উপদেষ্টা আসার খবরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মেরামতে ‘তোড়জোড়’

প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০২৫

উপদেষ্টা আসার খবরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মেরামতে ‘তোড়জোড়’

Manual2 Ad Code

উপদেষ্টার আগমনের খবরে তড়িঘড়ি করে সংস্কারকাজ চলছে। ছবি সংগৃহীত


নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জের আউশকান্দি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্বরোড অংশের সড়কটির যানজটের দৃশ্য দেখতে আগামীকাল (বুধবার) পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের।

 

এরআগে গত ৩ অক্টোবর সুরমামেইল.কম-এ “ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তীব্র যানজট, চরম দুর্ভোগ” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর আগামীকাল পরিদর্শনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসার খবর পাওয়া গেলো।

 

স্থানীয় লোকজনের দাবি, উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে তড়িঘড়ি করে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। উপদেষ্টা চলে গেলে আবার ইট তুলে ফেলা হবে।

 

তবে সওজের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলছেন, এটি সংস্কার নয়, মেরামতকাজ; ইট সরানো হবে না বরং স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবেই কাজটি চলছে।

 

সওজ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘ যানজট নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে সরকার। এরমধ্যে শনিবার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরাইল বিশ্বরোড অংশে যানজট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ আসে।

 

ওইদিন বিকাল থেকে সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করে সওজ। সেখানে তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলছে। গোলচত্বর অংশে ১২ মিটার প্রস্থ ও ১৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য। আর গোলচত্বর থেকে সিলেটমুখী সরাইল কুট্টাপাড়া খেলার মাঠ পর্যন্ত ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে তিন স্তরে ইট ও বালু বিছানো হচ্ছে।

 

সওজ জানায়, ঢাকা, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তৈরি ইট আনা হচ্ছে। এখানে মোট চার লাখ ইট বিছানো হবে। শনিবার বিকাল থেকে রোববার রাত পর্যন্ত গোলচত্বর এলাকায় তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত চলবে এ মেরামতের কাজ।

 

সওজের কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা থেকে ট্রেনে ভৈরবে পৌঁছাবেন। সেখান থেকে সড়কপথে সরাইল বিশ্বরোডে যাবেন তিনি। সেখানে গোলচত্বরের ভাঙন, যানজট এলাকা ও মেরামতকাজ পরিদর্শন করবেন উপদেষ্টা।

 

প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, স্থানীয় সড়ক বিভাগ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কর্তৃপক্ষকে দিয়ে সড়কের ৬০০ থেকে ৭০০ মিটার অংশের মেরামত চলছে। তবে চার লেন প্রকল্পের কিছুই করছে না।

 

Manual5 Ad Code

সওজ ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় জানিয়েছে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ আট বছর ধরে ধীরগতিতে চলছে।

 

Manual6 Ad Code

পাঁচ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশি অর্থ ও ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কাজ ফেলে ফিরে যান।

 

Manual3 Ad Code

প্রায় তিন মাস পর তারা ফিরে এসে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাদের অনেক মালামাল খোয়া গেছে। ৫ অগাস্টের পর প্রকল্পের কাজের গতি আরও কমে যায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেপ্টেম্বরের শেষে সরকার অতিরিক্ত ১৬৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়।

Manual7 Ad Code

 

এ বিষয়ে প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, আরও ১৬৩ কোটি টাকা নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

 

কাজ দেরিতে শুরু করা বিষয়ে জানতে চাইলে সওজের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এটি কোনও সংস্কারকাজ নয়, বড় একটি কাজ। আমরা নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিলাম। নিজেরা বড় উদ্যোগ নিলে প্রশ্ন উঠত। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পরই স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে আমরা কাজে হাত দিয়েছি।

 

(সুরমামেইল/এফএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code