সিলেট ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:২২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : গুলশানের হলি আর্টিজান হামলায় জঙ্গি সম্পৃক্ততায় আটক নরসিংদীর পলাশের মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন ওরফে বদুর মেয়ে রুমা বেগম এলাকায় মানসিক ভারসাম্যহীন হিসেবে পরিচিত।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, পাঁচ বছর আগে দ্বিতীয় বিবাহ বিচ্ছেদের পর থেকেই রুমা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। কিছুদিন ভালো থাকলে আবার কিছুদিন পাগলের মতো আচরণ করেন। অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের মারধর করা ছাড়াও নিজের জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। কখনো নিজের চুল কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। রুমার জঙ্গি সম্পৃক্ততা পরিবারের সদস্যরা বিশ্বাস না করলেও উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি দাবি করেন তারাও।
গত বুধবার গভীর রাতে শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের চরখুপি গ্রাম থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে রুমা বেগমকে আটক করেন।
রুমার বাবা জানান, ‘রুমার জঙ্গি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উপযুক্ত শাস্তি চাই। রুমার বোন সাবিনা বেগম জানান, গুলশান হামলার সময় আমার বোন ওই এলাকায় ফুটপাতে বসে চা খাচ্ছিল। সাধারণ মানুষের মতো সেও সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। আমার বোন জঙ্গি হলে তার আইনগত শাস্তি আমরা চাই। সঠিক প্রমাণ না পাওয়া গেলে তাকে যেন ছেড়ে দেয়া হয়।’
এ ব্যাপারে শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, রুমা বেগমকে গত বৃহস্পতিবারই চরখুপি গ্রাম থেকে ঢাকার ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে সরাসরি ঢাকায় নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
জানা গেছে, শাহাবুদ্দীন আহমেদ ওরফে বদুর তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে রুমা সবার ছোট। রুমার দুটি বিয়ে হয়েছে। প্রথম বিয়ে হয় শিবপুরের সিঅ্যান্ডবি গ্রামের রাসেল মিয়ার সঙ্গে। ওই সংসারে একটি ছেলে (১০) রয়েছে। পরে বিয়ে হয় নোয়াখালীর এক ছেলের সঙ্গে। দ্বিতীয় স্বামীর আগেরও স্ত্রী-সন্তান থাকায় এলাকাবাসীর চাপে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ‘ছয় মাস আগে চাকরির সুবাদে রুমা দুবাই চলে যায়। সেখানে তিন মাস থেকে ফিরে আসে। এরপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাগলের মতো ঘোরাফেরা করে। দেশে ফিরে আসার পর সে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাবার্তা বলত।
এলাকাবাসী জানান, গুলশান ঘটনার দুই দিন পর রুমা শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের চরখুপি গ্রামে তার ভগি্নপতি চা বিক্রেতা তারা মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত গুলশান হামলার ছায়াতদন্তকারী র্যাব একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওচিত্র প্রকাশ করেছে। ওই ভিডিওচিত্রে সন্দেহভাজন চারজনকে শনাক্তের কথা র্যাব জানিয়েছিল, যার মধ্যে ব্যাগ কাঁধে সালোয়ার-কামিজ পরা এক নারীকেও দেখা যায়।
গত ১ জুলাই রাতে একদল জঙ্গি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে। পরদিন সকালে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ছয় হামলাকারী নিহত হওয়ার তথ্য জানায়।
হামলাকারীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য গিয়াসউদ্দিন আহসান, তার ভাগ্নে, তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক এবং শেওড়াপাড়ার একটি বাড়ির মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গুলশানের ওই ক্যাফে থেকে উদ্ধার জিম্মিদের মধ্যে হাসনাত রেজাউল করিম এবং তাহমিদ হাসিব খানকে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের পর থেকে তারা নিখোঁজ।
পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে বললেও তারা এখনো বাড়ি না ফেরায় উদ্বেগ জানিয়ে আসছে তাদের পরিবার।
সুত্র : অনলাইন।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি