সিলেটে শিশুদের ওপর বানরের হামলা, আতঙ্কে অভিভাবকরা

প্রকাশিত: ১১:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২৫

সিলেটে শিশুদের ওপর বানরের হামলা, আতঙ্কে অভিভাবকরা

Manual5 Ad Code

কানাইঘাট প্রতিনিধি :
সিলেটের কানাইঘাটে হঠাৎ করে বানরের উপদ্রব বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে পৌর শহর ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বানরের আনাগোনা দেখা গেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তাদের আক্রমণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। বিশেষ করে শিশুদের ওপর বানরের আক্রমণের ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

 

এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন দু-একটি বানর গ্রাম থেকে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় এবং সুযোগ পেলেই ছোট শিশুদের আক্রমণ করে। ভোরে মক্তবে বা সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় এসব আক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটছে। ফলে শিশু শিক্ষার্থীরা এখন মক্তব ও বিদ্যালয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সবজির বাগান নষ্ট করে ফলমূল ও সবজি নিয়ে যাচ্ছে বানরগুলো।

 

সদর ইউনিয়নের বীরদল আগফৌদ, সোনাপুর, গোসাইনপুর, ভাড়ারীফৌদ ও পুরানফৌদ, পৌরসভার নন্দিরাই, ধর্মপুর, ধনপুর, শিবনগর, দুর্লভপুর, নয়াতালুক, রায়গড় গ্রামগুলোতে প্রতিদিনই বানর দেখা যাচ্ছে।

 

Manual7 Ad Code

সম্প্রতি সদর ইউনিয়নের বীরদল আগফৌদ গ্রামের মখলিছুর রহমানের ছেলে শাফি (৯) বানরের আক্রমণের শিকার হয়। মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে একটি বানর তাকে আক্রমণ করে এবং হাতে কামড় দেয়। পরে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

 

শাফির বাবা মখলিছুর রহমান বলেন, ‘ছেলেকে বানর আক্রমণ করার পর থেকে সে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে পাঁচটি ইনজেকশন দিতে হয়েছে।’

 

Manual3 Ad Code

এছাড়া সদর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের জয়নাল আহমদের চার বছরের ছেলে তামিম, নুরুল আমিনের ছেলে তাওসিফ (৩) এবং কয়ছর আহমদের ছেলে মুসলিম (৫) বানরের আক্রমণে আহত হয়। পরে তাদেরও চিকিৎসা দেওয়া হয়।

 

সোনাপুর গ্রামের জয়নাল আহমদ বলেন, ‘বানরগুলো সকালে আর বিকেলের দিকে বের হয়ে ছোট বাচ্চাদের ধাওয়া করে। আমার ছেলেকে কামড় দেওয়ার পর তাকে ভ্যাকসিন দিতে হয়েছে, প্রতিটি ভ্যাকসিনের দাম ৫০০ টাকা।’

 

এ বিষয়ে কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘বানরের উপদ্রবের বিষয়টি আমরা জেনেছি। বিশেষ করে শিশুদের ওপর হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক। অভিভাবকদের সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। বিষয়টি বন বিভাগ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হবে।’

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রাণ কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন,’বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব আমাদের নয়। আমাদের দায়িত্ব হলো কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে তার চিকিৎসা দেওয়া। এ ধরনের বিষয় বন বিভাগ দেখে থাকে। তবে বন্যপ্রাণী আইনে বানর হত্যা নিষিদ্ধ। বানর ধরার প্রয়োজন হলে বন বিভাগকে আমাদের পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের লজিস্টিক সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত। এ ছাড়া বিষয়টি আমি উপজেলা সমন্বয় কমিটির আসন্ন সভায় উত্থাপন করবো।’

 

কানাইঘাট উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘বন্যপ্রাণী ধরার বা উদ্ধারের জন্য একটি রেসকিউ টিম রয়েছে, তবে টিমটি সিলেটে নয়, মৌলভীবাজারে অবস্থিত। যেহেতু বানরগুলো আক্রমণাত্মক আচরণ করছে, তাই সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে বানরগুলো ধরার উদ্যোগ নিতে হবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি’।

Manual8 Ad Code

 

এদিকে হঠাৎ করে বানরের এই তান্ডবে গ্রামের জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, বনাঞ্চলে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় বানরগুলো লোকালয়ে নেমে এসেছে।

 

(সুরমামেইল/এমআর)

Manual6 Ad Code


সংবাদটি শেয়ার করুন
Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code