সিলেট ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২৫
সুরমামেইল ডেস্ক :
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগই নেই মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই সনদ এবং বিচারের রোডম্যাপ দিয়ে তারপরে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুত নির্বাচন চাই। দেশে একটা নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন, দেশে স্থিতিশীলতা প্রয়োজন, আস্থা প্রয়োজন। এ কারণে দ্রুত সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া প্রয়োজন।’
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর পর্যটন মোটেলে বিভাগের আট জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘জনগণের অনেক প্রত্যাশা ছিল গণঅভ্যুত্থানের পরে, এই সরকারের পক্ষ থেকে এবং আমাদের পক্ষ থেকেও। ফলে আমাদেরকে সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ করতে হবে এবং মানুষ পরিবর্তন চাচ্ছে দেশের।’
‘মানুষের একটা ভয় আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সব কিছু আগের মতো হয়ে যাচ্ছে কি না? যাবে কি না? নতুন করে কোনো ফ্যাসিবাদ আসবে কি না? স্বৈরতন্ত্র আসবে কি না? মানুষের সেই কথা বলার জায়গাটা থাকবে কি না? ৫ আগস্টের পরে আমরা দেখেছি যে, দেশে দুর্নীতি এবং দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি নতুন করে শুরু হয়েছে, চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে। আবার অন্যদিকে আমরা সামাজিক ফ্যাসিবাদের উত্থান দেখছি। এই দেশে নানামুখী সংকট আসলে আছে,’ যোগ করেন তিনি।
নাহিদ আরও বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারী শক্তি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সঙ্গে নানা বৈদেশিক শক্তি জড়িত। ফলে আমরা কিন্তু একটা সংকটের মুখেই আছি। এই সংকটের মধ্যে আমাদের যেমন জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন, আবার এই জাতীয় ঐক্যের ভেতরে আমাদের নিজেদের দলগুলোর ভেতরে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেই সমস্যাগুলোও সমাধান করে আমাদেরকে এক জায়গায় থাকতে হবে।’
‘এখন কেউ যদি মনে করে যে, সে এককভাবেই সব নেতৃত্ব দেবে অথবা সরকার গঠন করে ফেলবে, এটা আসলে সম্ভব হবে না। যদি এই ন্যূনতম ঐক্য না থাকে দেশের সবগুলো পক্ষের মধ্যে, এককভাবে সরকার গঠন করা এবং সেই সংসদ-সরকার টিকিয়ে রাখা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না,’ যোগ করেন তিনি।
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘জনগণের যে ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছিল—সংস্কার, বিচার এই দাবিগুলোকে উপেক্ষা করে যদি নির্বাচনের দিকে যাওয়া হয়, সেটিও আসলে টেকসই হবে না। একটি টেকসই পরিবর্তনের জন্য, স্থিতিশীল পরিবর্তনের জন্য অনেক সংস্কার আমরা চেয়েছিলাম, সেটা হয়নি কিন্তু আমরা অল্প কিছু জায়গায়, সংবিধানের কিছু জায়গায় একমত হয়েছি। ন্যূনতম এই সংস্কার নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগোতে চাই। সেই জায়গায় যদি বাধা তৈরি হয়, সরকারের জায়গা থেকে কোনো গড়িমসি তৈরি হয়, তাহলে এই সরকারকে কিন্তু জনগণের মুখোমুখি হতে হবে এবং যারা বাধা দেবে তাদেরকেও জনগণের মুখোমুখি হতে হবে। ফলে আমরা বলবো যে, দেশ খুব ভালো পরিস্থিতিতে আছে এ রকম নয়।’
নির্বাচনে এনসিপির জোট সংক্রান্ত ভাবনা জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘এনসিপি এককভাবেই তার সমস্ত সাংগঠনিক এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। কারও মুখাপেক্ষী, কারও ওপর নির্ভরশীল হয়ে আমরা রাজনীতি করব না। কিন্তু নির্বাচনে কৌশলগত কারণে বা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে যদি কোনো ধরনের সমঝোতা প্রয়োজন হয়, আমরা সেটার জন্য উন্মুক্ত আছি। কার সঙ্গে জোট হবে, কী হবে-না হবে সেটার ওপর বসে নেই। সেটার ওপর নির্ভর করে নেই।’
জোট করার ক্ষেত্রে এনসিপি অনেক ভাববে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের আমাদেরকে নিয়ে অনেক প্রত্যাশা আছে। আমাদেরকে তারা একটি স্বতন্ত্র জায়গায় দেখতে চায় এবং পুরোনো দলগুলোর প্রতি জনগণের অনীহা আছে। আওয়ামী লীগ তো একটা ফ্যাসিস্ট রূপ নিয়েই ছিল, জনগণ তাকে বিতাড়িত করেছে। এছাড়াও যে দলগুলো আছে গত ১৬ বছরে তাদের ভূমিকা, জনগণের পক্ষে সঠিকভাবে দাঁড়াতে না পারা এবং ঐতিহাসিকভাবেও অনেক দলের অনেক ধরনের ব্যাগেজ থাকায় আমরা মনে করি, নতুন রাজনীতির আকাঙ্ক্ষা সমাজে তৈরি হয়েছে।’
বিভিন্ন দলের বিভিন্ন ধরনের কলঙ্ক রয়েছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, ‘সেটা বিএনপির বলেন—অতীতে তাদের শাসন আমল নিয়ে, দুর্নীতি নিয়ে কিন্তু অনেক সমালোচনা রয়েছে। ৫ আগস্টের পরও তাদের নিয়ে অনেক সমালোচনা রয়েছে। একইভাবে জামায়াতেরও ঐতিহাসিক দায়ভার রয়েছে এবং ৫ আগস্টের পরও জামায়াতকে নিয়ে অনেক ধরনের সমালোচনা রয়েছে। সেই জায়গা থেকে এই ধরনের দলগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের জোটে গেলে তো আমাদেরকে অবশ্যই ভাবতে হবে সেই কথাটি আমরা বলেছি।’
নীতিগত জায়গা থেকে জোট হবে জানিয়ে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদ বা বিচার বা গণঅভ্যুত্থানের প্রশ্নে বা নতুন বাংলাদেশের প্রশ্নে, সংস্কারের প্রশ্নের তাদের ভূমিকা কেমন, সেই জায়গায় যদি আমরা দেখি যে আমাদের কাছাকাছি রয়েছে, সেই বিষয়ে আমরা হয়তো চিন্তা-ভাবনা করব।’
শাপলা প্রতীক না দিলে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলেও এ সময় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একটি নবগঠিত দলের সঙ্গে যদি তারা বেইনসাফি করে, তাহলে এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া তো সম্ভব নয়। ফলে নির্বাচন কমিশনকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করবে নাকি তারা আগের নির্বাচন কমিশনগুলো যে ভূমিকায় ছিল এবং নির্বাচন কমিশনদের যে পরিণতি হয়েছিল, তারাও নিজেদের সেই পরিণতি দেখতে চায়।’
(সুরমামেইল/এমকে)
প্রধান উপদেষ্টাঃ ফয়েজ আহমদ দৌলত
উপদেষ্টাঃ খালেদুল ইসলাম কোহিনূর
উপদেষ্টাঃ মোঃ মিটু মিয়া
উপদেষ্টাঃ অর্জুন ঘোষ
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি