সিলেট ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৫
সুরমা মেইলঃ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেবে সংগঠনের পৌর ও উপজেলা কমিটি। এ দুই কমিটির ১৩২ জন নেতা প্রয়োজনে ভোটাভুটির মাধ্যমে মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের পৌর ও উপজেলা কমিটির নেতারা দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। এই প্রক্রিয়া শুধু পৌরসভা নির্বাচনে কার্যকর হবে।অবশ্য এ সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে। এ বৈঠকের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এরই মধ্যে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রাথমিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি এ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচনী বোর্ড গঠন এবং আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনারও তাগিদ দিয়েছেন।
এরই অংশ হিসেবে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য পৌর ও উপজেলা নেতাদের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতারা পৌর ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন।
একই সঙ্গে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের বেলায় অতিমাত্রায় সতর্ক থাকার জন্য তৃণমূল পর্যায়ের এ দুই স্তরের নেতাদের সজাগ করে দেওয়া হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্রের ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উপজেলা কমিটিতে ৬৭ এবং ৪১ অনুচ্ছেদের (গ) ধারা অনুযায়ী পৌর কমিটিতে ৬৫ জন রয়েছেন।
এই ১৩২ নেতাকে বলা হয়েছে, পৌরসভা নির্বাচনে তারাই দলের প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। এ জন্য নেতাদের সব ধরনের দায়দায়িত্ব নিতে হবে। অর্থাৎ দল মনোনীত প্রার্থীর ফল বিপর্যয় হলে কেন্দ্রের কাছে তৃণমূল নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগে গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা দল-সমর্থিত প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ওই সময় বিভিন্ন উপজেলায় অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী সমর্থনের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে অনেক উপজেলায় দল-সমর্থিত প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছিল।
এবার পৌরসভা নির্বাচনে এমন গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পৌর ও উপজেলা কমিটি বাতিল করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নতুন করে সংশ্লিষ্ট পৌর ও উপজেলা শাখার সম্মেলন করে নতুন নেতা নির্বাচনের হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়েছে বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন।
এসব কারণে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনে নিজেদের মধ্যে ভোটাভুটির পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পৌর ও উপজেলা কমিটির অন্তর্ভুক্ত নেতারা ভোটাভুটির মাধ্যমে মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন করতে পারবেন।
এ প্রক্রিয়ায় প্রার্থী মনোনয়ন করা হলে মন্ত্রী ও দলীয় এমপিরা কর্তৃত্ব হারাবেন বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাদের ভাষায়, পৌর ও উপজেলা নেতারা দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের সুযোগ পেলে গণতন্ত্রের চর্চা আরও বিকশিত হবে। সে সঙ্গে মন্ত্রী ও এমপিরা নিজেদের লোক তৈরির সুযোগ হারাবেন। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রার্থী মনোনয়নে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাবেন না।
কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন, পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দ্রুতই পৌর ও উপজেলা নেতাদের কাছে দলের নির্দেশনা পাঠানো হবে। এর আগে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচনী বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য একটি সংসদীয় বোর্ড গঠনের বিধান রয়েছে। অর্থাৎ সংসদীয় বোর্ড এমপি পদে মনোনয়ন দিচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন করতে হলে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। এরই মধ্যে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
তবে পৌরসভা নির্বাচনের আগে দলের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারক নেতারা। তাদের ভাষায়, জাতীয় সম্মেলন ছাড়া দলীয় গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনা যাবে না। আর আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। এর আগেই পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
এ কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে দলের প্রতিটি সাংগঠনিক পৌর ও উপজেলা শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের কাছে একটি নির্দেশনা পাঠানো হবে। এই নির্দেশনায় পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন করতে দলের পৌর ও উপজেলা পর্যায়ে একটি নির্বাচনী বোর্ড গঠনের তাগিদ দেওয়া হবে। এই নির্বাচনী বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়াও জানিয়ে দেওয়া হবে ওই নির্দেশনায়।
পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তৃণমূল নেতাদের কাছে এই নির্দেশনা পাঠানো হবে বলে নেতারা জানিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম তৃণমূল নেতাদের কাছে এই নির্দেশনা পাঠাতে পারেন। তিনি এখন লন্ডনে অবস্থান করছেন। ১৮ অক্টোবর দেশে আসার কথা থাকলেও তিনি এখনও ফেরেননি।
এদিকে, দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা পৌর এলাকাগুলোতে তাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তারা তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি ভোটারদেরও দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে ঢাকায় এসে মন্ত্রী ও এমপিদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হলেও দলের সাত সাংগঠনিক সম্পাদক- আহমদ হোসেন, অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ভূঁইয়া মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, বীর বাহাদুর উ শৈ সিং এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি ও খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। দলের সিদ্ধান্ত পেলেই তারা নির্বাচনী কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ত করবেন।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি