খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ও মানবদেহে তার প্রতিক্রিয়া শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০১৬

খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ও মানবদেহে তার প্রতিক্রিয়া শীর্ষক সেমিনার

sylhet-vukta-odhikar-semina-300x157সুরমা মেইল নিউজ : দেশে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশ্রণের প্রক্রিয়া ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে শুধু সচেতনতাই নয় প্রয়োজন সক্রিয়তাও। সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ও মানবদেহে তার প্রতিক্রিয়া শীর্ষক’ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। রবিবার সকাল ১০টায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের আয়োজনে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে সিলেটে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা, ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মো জামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, যথাযথ আইন আছে, প্রয়োজন আইনের প্রয়োগ। ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে আরো বেশি করে সবাইকে সচেতন করে তোলতে হবে। মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার আগ্রহি কিন্তু আমাদের কাউকেই দায়িত্ব এড়ালে হবে না। আমরা যদি দেখি খাদ্যে ভেজাল মিশ্রিত হচ্ছে তা হলে আমরা তা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে পারি। ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতার মাধ্যমেও আমরা ভেজাল খাদ্য ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলতে পারি।

তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক প্রয়োগের কারণে আমরা ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। মিষ্টি, মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল, ঔষুধসহ কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না ভেজাল থেকে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে। তিনি উপস্থিত বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়িদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে সকল সেক্টরে ভেজাল প্রতিরোধে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনদিনের মধ্যেই এক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানালে সবাই সম্মতি দেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহানগর পুলিশের কমিশনার মো কামরুল আহসান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আজম খান ও ডিআইজি রেঞ্জের পক্ষে কমাড্যান্ট মাহবুবুর রহমান (পিপিএম)।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কামরুল আহসান বলেন, রমজান মাসকে সামনে রেখে আবারো ভেজালের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হলে পুলিশ সর্বোতোভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি যার যার অবস্থান থেকে সক্রিয়ভাবে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগের ব্যাপারে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের মানুষের একটা প্রবণতা আছে তারা সহজে আইন মানতে চান না, এই প্রবণতা দূর করতে হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিরেট বিভাগীয় উপ পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন
সেমিনারে ‘নিরাপদ প্রাণীজাত খাদ্য উৎপাদন: খামার হতে খাবার টেবিল’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজি ও পাবলিক হেলথ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমদ। ‘ভোক্তাস্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ মৎস্যপণ্য উৎপাদন ও বিপন : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধন উপস্থাপন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য জীববিদ্যা ও কৌলিতত্ত্ব বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়।

এছাড়া ‘ফল ও সবজি উৎপাদনে বালাইনাশকের অপব্যবহার’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ও বীজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড, আবদুল মুকিত।
উপস্থাপিত প্রবন্ধে প্রাণীজাত, মৎস্যপণ্য ও ফল-সবজিতে কিভাবে ভেজাল ও রাসায়নিক প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং তা মানুষের জন্য কতটা ক্ষতিকর সেসব প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। একই সাথে এসব প্রবণতা প্রতিরোধে সুপারিশমালা তুলে ধরে দ্রুত এসব সুপারিশ কার্যকরে আহ্বান জানানো হয়।
সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন র‌্যাব-৯ এর উপ পরিচালক এসএ এম ফখরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সিইও মোহম্মদ আব্দুল আহাদ, সিলেট হোটেল ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান, কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মঈনুল হক চৌধুরী, ক্যাটায়ার্স সমিতির সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন চৌধুরী, ফুলকলির সিনিয়র কেমিস্ট দিদারুল আলম, ব্যবসায়ি সমিতির সেক্রেটারি দিলওয়ার হোসেন প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com