সিলেট ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৫
সুরমা মেইল : রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের বসুন্ধরা শাখার এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তারই শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। মামলা হওয়ার চার বছর পর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. সালেহ উদ্দিন বুধবার আসামির উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি পরিমলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ছয় মাস কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
এদিকে এ রায়ের পর আদালত থেকে পুলিশ পাহারায় নিয়ে যাওয়ার সময় পরিমল বলেন, আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। মহামান্য বিচারক যে রায় দিয়েছেন সে ব্যাপারে আমি আর কী বলতে পারি? আমি নির্দোষ। আর কিছু বলতে আমার হাত-পা বাঁধা। আপনারা এমন কিছু লিখবেন না, যাতে করে আমার পরিবারের সম্মানহানি ঘটে। এ মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফোরকান মিয়া বলেন, আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি, তাই আদালত তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। অন্যদিকে আসামি পরিমল জয়ধরের আইনজীবী মাহফুজ মিয়া বলেন, আমরা আদালতের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাইনি। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।
রাজধানীর খ্যাতনামা ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা ক্যাম্পাসের শিক্ষক পরিমলই ছিলেন এ মামলার একমাত্র আসামি। আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন তিনি। গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ার লাটেংগা গ্রামের পরিমল ২০১০ সালে ভিকারুননিসার বসুন্ধরা শাখায় বাংলা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০১১ সালে করা মামলায় ভিকারুননিসার তৎকালীন অধ্যক্ষ হোসনে আরা এবং বসুন্ধরা শাখার প্রধান লুৎফর রহমানকে আসামি করেছিলেন ধর্ষিত ছাত্রীর বাবা। ২০১৩ সালের ৭ মার্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের সময় অধ্যক্ষ ও লুৎফরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১১ সালের ২৮ মে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা শাখার পাশে একতলা ভবনের একটি কক্ষে ওই স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন পরিমল। ওই সময় ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করা হয়। এরপর ওই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ১৭ জুন আবারও ধর্ষণ করা হয়। বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর ভিকারুননিসার ছাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তখন পরিমলকে বরখাস্ত করে। এরপর ৫ জুলাই ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই মামলা দায়ের করেন। এর একদিন বাদে পরিমলকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে তার স্ত্রীর বড় বোনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি। মামলার শুনানিতে বিচারকের কাছে ওই ছাত্রী পরিমলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী জিল্লুর রহমান তালুকদার জানান। ২৮ জন সাক্ষীর বক্তব্য শুনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯ (১) ধারায় আসামির সাজার আদেশ দেন বিচারক। এই ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড-ই সর্বোচ্চ সাজা।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি