সিলেট ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
আইসক্রীম বিক্রেতা লাল মিয়ার মরদেহ ও গ্রেপ্তার রুবেল আহমদ। বাঁ থেকে
মুমিন রশিদ, কানাইঘাট :
সময়টা ২০১৮ সাল। ওই সময় রুবেল আহমদের (৩৬) সাথে আইসক্রিম বিক্রেতা লাল মিয়ার (৩৯) বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে হত্যাকারী রুবেলের কাছ থেকে লাল মিয়া বেশ কিছু টাকা ধার নেন। ধার দেওয়া সেই টাকা লাল মিয়ার কাছে ফেরত চাইলে টাকা দেওয়ার কথা বলে লাল মিয়া রুবেল আহমদকে তার ভাড়া দোকানে ডেকে নেন।
সেখানে রুবেল আহমদকে জোরপূর্বক বলাৎকার করেন। বলাৎকারের পর রুবেলকে পরদিন টাকা দিবে বলে জানান লাল মিয়া।
কথামতো পরদিন (বুধবার) রাত দেড়টার দিকে ভাড়াটিয়া দোকানে টাকা আনতে গেলে দোকানের ভিতরে ঢুকিয়ে সাটার লাগিয়ে তালা দেন লাল মিয়া। পরে বন্ধ দোকান ঘরে আবারও রুবেলকে জোরপূর্বক বলাৎকার করে হত্যার শিকার আইসক্রীম বিক্রেতা লাল মিয়া।
তাকে বলাৎকার করার পর লাল মিয়া ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লে তখন ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের ভিতর থাকা লোহার পাইপ সদৃশ্য বস্তু দিয়ে মাথায় দু’টি ও অন্ডকোষে ১টি আঘাত করলে লাল মিয়া ঘটনাস্থলে মৃত্যু বরণ করেন। পরে সে দোকানের সাটারের বাহির দিকে তালা দিয়ে চলে যায়।
ঘটনাটি গত ২০ নভেম্বর (বুধবার) গভীর রাতের। এরপর শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে থানা পুলিশ দোকানের ভিতর থেকে আইসক্রিম বিক্রেতা লাল মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
আব্দুর রহমান লাল মিয়া (৩৯) উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের লখাইরগ্রামের মৃত হাসন আলীর পুত্র। তিনি পেশায় আইসক্রিম বিক্রেতা ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের লখাইরগ্রাম (বাগবাড়ি) গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র আহসান উল্লাহ বতাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে শুক্রবার কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরদিন শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোর রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী হাদারকান্দি বেরিবিল এলাকার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে হত্যাকারী রুবেল আহমদকে গ্রেপ্তার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর ঘাতক রুবেল আহমদ আদালতে উপরোক্ত বিষয় জানিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। রুবেল আহমদ (৩৬) কানাইঘাট পৌরসভার ধর্মপুর গ্রামের নজিমুল হকের পুত্র।
গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, আইসক্রিম বিক্রেতা আব্দুর রহমান লাল মিয়াকে রুবেল আহমদ নিজে হত্যা করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
ওসি জানান, লাশ উদ্ধারের পর থেকে থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় লাল মিয়ার হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আটক করতে অভিযানে নামে। কললিস্ট তুলে সন্দেহভাজন হিসেবে রুবেল আহমদের ছোট ভাইসহ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পর লাল মিয়ার খুনি হিসেবে রুবেল আহমদকে চিহ্নিত করে পুলিশ।
(সুরমামেইল/এফএ)
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি