জৈন্তাপুরে ফুটপাতে শীতের পিঠা বিক্রির ধূম

প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৬

শোয়েব উদ্দিন, জৈন্তাপুর থেকে :: সকালের কুয়াশা কিংবা সন্ধ্যার হিমেল বাতাসে ভাপা পিঠার গরম আর সুগন্ধি

ধোঁয়ায় মন আনচান করে ওঠে। সরষে বা ধনে পাতার বাটা অথবা শুটকির ভর্তা মাখিয়ে চিতই পিঠা মুখে দিলে ঝালে কান গরম হয়ে শীত পালায়।

প্রতি শীতে পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে সিলেটের জৈন্তাপুর, হরিপুর , দরবস্ত বাজারে শীতের আগমনি বার্তায় ফুটপাতে ‘শীতের পিঠা’ বিক্রির ধুম পড়েছে। শীত এলেই এক শ্রেনীর মৌসুমি শীতের পিঠা ব্যবসাইয়ীরা দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ ব্যবসায় ব্যস্ত সময় কাটান। জৈন্তাপুরসহ কয়েকটি বাজারের ফুটপাতে ভেনে করে চুলোয় লাকড়ী পুড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন রকমের দেশীয় পিঠা তৈরী ও বিক্রি করেন।

পিঠা প্রেমিক মানুষ শীতের পিঠার স্বাদ গ্রহন করতে ফুটপাতের এসব পিঠার দোকানে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন। অনেকেই পিঠার দোকানের চুলার পাশে বসেই গরম পিঠা খাওয়াকে রেওয়াজে পরিনত করেছেন। অনেকে পরিবারের চাহিদা মেটাতে পিঠা ক্রয় করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন।

এ ছাড়া সন্ধ্যার পর ব্যবসায় প্রতিষ্টান, অফিস, দোকান, ক্লাব, আড্ডায়ও পিঠার আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। তবে শ্রমজীবি, রিক্সা চালাক, ড্রাইভার, শ্রমিকসহ অভিজাত শ্রেণীর লোকজনের কাছে অত্যন্ত প্রিয় খাবার শীতের পিঠা। ব্যবসাইয়ীরা বেকারত্ব দুরীকরন ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি তারা লালন করছেন দেশীয় এ সংস্কৃতি। পাশ্চাত্যের আধুনিকতায় গা-ভাসিয়ে শহরে লোকজন ফিজা, কেক, মোগলাইসহ বিভিন্ন তৈলাক্ত ও ক্ষতিকর খাবারের বদলে দেশের চিরচেনা চালের গুড়া, আটা, ময়দা, নারকেল ও গুড়ের তৈরী পিঠা ব্যবসা এখন জমজমাট। চালের গুড়ার সাথে আটা বা ময়দা মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে ভাপা পিঠা, ডুবা পিঠা, পাঠিসাপটা, গুলগুলি, পিঠা পুলি, চই পিঠা, সাজ পিঠা, মেড়া পিঠা, চিতই পিঠা ও চিংড়ি বড়ার মতো বিভিন্ন দেশীয় জাতের পিঠা।

তিনি চালের গুড়ার সাথে পরিমান মতো লবন মিশিয়ে তৈরী করছেন চিতই পিঠা। ছোট-ছোট আটটি চুলা দিয়ে কয়েল লাখড়ী পুড়িয়ে তিনি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পিঠা তৈরী ও বিক্রি করে থাকেন। ক্রেতাদের বসার জন্য চুলার পাশেই বেঞ্চ রাখা হয়েছে। তৈরী চিতই পিঠার সাথে শিদল চাটনী, ছোট চিংড়ি মাছের ভর্তা, সরষে বাটা ও ধনিয়াপাতা বাটা দিয়ে পরিবেশন করা হয়।  বাবুল মিয়ার দোকানে সন্ধ্যা থেকেই ক্রেতাদের উপছে পড়া ভিড় লেগে থাকে। পরিবেশনের ক্ষেত্রে বিলম্ব হলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মান-অভিমানও বাক-বিতন্ডা হলেও পিঠা সংগ্রহে পিছপা হচ্ছেন না ক্রেতারা।

পিঠা ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া জানান, দীর্ঘ ৩ বছর থেকে এ ব্যবসা চালাচ্ছেন। গরমে তিনি বিভিন্ন ব্রান্ডের আইসক্রিম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করলেও শীত মৌসুমে তিনি চিতই পিঠা বিক্রি করে যাচ্ছেন। তার হাতের তৈরি পিঠা ক্রেতারাও বেশ পছন্দ ও আগ্রহভরে গ্রহন করছেন। প্রত্যহ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার পিঠা বিক্রির লভ্যাংশ থেকেই স্বাচন্দ্যে চলছে তার পরিবার।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com