ছাতকে পানিতে বন্দী হাজারো পরিবার

প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০

ছাতকে পানিতে বন্দী হাজারো পরিবার

সুরমামেইলডটকম:  পাহাড়ী ঢল আর টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার পানি সুরমা নদীর বিপদসীমা ১০০ সেন্টিমিটার ছাড়িয়ে এখন শহরমূখী। বন্যার পানি সুরমা নদী উপচে ছাতক শহরের অন্তত ৭টি পয়েন্ট, ছাতক থানায় ভিতরে ,মধ্যবাজার, পশ্চিমবাজার এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়ামহল্লায় প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিন টানা বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশংকা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র।

সুনামগঞ্জের ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। টানা ভারিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে অনেকের বাসা বাড়ি প্লাবিত হওয়ায় জনজিবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোলার ধান ও গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে শতাধিক মৎস্য খামারের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাকসবজির বাগান ও ক্ষেতের ফসল। নিরাপদ পানি ও খাদ্য সংকটে রয়েছেন পানিবন্দী নিম্নআয়ের হাজার হাজার মানুষ।

করোনার মহামারির মধ্যে বন্যায় এখন সাধারণ রোগের চিকিৎসা সেবা নিয়েও শংকায় রয়েছেন এ উপজেলার মানুষ। সিলেট-ছাতক আঞ্চলিক মহাসড়কের কিছু অংশ তলিয়ে যাওয়ায় ছাতক শহরের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে এ উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি করছেন অনেকেই।

এদিকে উপজেলার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো প্লাবিত হয়নি সেগুলো খুলে দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম। রোস্টার অনুযায়ী আলাদা আলাদাভাবে প্রশাসনের কর্মচারীদের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া গতকাল শনিবার আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে কবলে পড়ে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাওঁ ইউনিয়নের ধারন এলাকার প্রায় ৪০ জন ও সিংচাপইড় ইউনিয়নের আরও অন্তত ২০ থেকে ২৫টি পরিবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রবিবার ছাতক থানায় বাঘবাড়ি ,তাতিকোনায়,ছাতকে বাজার সহ উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। ফলে পানি যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

এদিকে মধ্যবাজার ও বিভিন্ন পয়েন্টের দোকানে বন্যার পানি ঢুকার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়িরা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে জানান তারা।

ছাতক থানার এস আই হাবিবুর রহমান পিপিএম বলেন, আমাদের উপজেলার থানার ভিতরে ও আশেপাশে পানি। বাসার সামনের রাস্তা হাটু পানি। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাসায় পানি ঢুকতে পারে। পাশের বস্তি এলাকার মানুষ বিপাকে আছেন। প্রায় ঘরেই পানি ঢুকে গেছে।

মধ্যবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ি হেলাল উদ্দিন বলেন, আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লক্ষ লক্ষ টাকার মালামাল। যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে মনে হচ্ছে রাতেই দোকানে পানি ঢুকবে। এতো টাকার মালামাল কোথায় রাখি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর ছিদ্দিকী ভূইয়া বলেন, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ছাড়িয়েগেছে। আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাত হবে, পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

এব্যাপারে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ গোলাম কবির জানান, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খবরাখবর নেওয়া হচ্ছে। তিনি সবাইকে দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

বিথী

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com