জৈন্তাপুরে দাদন ব্যবসায়ীর খপ্পরে বাড়িছাড়া কয়েকটি পরিবারের লোকজন

প্রকাশিত: ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২৫

জৈন্তাপুরে দাদন ব্যবসায়ীর খপ্পরে বাড়িছাড়া কয়েকটি পরিবারের লোকজন

দাদন ব্যবসায়ী। ফাইল ছবি


জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা চিকনাগুল ইউনিয়নের উমনপুরে এক দাদান ব্যবসায়ী খপ্পরে পড়ে সর্বহারা হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দাদান ব্যবসায়ীর মামলায় দিশেহারা হয়ে বাড়ি ছাড়া রয়েছেন ১০ থেকে ১৫টি পরিবারের লোকজন। ইতিমধ্যে দাদন ব্যবসায়ী খপ্পর থেকে রক্ষা পেতে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ভোক্তভোগী।

 

জানা যায়- ২০২১ সালে মোদির দোকান পরিচালনার জন্য টাকার প্রয়োজন হলে ব্যাংক লোন করার প্রয়োজন হয় শিকারখাঁ গ্রামের মনফর আলীর ছেলে মো. তজমুল আলীর (৩২) নামে এক ব্যক্তির। সিদ্ধান্ত নেন ব্যাংক লোন গ্রহণ করবেন। বিষয়টি জানতে পেরে এবং বিবাদী তজম্মুল হোসেইন উরফে টিয়া হাজী পূর্ব পরিচিত হওয়ায় বাদীর পিতা মনফর আলীর মাধ্যমে আশ্বস্থ করেন ব্যাংক লোন গ্রহণনের কোন দরকার নেই; যতো টাকার প্রয়োজন দাদান ব্যবসায়ী তজম্মুল হোসেইন উরফে টিয়া হাজী দেবেন। এই কথার প্রেক্ষিতে ব্যাংক লোন না নিয়ে জুডিসিয়াল ব্লাংক ষ্ট্যাম্প ও বাদীর পিতার অগ্রণী ব্যাংক গ্যাস ফিল্ড শাখার হিসাব নং-০২০০০০৩২০১৭৬৬ এর ব্লাংক চেক পাতা নং-১১৯২৩০৮৯৩১১ স্বাক্ষর নিয়ে ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন।

 

পরবর্তীতে সুচতুর দাদন ব্যবসায়ী তজম্মুল হোসেইন উরফে টিয়া হাজী কৌশল অবলম্বন করে ৩ লক্ষ টাকার বিপরিতে ৬ লক্ষ ২০ হাজার টাকা আদায় করে ব্লাংক চেক ও জুডিসিয়াল ব্লাংক ষ্ট্যাম্প ফিরত না দিয়ে আইনজীবির মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশে জানান আগামী ৩০দিনের মধ্যে তজম্মুল আলী ৯ লক্ষ টাকা ও তার পিতা মনফর আলী ৬ লক্ষ টাকা পরিশোধ করার জন্য।

 

বাদী অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন- এভাবে তিনি এলাকার সহজ সরল মানুষের নিকট জুডিসিয়াল ব্লাংক ষ্ট্যাম্প ও ব্লাংক চেকের মাধ্যমে বহু ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে টাকা দিয়ে এলাকায় মানুষজনকে সর্বহারা করছেন দাদান ব্যবসায়ী তজম্মুল হোসেইন উরফে টিয়া হাজী।

 

সরেজমিনে বিষয়টি জানতে গেলে এলাকার ভোক্তভোগী মিনতি রায় জানান, টিয়া হাজির নিকট থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। পরবর্তীতে ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেন। বর্তমানে তার বিরদ্ধে ৭ লক্ষ টাকার লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন।

 

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের কর্মচারী বশির আহমদ জানান, তার পরিচিত একব্যক্তি বশির আহমদকে জিম্মাদার রেখে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। পরে জিম্মাদার বশির আহমদ মান সম্মানের ভয়ে তিনি হাউজ বিল্ডিং লোন নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে জিম্মাদার সহ তার কাছ থেকে আত্মীয় বিরুদ্ধে ২৫ লক্ষ টাকার লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন।

 

স্থানীয় কাপনা কান্দি গ্রামের আলিম উদ্দিন জানান, ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেন, ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বর্তমান ১৫ লক্ষ টাকার লিগ্যাল নোটিশ তার বিরুদ্ধে।

 

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আরেক কর্মচারী মো. আয়াত উল্লাহ জানান, দেড় লক্ষ টাকা নিয়েছেন, পরবর্তীতে আড়াই লক্ষ টাকা পরিশোধ করেন। বর্তমানে ৫ লক্ষ টাকার লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন তিনিও।

 

রাজু আলী জানান, ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। পরর্তীতে ৫ লক্ষ টাকার লিগ্যাল নোটিশ পেয়েছেন।

 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত তজম্মুল হোসেইন উরফে টিয়া হাজী জানান, তিনি জমি কেনা বেচার ব্যবসা করেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো মিথ্যা। তিনি বলেন, আমি সুধের ব্যবসা করিনা, কোর্টে কোন প্রমাণ পাবেন না।

 

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান জানান, মো. তজমুল আলী আদালতে মাধ্যমে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আদালত অভিযোগটি তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা অভিযোটির সুষ্ট তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করব।

 

(সুরমামেইল/জেআই)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com