ছাতকে বন্যায় সাড়ে ৪শ’কোটি টাকার ফসল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা

প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০১৭

ছাতকে বন্যায় সাড়ে ৪শ’কোটি টাকার ফসল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা

Manual6 Ad Code

ছাতক প্রতিনিধি :: ছাতকে আগাম বন্যায় প্রায় ১০হাজার হেক্টর ভূমির বোর ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হতাশায় ভোগছেন উপজেলার ৮৫হাজার কৃষক পরিবার। ফলে সাড়ে ৪শ’কোটি টাকার ফসল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। গত ২৪মার্চ থেকে এখানে চলমান ভারি বর্ষন ও নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে হাওর বিলের সব বোর ফসল তলিয়ে গেছে।

পাহাড়ি ঢল, সুরমা, ধলাই, পিয়াইন ও চেলানদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধি, ভারি বর্ষন, শিলাবৃষ্টি ও গত একসপ্তাহের ব্যাপক ঝড়-তুফানে সবগুলো হাওর-বিলের সবগুলো বোর ফসল পানির নীচে তলিয়ে যায়। পাশাপাশি ঝড়-বাদলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কৃষকরা জানান, আকাশের মেঘলা অবস্থা দখলে অজানা আতঙ্কে ভেতর শুকিয়ে যায়। এই বুঝি ভারি বর্ষন, শিলাবৃষ্টি, সুরমা ও পাহাড়ি নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি ঘটে বোর ফসলের বারোটা বাজিয়ে দেয়।

Manual8 Ad Code

এ অজানা আতঙ্কে শুধু এবারেই তাদের অন্তর কাপেনি, বোর ফসলের ভবিষ্যত নিয়ে কৃষকরা প্রতিবছরেই এভাবে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। কিন্তু এবারে কালবৈশাখী আসার অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে ব্যাপকহারে ঝড়-বাদল। ফসল এখনও কাটার উপযোগি হয়নি। আরো ১০/১৫দিনের মধ্যে কাটার উপযোগি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। কিন্তু ধান পাকার আগেই আগাম বন্যায় সবগুলো হাওরই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় একবারেই নষ্ট হয়ে গেল কৃষকের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন।

Manual6 Ad Code

জানা যায়, ১৩ইউনিয়নও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ছাতক উপজেলায় মোট আবাদি জমি ২২হাজার ১শ’ ১৭হেক্টর। এরমধ্যে চলতি রোপা আমন ৯হাজার ৫শ’ ২০হেক্টর, বোর ১২হাজার হেক্টর, আউশ ৩শ’হেক্টর ভূমি রয়েছে। চলতি বোর মৌসুমে প্রায় ১২হাজার হেক্টর ভূমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছিল ১২হাজার হেক্টর*৪= ৪৮০০০মে.টন ধান এবং ১২হাজার হেক্টর*৩.৫= ৪২হাজার মে.টন চাল উৎপাদিত হয়।

যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৪শ’কোটি টাকা। ২৪মার্চ (১০চৈত্র) থেকে এখানে চলছিল আষাঢ়ে বৃষ্টি। ফসল তলিয়ে নেয়ায় কৃষকরা চোখে সর্ষে ফুল দেখছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাহাদাত মো. লাহিন. মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার খান ছানা, ইউপি চেয়ারম্যার, অদুদ আলম, আখলাকুর রহমান, দেওয়ান পীর আব্দুল খালিক রাজা, মাষ্টার আওলাদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মাষ্টার আবুল হাসনাত, সাহাব উদ্দিন মো. সাহেল, গয়াছ আহমদ, শায়েস্তা মিয়াসহ অন্যান্যরা জানান, কৃষকদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন অঙ্কুরেই ঝরে গেল।

এজন্যে তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, উপজেলার সবগুলো হাওর-বিলে পাকা নয় কাঁচা ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবারে ঘরে ফসল তোলার আর কোন সম্ভাবনা নেই। ফসল রোপনে অনেক কৃষক ব্যাংকের কাছেও দায়বদ্ধ বলেও তারা দাবি করেন।

Manual4 Ad Code

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একে বদরুল হক জানান, অনেক কষ্ট ও খরচে ফসল এখন পাকার উপযোগি হয়ে আসছে। কিন্তু ভারি বর্ষন ও নদীতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে ফসল পানির নীচে তলিয়ে গেছে। বোর ফসল রোপনে তিনি সরকারি পরামর্শও সহায়তা দেয়ায় এবারে ফসল অন্যান্য বছরের চেয়ে তুলনামূলক ভাল ফসল হয়েছিল বলে তিনি জানান।

Manual3 Ad Code

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code