সিলেট ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:০১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ কুমার সিনহা (এসকে সিনহা) বলেছেন, বিচার বিভাগ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলার সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কথা বলবেন।
বুধবার (০২ মার্চ) দুপুরে সিলেট জজকোর্ট প্রাঙ্গনে দেশের মধ্যে প্রথম সিলেটের ২০টি আদালতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এসকে সিনহা বলেন, এদেশে মিডিয়া যতেষ্ট স্বাধীনতা লাভ করেছে। আমরা অনেক মিডিয়ায় টকশো দেখে থাকি। কিছু কিছু প্রিন্ট মিডিয়ায় বিচার-বিভাগ নিয়ে আলোচনা হয় । অবাধ স্বাধীনতা জনগনের মঙ্গল নিয়ে আসেনা জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে কথা বলার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ আছে। একটা স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আরেকটাকে আঘাত করছি, ক্ষতি করছি। মনে রাখতে হবে, এখানে আইনের সম্পর্ক আছে। জাস্টিজের সম্পর্ক আছে। জনগনের সম্পর্ক আছে। তাই গণমাধ্যমে কথা বলার সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে কথা বলতে হবে। কোনভাবেই যেন সে মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি ইমান আলী, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়ার্টকিন্সসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি ও স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে সরকার ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম সিলেট থেকে শুরু করেছে। আগামী বছর থেকে দেশের সবক’টি জেলায় এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে তিনি জানান।
সুপ্রিম কোর্টের সহযোগিতায় জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্পের (ইউএনডিপি) অর্থায়নে জুডিসিয়াল স্ট্রেনথেনিং প্রজেক্টের (জাস্ট) আওতায় বিচার বিভাগে এই ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম সিলেটের ৪৬টি আদালতের মধ্যে ২০টিতে চালু হচ্ছে এ পদ্ধতি। যেখানে প্রতিটি আদালতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
বাংলাদেশের অনেক কিছুই যাত্রা শুরু করে সিলেট থেকে। উপমহাদেশের ১৫৬ বছরের বিচারিক ব্যবস্থা বলছে, কোন ব্যক্তি দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলার স্বাক্ষ্য দিলে তা নিজ হাতে লিপিবদ্ধ করবেন বিচারক। কিন্তু এর ব্যতিক্রম হয়নি সিলেটের আদালতগুলোতে। কিন্তু ১৫৬ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের বিচারিক ব্যবস্থায় সর্বপ্রথম পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর আদালত আজ থেকে যাত্রা শুরু হচ্ছে সিলেটে। এছাড়াও সাক্ষ্যগ্রহণের সময় যদি ভুল কিছু লিপিবদ্ধ হয় তাহলে সাক্ষী বা তার আইনজীবীর তাৎক্ষণিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা সংশোধনের সুযোগ থাকছে। ফলে কোনো তথ্য বাদ যাওয়া কিংবা ভুল লেখার আশংকা থাকবে না। ডিজিটাল পদ্ধতি আরো গতিশীল হবে যদি সিলেটের কোর্ট এলাকায় ওয়াইফাই চালু করা হয়। তাহলে আইনজিবীরাসহ এর উপকারিতা ভোগ করবেন কোর্টে আগতরা।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাঠওয়ারির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সিলেটের পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জিপি খাদেমুল মিল্লাত মোঃ জালাল, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সমিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক শাহ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. একে আবদুল মোমেন, সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী, জেবুন্নেছা হক প্রমুখ।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি