খুশি হতেন প্রধানমন্ত্রী : অবসরে যাচ্ছেন মুহিত!

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০১৬

খুশি হতেন প্রধানমন্ত্রী : অবসরে যাচ্ছেন মুহিত!

118dbbad44cfd869eea8af43edb4aad4সুরমা মেইল ডেস্ক :: আওয়ামী লীগ সভাপতির পদ থেকে অবসরে যেতে পারলে খুশি হতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের পর এবার অবসরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলাদেশি অনলাইন টেলিভিশন টিবিএন টুয়েন্টিফোরকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান মুহিত।

তবে রাজনীতি থেকে কবে অবসরে যাবেন, সে বিষয়ে কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। তিন সপ্তাহের সফরে এখন তিনি দেশের বাইরে আছেন। কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ছাড়েন মুহিত। আগামী ১২ অক্টোবর তার দেশে ফেরার কথা আছে।

ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে জড়ানো মুহিত পরে পাকিস্তান আমলেই সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণও ছিল তার। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানে ওয়াশিংটন দূতাবাসে ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। আর প্রবাসী বাংলাদেশি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর মুহিত পরিকল্পনা কমিশনের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮১ সালে সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসরে যান তিনি। ১৯৮২ থেকে ৮৩ সালে এরশাদ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান মুহিত। এরপর বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় উচ্চপদে চাকরি করেন তিনি।

২০০১ সালে সিলেট সদর আসন থেকে নির্বাচন করে হেরে যান মুহিত। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এরপর থেকেই বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।

গত সাত বছর ধরে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে মুহিতের বিরুদ্ধে বলার মত কোনো অভিযোগই উঠেনি। নানা সময় তিনি সোজাসাপ্টা বক্তব্য দিয়ে দলের নেতাদের বিরাগভাজনও হয়েছেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা খুবই কঠিন। এই বয়সে এসে কখনও কখনও ক্লান্ত লাগে। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও আমার বয়সী কোনো অর্থমন্ত্রী আপনি পাবেন না।’

আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবসরে যাওয়ার ইচ্ছার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেই নিজের এই ইচ্ছার কথা জানন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন তার ক্লান্তির কথা। রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করা খুবই কঠিন। অর্থমন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনও খুবই কঠিন।

রাজনীতি থেকে সরে গেলে তার নির্বাচনী আসন সিলেট-১ আসন ছোট ভাই এ কে আব্দুল মোমেন আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করবেন বলে জানান মুহিত। মোমেন সম্প্রতি জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পদ থেকে অবসরে গেছেন। তিনি এখন সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মুহিত বলেন, ‘আমার ভাই সেখানে প্রস্তুতি হচ্ছে। আমি তো আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারি না।’

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজনীতি ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আরও মনোযোগী হবেন। রাজনীতিতে সরাসরি যোগ দেয়ার আগে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল মুহিতের। বিশেষ করে হাওর অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে নানা কর্মসূচি ছিল তার। এর বাইরে অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, ইতিহাস নিয়েও বই আছে মুহিতের। তিনি নানা সময় বলেছেন, রাজনীতিতে এসে তার লেখক সত্ত্বার প্রতি অবিচার করেছেন।

মুহিত বলেন, ‘রাজনীতি থেকে অবসরের পর আবারও সমাজসেবা আর লেখালেখি করেই সময় কাটাবো। এক প্রশ্নের জবাবে মুহিত জানান, বাংলাদেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে সঠিক পথেই। সূত্র: ঢাকাটাইমস

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com