গেইল ঝড়ে আক্রান্ত ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ২:১৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০১৬

গেইল ঝড়ে আক্রান্ত ইংল্যান্ড

Sports1458181833

স্পোর্টস ডেস্ক : বেন স্টোকসের ফুল লেংথ ডেলিভারিটা ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়েই ১ রান পূর্ণ করলেন। এরপর এক হাতে হেলমেট আর অন্য হাতে ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন ডাগআউটে দাঁড়িয়ে থাকা সতীর্থদের দিকে। হাঁটু গেড়ে বসেও পড়লেন। এখানেই শেষ নয় ক্রিস গেইলের উদযাপন। ডাগআউটে দাঁড়ানো ড্যারেন সামির দেখানো ভঙ্গিতে দুই হাত সামনে ঠেলে আবার টানলেন বেশ কয়েকবার। যেভাবে সেঞ্চুরি করলেন তাতে এমন উদযাপন তো করতেই পারেন ক্রিস গেইল!

বুধবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওপেনার। ইংলিশ বোলারদের কচুকাটা করে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন মাত্র ৪৭ বলে, যা টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডও।

৪৮ বলে অপরাজিত ১০০ রানের টর্নেডো ইনিংসে গেইল ছক্কাই হাঁকালেন ১১টি, চার ৫টি। অর্থাৎ বাউন্ডারি থেকে রান এসেছে ৮৬! গেইলের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শুরুটাও দুর্দান্ত হয়েছে ২০১২ সালের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

গেইলের আগে ওয়াংখেড়েতে ঝড় তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও। তবে তাদের ঝড়ের গতিবেগ যদি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার হয়, গেইলের তাহলে ঘণ্টায় ১১৫ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার! জো রুট (৩৬ বলে ৪৮), জস বাটলার (২০ বলে ৩০), ইয়ান মরগানের (১৪ বলে ২৭*) ছোট্ট ঝোড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮২ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড।

কিন্তু প্রতিপক্ষ দলে যদি গেইল, ব্রাভো, রাসেল, সামিদের মতো ব্যাটসম্যান থাকেন, তাহলে কী আর ১৮২ রান করে স্বস্তিতে থাকা যায়! থাকতে পারেনি মরগানের দলও। যদিও ইংল্যান্ডের বোলিংয়ের শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল। ডেভিড উইলি দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন জোনাথন চার্লসকে।

দ্বিতীয় ওভারে গেইল একটি করে চার ও ছক্কা মারলেও পরের তিন ওভারে একটি বলও স্ট্রাইক পাননি! টানা ২০ বল খেলেছেন মারলন স্যামুয়েলস। নন স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়িয়ে যেন তখন ব্যাটে শাণ দিচ্ছিলেন গেইল।

স্যামুয়েলস ২৭ বলে ৩৭ করে ফেরার পরই শুরু হয় গেইল-তাণ্ডব। অষ্টম ওভারে আদিল রশিদকে পর পর দুই বলে লং-অনের ওপর দিয়ে আছড়ে ফেললেন গ্যালারিতে। প্রথমটি ৯৮ মিটার ছক্কা, দ্বিতীয়টি ৯৭ মিটার!

এগারোতম ওভারে বেন স্টোকসকেও পর পর দুই বলে সীমানার ওপারে আছড়ে ফেললেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং-দানব। তবে সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে গেছে স্পিনারদের ওপর দিয়েই। ১৪তম ওভারে মঈন আলীর টানা তিন বলে মারলেন তিনটি বিশাল ছক্কা, ছক্কার হ্যাটট্রিক!

এরপর ১৬তম ওভারে ডেভিড উইলির তিন বলে দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে ৪২ বলেই ৯৬ রান করে ফেলেছিলেন গেইল। তখন মনে হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডই বুঝি গড়তে যাচ্ছেন এই বাঁহাতি। তবে হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান রিচার্ড লেভির ৪৫ বলের সেঞ্চুরির রেকর্ডরা হাতছাড়া করলেও ৪৭ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ঠিকই করেছেন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরিটাও এসেছিল গেইলের ব্যাট থেকেই। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের দেখা। দীর্ঘ ৯ বছর পর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বড় মঞ্চে আবার তিন অঙ্ক ছুঁলেন গেইল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি নেই আর কারোই!

ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ৯১টি ছক্কা ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছক্কার মালিকও এখন গেইল। ওয়াংখেড়েতে বল ১১ বার সীমানার ওপর দিয়ে আছড়ে ফেলে টি-টোয়েন্টিতে গেইলের ছক্কার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮টি।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com