সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৬
সুরমা মেইল ডটকম :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় মহামান্য সুপ্র্রীমকোর্ট হাইকোর্ট ডিভিশন আদালতের আদেশ অমান্য করে জলমহলের ভেঁড়িবাদ কেঁটে পানি নিস্কাশন চালিয়ে মাছ ধরছেন শাসকদল নেতারা। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে , সরকার বাহাদুর হতে পূর্ব গর্দ্দনা মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ লুনিবিল মেধার হাওর (মেদল) বিল ৬বছরের জন্য ইজারা নেয় ২০১৬ইং-সনের প্রথম দিকে। ২০ একরের উর্ধ্বে থাকা এই জলমহাল উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলে ওই সমিতি সরকার বাহাদুর হতে লীজ গ্রহণ করে। কিন্তু তারা মৎসনীতিমালাকে লংঙ্গন করে ক্ষমতার দাপুট দেখিয়ে বছরখানিক সময় না যেতেই ভেঁড়িবাদ কেঁটে পানি নিস্কাশন করে মাছ ধরতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। এমনকি মহামান্য সুপ্র্রীমকোর্ট হাইকোর্টডিভিশন আদালতে সিভিল রিভিশন (নং-১৫৭৪/২০০৪ইং-) মোকাদ্দমাকেও তোয়াক্কা করছেনা। সিভিল রিভিশনের এই মোকাদ্দমায় হাইকোট’র বিচারক একটি আদেশে রুল জারিও করেছেন। এই রুল নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। কিন্তু ইজারাপ্রাপ্ত পূর্ব গর্দ্দনা মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি বাবু সূর্য্য বিশ্বাসগংরা সেই আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে ভেঁড়িবাদ কেঁটে পানি নিস্কাশন করে মাছ ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে গোঠা উপজেলায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় দুটি পক্ষের মধ্যে খুন খারাপি ও হাঙ্গামা দাঙ্গমা সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে দিবালোকে ভেঁড়িবাদ কেঁটে পানি নিস্কাশন করে মাছ ধরার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নিতে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে বিগত (২১নভেম্বর ২০১৬ইং-) মামলার বাদি উপজেলার হেমু মাঝপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে রইছ উদ্দিন একটি লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি আবেদনে উল্লেখ করেছেন সুপ্র্রীমকোর্ট হাইকোর্ট ডিভিশন আদালতে সিভিল রিভিশন (নং-১৫৭৪/২০০৪ইং-) স্বত্ব আপীল মামলায় স্থিতাবস্থা থাকা অবস্থায় ইজারাপ্রাপ্তরা অবৈধভাবে তাদের ভোগদখলীয় জায়গার উপর দিয়ে ভেঁড়িবাধ কেটে পানি নিস্কাশনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে স্থানীয় এলাকাবাসী বিরাট ক্ষয়-ক্ষতির সম্মূখিন হচ্ছেন। কারন ৩৩.১৮ একর জায়গা বোরো ফসল উৎপাদনের জন্য রয়েছে। পাশাপাশি খেটে খাওয়া গ্রাম্য সহজ সরল কৃষকরা বোরো ফসল উৎপাদনের জন্য বীজ উৎপাদন ও রোপনের কাজ চালিয়ে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
দাখিলকৃত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জৈন্তাপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ টি এম মাসুদ আহমদ সরেজমিন তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর বুধবার পরবর্তী প্রয়োজনীয় বিহীত ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য ৫৮৪নং স্মারকে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তিনি ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন লুনিবিল জলমহালের লীজ গ্রহীতা,ইজারার শর্ত ভঙ্গকরে জলমহলের বাঁধ কেঁটে পানি নিস্কাশন করিতেছেন। এবং আবেদনকারীর ১৪ ও ১৫ নং-দাগের মোট ৩৩.১৮একর বন্দোবস্তীয় ভূমির উপরে ভেঁড়িবাধ কেঁটে পানি নিস্কাশনের প্রেক্ষিতে বোরো ধান উৎপাদন,বীজতলার বীজ সহ ফসল উৎপাদনে অনুপযোগী হওয়ার উপক্রম। এতকিছুর পরেও ইজারাদাররা ক্ষমতার দাপুট দেখিয়ে পানি নিস্কাশনের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি সিএনবাংলাদেশ’কে বলেন, কতিপয় শাসক দলের নেতা কর্তারা স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহেল’কে হাত করে মৎসআইন লংঙ্গন ও আদালতের আদেশকে অমান্য করে মাছ ধরা ও পানি নিস্কাশনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উল্টো মামলা মোকাদ্দমার ভয়ও দেখাচ্ছে হত-দারিদ্র কৃষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্ব গর্দ্দনা মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি বাবু সূর্য্য বিশ্বাসগংরা জৈন্তা,গোয়াইনঘাট উপজেলার সাংসদ সদস্য (এমপি) ইমরান আহমদের এপিএস লিয়াকত আলীর আর্শিবাদপুষ্ট কর্তাব্যাক্তি। অথচ এখনও বাবু সূর্য্য বিশ্বাসগংদের পরিবারে ভাত আনতে পান্থা ফুরাচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রায় চল্লিশ লাখ টাকা ব্যায়ে এই লুনিবিল লীজ গ্রহণের অর্থজোগানদাতারাও থেকে যাচ্ছে আইনের ধরাচোঁয়ার বাইরে। আর সরকারের নিকট দেখানো হচ্ছে উন্নয়ন প্রকল্পের ভেলাপ। সেই সমিতির টাকার উৎস কি ? অর্থ জোগানদাতারা কারা ? কোথা থেকে আসছে সেই টাকা! আর কোন কোটিপতিরা মৎসজীবিদের মদদ দিচ্ছে পেছনে ! তবে বিশ্বস্থ একটি সূত্র জানিয়েছে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ টি এম মাসুদ আহমদ ও সাংসদ সদস্য (এমপি) ইমরান আহমদ, এপিএস লিয়াকত আলী, বাবু সূর্য্য বিশ্বাস’র গত একসপ্তাহের কল লিষ্ট সংগ্রহ করলে থলের গভীরে থাকা কালো বিড়ালদের তালিকা বেরিয়ে আসবে অতি সহজেই । এনিয়ে স্থানীয়দের মধ্যেও দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া। তাদের মনে প্রশ্ন একটি সমিতি আইন লংঙ্গন করার পরও কিভাবে তাদের লীজ বহাল থাকে? কোন কারনে উপজেলা প্রশাসন বা উর্ধ্বতন প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন না? বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ডিফল্ডার সমিতিদের শেল্টার দেন ইত্যাদি ইত্যাদি!
এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহেল’র সাথে মুটইফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে বলেন, ভাই এখন আমি একটি মিটিংয়ে আছি এবিষয়ে পরে কথা বলেন।
এবিষয়ে পূর্ব গর্দ্দনা মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি বাবু সূর্য্য বিশ্বাস’র সাথে মুটইফোনে আলাপকালে তিনি শনিবার বিকেল ৩টা ৩২মিনিটে সিএনবাংলাদেশ’কে বলেন, বিল লীজ এনেছি মাছ ধরার জন্য,পানি নিস্কাশন না করলে কিভাবে মাছ ধরবো আমি নেজেই খারা কেটেছি এখন মাছ ধরছি। অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমরা সমিতির লোকেরা এত টাকা পাবো কোথায় তাই লিয়াকতআলী সাব টাকা দিয়ে সাহায্যে করছেন। আমরা অল্প একটা টাকা দিয়েছি বাকিটা তার। কারন লিয়াকত আলী আমাদের সাথে অংশীদার রয়েছেন । তাছাড়া তাদের দল ক্ষমতায় তিনি না থাকলে জলমহাল ফিশিং করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও এমপির এপিএস লিয়াকতআলীর মুটইফোনে ফোন দিলে তার সেলফোন রিসিভ হয়নি। খবর : সিএন বাংলাদেশ
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি