যা রোজই সংগ্রহ করা হয়। তিন স্তবকের চুল বিন্যাস তাদের সামাজিক মর্যাদার প্রতিনিধিত্ব করে।
শত ঝামেলাতেও সত্ত্বেও একবার এর বেশি চুল কাটার অনুমতি পাননা এ গ্রামের নারীরা। এরপর স্বাভাবিকভাবে চুল তার নিজের আপন খেয়ালে বেড়েই চলে। এখানকার নারীদের চুল সতেজ রাখার জন্যও কোনো তেল লাগে না। লাগে না কোনো শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার। চুলের যত্নে রেড ইয়াও ব্যবহার করে একটি বিশেষ শ্যাম্পু। চাল ধোয়া পানি দিয়ে হয় চুলের চর্চা। আর গ্রামের পাশে দিয়ে বয়ে চলা নদীর পানিতে চুল ভালো করে ধুয়ে নেন তারা। এভাবেই চলে নিয়মিত চুলের পরিচর্যা।
তারা লম্বা চুলকে এতো প্রাধান্য দেয়ার কারণ তাদের বিশ্বাস- লম্বা চুল আয়ু, ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্য বয়ে আনে। এ বিশ্বাস আর ঐতিহ্যকে প্রায় দুই হাজার বছর ধরে লালন করে আসছে হুয়াংলুর রেড ইয়াও নারীরা। সাধারণত এই গ্রামের নারীদের চুল প্রায় ২.১ মিটার বা ৬.৮ ফুট লম্বা হয়। বয়স হলেও তাদের চুলে পাক ধরে না। এছাড়াও ২০০৪ সালে সবচেয়ে লম্বা চুলের জন্য গিনেজ বুকে নাম লিখিয়েছিলেন এখানকার এক নারী। তার চুল ছিল ১৮ ফুটেরও বেশি লম্বা।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি