নবীগঞ্জে বালু ভর্তি ৭টি ট্রাক আটক করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি!

প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫

নবীগঞ্জে বালু ভর্তি ৭টি ট্রাক আটক করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি!

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর বালু বৈধভাবে মহাসড়কের ৬ লেনের কাজে বরাদ্দ দেওয়ার সময়  ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতির নেতৃত্বে একদল লোক ৭টি বালু ভর্তি ট্রাক আটক করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

এ বিষয়ে রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ৭ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু ভর্তি ট্রাকগুলো উদ্ধার করেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজে বৈধ ভাবে বালু সরবরাহের কাজে একটি পক্ষ রোববার সকালে বাঁধা প্রদান করেছেন।

 

জানা গেছে- ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ৬লেন উন্নয়ন কাজের জন্য বালু বরাদ্ধ করার জন্য মা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ থেকে কুশিয়ারা নদীর বালু উত্তোলন করে মহাসড়কের নবীগঞ্জ এলাকায় সরবরাহ করে আসছিল।

 

সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি বাইপাস মহাসড়ক দিয়ে বালু ভর্তি ট্রাক নিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার মহাসড়কে আসার সময় বাঁধা প্রদান করেন। বাঁধা প্রদানকারীরা ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মা এন্টারপ্রাইজের ম্যানাজার মো: সাঈদ আলী এই মর্মে নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

 

তিনি মামলার অভিযোগে বলেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন যাবৎ সাসেক প্রজেক্টের এশিয়ান হাইওয়ে সিক্স লাইনের উন্নয়ন কাজে প্রকল্পে বৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে তা দিয়ে আসছেন। উল্লেখিত বিবাদীগণ দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন লোকজনের সূত্রে আমাদের নিকট ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা তাদেরকে দেওয়ার জন্য দাবি করে আসছে। বিবাদীদেরকে টাকা না দিলে আমাদেরকে বালু উত্তোলনের ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। বিবাদীদের হুমকির কারণে আমাদের ড্রাম ট্রাক বালুর গাড়ীগুলো নিরাপদে রাস্তা ঘাটে চলতে পারছে না।

 

রোববার সকাল ৮টার দিকে রানীগঞ্জ থেকে বালু ভর্তি ড্রাম ট্রাকগুলো বালু নিয়ে আসার সময় নবীগঞ্জ থানার ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের মুচি বাড়ির ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার উপর পৌছিলে উল্লেখিত আসামী ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল হকের নেতৃত্বে ৬/৭ জন গাড়ির গতিরোধ করে আটক করে।

 

এসময় তার ছিলেন নবীগঞ্জ থানাথীন স্বস্তিপুর গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে মোঃ জগলু মিয়া (৩৬), কামারগাঁও গ্রামের আব্দুল মুক্তারের ছেলে মো: মুকিদ মিয়া (৩৮), বহরমপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে রউফ মিয়া (৪০),  কামারগাঁও গ্রামের শিপন মিয়া (৪৩) ও নগরকান্দি গ্রামের জয়নাল মিয়া (৪০) সহ আরও ৭/৮ জন ।

 

তারা গাড়িগুলো আটক করে উল্লেখিত সাক্ষী ও চালকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে এলোপাতারি ভাবে মারপিট শুরু করে। তারা প্রাথমিক ভাবে আহত হয়। এসময় আসামীরা বাদীকে ফোন করে তাদের দাবীকৃত ১০ লক্ষ টাকা না দিলে বালু বোঝাই করা আমাদের ড্রাম ট্রাকগুলো ছাড়বে না। এসময় বালু ভর্তি গাড়িগুলো ভাঙ্গচুর করে।

 

বর্তমানে গাড়িগুলো বিবাদীদের নিকট আটক রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। টাকা না দিলে গাড়িগুলো না দেওয়ার হুমকি দিয়াছে। বিবাদী আব্দুল হক ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল। ৩ ও ৪নং আসামি স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

 

এ ব্যাপারে দীঘলবাক ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হক বলেন, তিনি কোন চাঁদাবাজির জন্য তারা গাড়ি আটক করেননি। ওভারলোড গাড়ি সড়ক নষ্ট করছে তাই এগুলো আটক করা হয়েছে।

 

এদিকে মা এন্টার প্রাইজের সত্বাধিকারী মতিউর রহমান বলেন, আমি বৈধ ভাবে মহাসড়কের সিক্স লেন এর কাজে বালু দিচ্ছি, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বালু গাড়ি আটক করে চাঁদাদাবি করে আসছে। আজকে সকালে আমার ৭/১০টি বালু ভর্তি গাড়ি আটক করে চাঁদাদাবি করলে আমার ম্যানাজার নবীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

 

নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন বলেন, আমি এই বিষয়ে ৭জনের বিরুদ্ধে লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। আটককৃত ট্রাকগুলো উদ্ধারের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরবর্র্তীতে চাঁদাদাবির সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

(সুরমামেইল/এমএএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com