আবারও চালু হচ্ছে অবহেলিত শমসেরনগর বিমানবন্দর

প্রকাশিত: ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩০, ২০১৬

আবারও চালু হচ্ছে অবহেলিত শমসেরনগর বিমানবন্দর

file

সুরমা মেইল নিউজ : অবহেলায় অব্যবহৃত পড়ে থাকা সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শমসেরনগর বিমানবন্দর পুণরায় চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটি চালু হলে সিলেটের শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। শমসেরনগর বিমানবন্দরটি ফের চালুর উদ্যোগের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

জানা যায়- দেশে তিনটি আন্তর্জাতিক ও ১২টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। এই অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে চলমান রয়েছে মাত্র পাঁচটি। বাকিগুলো রয়েছে বন্ধ। জরুরি অবতরণের জন্য থাকা দেশের তিনটি বিমানবন্দরের মধ্যে কেবলমাত্র চালু রয়েছে তেজগাঁও বিমানবন্দর। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে মৌলভীবাজারের শমসেরনগর ও বগুড়া বিমানবন্দরটি।

আরও জানা যায়- ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় অভিযান চালানোর জন্য ব্রিটিশ সরকার মৌলভীবাজারের শমশেরনগর চা বাগানের ৬২২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে একটি বিমানবন্দর গড়ে তোলে। ব্রিটিশ আমলে ওই বিমানবন্দরটি ‘দিলজান্দ বন্দর’ নামেই পরিচিত ছিল। বিমানবন্দরটিতে ৬ হাজার ফুট দীর্ঘ ও ৭৫ ফুট প্রশস্ত রানওয়ে রয়েছে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর বিমানবন্দরটির নতুন নামকরণ করা হয় ‘শমসেরনগর বিমানবন্দর’।

প্রশস্ত রানওয়ে, বিশাল পরিসর, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ও সব ধরনের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকা এ বিমানবন্দরে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত বিমান ওঠানামা করতো। পরবর্তীতে বিমানবন্দরটিতে যাত্রীবাহী বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৭০ সালে পিআইএ’র অভ্যন্তরীণ একটি ফ্লাইট সিলেট বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শমশেরনগর বিমানবন্দরে জরুরী অবতরণকালে রানওয়ের কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। সেসময় বিমানবন্দরের ভেতরে অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় এর বেশকিছু অবকাঠামো পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।

১৯৭৫ সালে শমসেরনগর বিমানবন্দরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ ইউনিট খোলা হয়। পরবর্তী সময়ে এখানে বিমান বাহিনীর একটি পরীক্ষণ স্কুল স্থাপন করে চালু করা হয় বার্ষিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তখন থেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান ও হেলিকপ্টার ওঠানামা করছে।

বর্তমানে বিমানবন্দরের অবহেলিত ও পতিত ভূমি ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল কৃষি খামার। এখানে বিমানবাহিনীর রিক্রুটমেন্ট অফিসও খোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে রানওয়ের অল্প কিছু অংশ।

বিমানবন্দরটিতে প্রতিবছর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জাতীয় ক্যাডেট কোর বিমান শাখার সদস্যদের অগ্নিনির্বাপণ, প্রাথমিক চিকিৎসা, রাডার নিরাপত্তা, ফায়ারিংসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে শমসেরনগর বিমানবন্দর থেকে এ্যারোবেঙ্গল এয়ার সার্ভিসের ফ্লাইট চালু করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে এ ফ্লাইট সার্ভিসটি যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি। পরে এ প্রক্রিয়াও একসময় মুখ থুবড়ে পড়ে যায়।

শমসেরনগর বিমানবন্দর ফের চালু প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকে জানান- সরকার ইতিমধ্যে শমশেরনগর বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com