কানাইঘাট প্রতিনিধি :
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাচীনতম শ্রী শ্রী বামজঙ্গা মহাপীঠ কালী মন্দিরের জায়গা রক্ষার দাবীতে মন্দির পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার মন্দির পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মানিক লাল দাস, যুগ্ম আহ্বায়ক বিধান চৌধুরী সহ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগটি ইউএনও এবং ওসি বরাবরে দাখিল করেন।

অভিযোগে মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ভক্তবৃন্দ উল্লেখ করেছেন, সীমান্তবর্তী সোনাতনপুঞ্জি গ্রামের বাসিন্দা বর্তমান ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদ বামজঙ্গা কালি মন্দিরের উত্তর ও পুর্ব পাশের সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের খাস জমিতে বসত ঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছে।

ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদের সহযোগী একই গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের পুত্র তোতা মিয়া, ফারুক আহমদ, আলী আহমদ, জাকারিয়া, আব্দুস সামাদ গংরা মন্দিরের বিশাল পুকুরের মাছ চুরি সহ পুকুরের পূর্ব তীরের জমি জোরপূর্বক অপদখল করে সবজি চাষ ও গাছ-পালা রোপন, পাশাপাশি মন্দিরের গাছপালা কেটে বিক্রি সহ মন্দিরের নানামুখী ক্ষতি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। মন্দিরের জায়গা-জমি জবরদখলকারীদের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদ ও তার সহযোগীরা মন্দিরের সেবায়েত ও তার বিধবা মা এবং আশপাশে বসবাসরত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের নানাভাবে হুমকি প্রদান করে। এর জের ধরে গত ৪ এপ্রিল শুক্রবার ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদ তার লোকজন মন্দিরের পুকুর থেকে মাছ ধরা সহ গাছপালা রোপন করিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মন্দির পরিচালনা কমিটির লোকজন বাঁধা নিষেধ করেন। এতে ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদ গংরা দেশীয় অস্ত্র দা, কিরিছ, রুইল, লাঠি-সোটা নিয়া প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে বামজঙ্গা কালিমন্দিরের সম্পূর্ণ জমি দখল করিয়া নিবে। মন্দিরের সেবাইত ও তার বিধবা মা মন্দির ছেড়ে চলে না গেলে তাদের প্রাণে মারার হুমকি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।

বিষয়টি মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাও. জামাল উদ্দিন ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ আলতাফ হোসেন সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করার পরও ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদ ও তোতা মিয়া গংরা কোন তোয়াক্কা না করে মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় মন্দির পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ প্রাচীন বামজঙ্গা কালিমন্দিরের সম্পত্তি রক্ষা সহ নিরাপত্তা নিশ্চিতে অপদখলকারীদে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ইউপি সদস্য ফয়েজ আহমদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে এবং কয়েকটি মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত পলাতক আসামী সে। কালিমন্দিরের পাশে অবস্থিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে উপকার ভোগীদের বের করে দেয়া সহ মন্দিরের জমি জবর দখলের অপচেষ্টার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এর আগেও ইউএনও বরাবরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে তার সহযোগী লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি তোতা মিয়া নানা অপকর্মের ঘটনায় একবার দল থেকে বহিষ্কার হয়। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে।

(সুরমামেইল/এমআর)