সুরমা মেইলঃ তেমন বড় বা জটিল কোনো প্রযুক্তি নয় বরং সাধারণ একটি ক্ষুদে বার্তা দিয়েই হ্যাক হতে পারে স্মার্টফোন। হ্যাকিংয়ের পর ব্যবহারকারীর কথাবার্তা ও স্মার্টফোনে থাকা ছবি নিয়ে যেতে হ্যাকাররা। আর এই প্রক্রিয়ায় স্মার্টফোনে কোনো এসএমএস এসেছে কি-না তা টেরও পাবেন না এর ব্যবহারকারী।
ব্রিটিশ গোয়েন্দারা এধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটির নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক চুক্তিভিত্তিক গোয়েন্দা এডওয়ার্ড স্নোডেন। সোমবার বিবিসির ‘প্যানোরামা’ প্রোগ্রামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন আশঙ্কা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
স্নোডেন বলেন, ‘তারা (ব্রিটিশ গোয়েন্দা) আপনাকে নয় বরং আপনার ফোনটি দখল করতে চায়।’ ব্রিটিশ সরকারের প্রধান যোগাযোগ দফতরের (জিসিএইচকিউ) বরাত দিয়ে স্নোডেন দাবি করেন, বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বন্ধ থাকা অবস্থায়ও স্মার্টফোনে প্রবেশ করে কথাবার্তা, ছবি চুরি করতে পারে। বিশেষ সংকেত থেকে এসএমএসে রূপান্তরিত কোডের মাধ্যমে হ্যাকিংয়ের কাজটি করা হয়। এক্ষেত্রে এসএমএসটি ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন আসলেও সেটি গোপন থাকে এবং তিনি সেটি টের পান না।
নাগরিকদের উপর নজরদারি কার্যক্রম বাড়াতে ‘স্মার্ফ সুইট’ নামে ব্রিটিশ সরকারের অনুমোদনে জিসিএইচকিউ’র একটি গোপন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম রয়েছে বলেও জানান স্নোডেন।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসএ) সঙ্গে জিসিএইচকিউ’র উদ্দেশ্যগম মিল রয়েছে দাবি করে মস্কোর একটি হোটেল থেকে তিনি বলেন, ‘জিসিএইচকিউকে প্রযুক্তি ও দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে এনএসএ। প্রতিদানে জিসিএইচকিউ ব্রিটেনে সংগ্রহ করা এনএসএ’র কাঙ্ক্ষিত তথ্য দিয়ে সহায়তা করে।’
এই হ্যাকিং কার্যক্রমে ব্যবহৃত ‘নৌজি স্মার্ফ’, ‘ট্র্যাকার স্মার্ফ’, ‘ড্রিমি স্মার্ফ’ এর মতো কিছু সংকেতিক নামের প্রযুক্তি ও এসবের বিশেষত্ব তুলে ধরেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর নজদারির গোপন তথ্য ফাঁস করে বিশ্বে আলোচিত এই চুক্তিভিত্তিক গোয়েন্দার বিরুদ্ধে চুরি ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৩ সালের জুন থেকে তিনি রাশিয়ায় নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
সোমবার প্রথমবারের মতো তিনি ব্রিটেনের কোনো টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার স্নোডেন। অপরাধ তদন্ত ও নাগরিকদের অনলাইন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে ব্রিটিশ সরকার যখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে অধিকতর ক্ষমতা দিতে চাচ্ছে ঠিক তখনই এমন দাবি করলেন স্নোডেন। স্নোডেনের এমন দাবি বিষয়ে ব্রিটিশ সরকার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।