সিলেট ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০১৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ওই মানুষগুলো ঠিক কী রকম, তা বলে বোঝাতে পারব না। ওরা মানুষ নয়। ওমর নামে একজন আমাকে তার ঘরে আটকে রেখেছিল। আমার সন্তানদের কোথায় নিয়ে চলে গেল কে জানে! আমার বাচ্চাদের রোজ মারত। অসম্ভব হিংস্র। প্রতিদিন আমায় অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করত। আমার বাবা ও ভাইকেও ওরা অপহরণ করেছে। আমি জানি না ওরা কোথায় আছেন? আমার মনে হয়, ওরা বাবা ও ভাইকে খুন করে দিয়েছে। তবে ওদের হাতে অত্যাচারিত হওয়ার চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো। আমিও তো প্রতিদিন ঈশ্বরের কাছে মৃত্যুর প্রার্থনা করতাম।
এভাবেই নিজের প্রতি অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছেন ২৩ বছর বয়সী এক নারী। সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের আখরায় ৭ মাস কাটিয়ে কোনোরকম পালিয়ে বেঁচেছেন তিনি। নিরাপদ আশ্রয়েও ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছেন। হাত-পা অবশ। জঙ্গিরা তাকে ব্যবহার করতো যৌনদাসী হিসেবে। তার শরীরটাকে নিয়ে যেমন ইচ্ছে খেলা করতো জঙ্গিরা। কীভাবে আইএস জঙ্গিরা দিনের পর দিন তাকে ছিঁড়ে খেয়েছে, তার নির্মম বর্ণনা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।
৪ সন্তানের মা ওই ইয়াজিদি নারী আরো বলেন, আমাদের অপহরণ করার পর ওরা বাসে করে একটা অজানা এলাকায় নিয়ে গেল। যাওয়ার সময় বাসেও আমাদের ধর্ষণ করল। সঙ্গে বেধড়ক মারধর। দেড়শো ইয়েজিদি পরিবারকে ওরা মসুল নিয়ে গেল। সেখানে আইএসের মানুষ বিক্রির বাজার আছে। একটা লোক বলল, সে আমায় কিনবে। লোকটা মোটা দাম দিয়ে আমায় কিনে নিয়ে গেল ওর আখরায়। আমাকে এমন কিছু জামা-কাপড় দিল, যাতে আমি প্রায় অর্ধনগ্ন থাকি। তারপর সন্ধ্যা নামলেই শুরু হত ধর্ষণ। সঙ্গে মারধর। আমি একবার পালানোর চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু জঙ্গিরা আমায় ধরে ফেলে। সেদিন রাতে আমায় ওরা বেধড়ক মারল ও গণধর্ষণ করল। ওদের দাবি, ইসলাম নাকি ওদের মুসলিম নয়, এমন নারীদের সঙ্গে সেক্স করতে বলেছে।
রাষ্ট্রসংঘের তথ্যানুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার ইয়েজিদি পরিবারকে অপহরণ করেছে আইএস। কিছু পরিবারকে উদ্ধার করা গেছে। তবে বেশির ভাগ পরিবারেরই কোনো হদিশ নেই।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি