সিলেট ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ :: পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় নৃশংস ভাবে কুপিয়ে জখম করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম।
পরে তাকে ধাওয়া করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। ওই সময়ে ইমরান নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী নার্গিসকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কজনক হলে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে খাদিজা মৃত্যুর মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
জানা গেছে, লজিং শিক্ষক হিসেবে বাসায় আশ্রয় নিয়েই স্কুলপড়ুয়া খাদিজা আক্তার নার্গিসকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে শাবি ছাত্র বদরুল। পড়ানোর নামে প্রেমে বাধ্য করার বহু চেষ্টা চালায় সে কিন্তু কোনো ভাবেই পাত্তা দেয়নি নার্গিস। নানা ধরণের হুমকিও দেয় তাকে। এসব জানাজানি হলে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয় বাসা থেকে। তারপরও পিছু ছাড়েনি বদরুল। এদিকে বদরুল সিদ্ধান্ত নেয় খাদিজাকে হত্যার।
“ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের কথায় উঠে আসে এসব তথ্য। মঙ্গলবার সে বলে, খাদিজা দীর্ঘদিন থেকে আমাকে পাত্তা না দেয়ার কারণেই তার ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠি। নগরীর আম্বরখানার এক দোকান থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে চাপাতি কিনি এবং হত্যার উদ্দেশ্যেই তাকে কোপাই। ইচ্ছা ছিল ওখানেই তাকে শেষ করে দেয়ার।”
গত দু’দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে খাদিজা। মঙ্গলবার তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর মেয়ের এ সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা মনোয়ারা বেগম। তার আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে বাড়ির আশপাশ। গ্রামের শত শত নারী-পুরুষ সান্ত্বনা দিতে ছুটে আসছেন সেখানে।
হাসপাতালে এখন পুলিশ ছাড়া পরিবার, স্বজন বা সংগঠনের কেউ নেই বদরুলের পাশে। এরই ফাঁকে কথা হয় বদরুলের সঙ্গে। সে বলে, আমি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ৪র্থ বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সম্পাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর হলে সিট পাইনি। এ সময় লজিং ছিলাম নার্গিসদের বাড়িতে। এ সুবাদে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু পরে কথা রাখেনি নার্গিস। আমি তাকে নিয়ে সব সময়ই সিরিয়াস। কিন্তু আমার বেলায় সে ছিল একবারে উদাসীন। তাই তাকে শেষ করে দিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার প্রস্তুতি নেই।
বদরুল আরও বলে, সোমবার এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় চাপাতিটি লুকিয়ে রাখি সঙ্গে থাকা ব্যাগে। পরীক্ষার আগেই এমসি ক্যাম্পাসে পৌঁছাই। ওর কাছে গিয়ে কথা বলি। কিন্তু সে সন্তোষজনকভাবে কোনো কথার উত্তর দেয়নি। এতে আমি আরও প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে উঠি। পরীক্ষা শেষে নার্গিসকে হল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখি। তাকে মসজিদের পাশে দেখে কাছে ভিড়তে থাকি। কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু সে আবারও পাত্তা দিতে চায় না। তখনই আমি ব্যাগ থেকে চাপাতি বের করে কোপাতে থাকি। ইচ্ছা ছিল ওখানেই তাকে শেষ করে দেয়ার। এরপর লোকজন নার্গিসকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ও আমাকে গণপিটুনি দিতে শুরু করে।
খাদিজা যখন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তখন থেকেই খাদিজাকে মানসিকভাবে প্রায়ই অত্যাচার করত বদরুল। তখনি লজিং থেকে বদরুলকে বের করে দেয়া হয়। উঠে শাহপরান হলে। এ সময় সে ছাত্রলীগের রাজনীতি করত।
এর আগেও একবার সে খাদিজাকে মারতে যায়। ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি টুকের বাজারে দা নিয়ে খাদিজাকে মারতে গেলে এলাকাবাসী ধরে পিটুনি দেয়। মান বাঁচাতে শিবির মেরেছে বলে ক্যাম্পাসে প্রচার করে বদরুল। তারপর থেকে ক্যাম্পাসে খুব একটা দেখা যায়নি তাকে। এমনকি বন্ধু-বান্ধব, সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গেও খুব বেশি মিশত না সে। শিক্ষাজীবন সম্পন্ন না করেই সে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।
বেশ কিছুদিন পর সে ছাতকের আয়াজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করে। এ সময় বদরুল আবার সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় নার্গিসের সঙ্গে।
সূত্র: যুগান্তর
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি