পরিত্যক্ত সেই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু

প্রকাশিত: ৯:৫৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০২৪

পরিত্যক্ত সেই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিলেট-৭ নম্বর গ্যাসকূপ সংস্কারের সময় নতুনভাবে গ্যাস ও জ্বালানি উত্তোলন শুরু হয়েছে। তারপর চলতি বছর এই কূপে পুনঃখনন শেষে নতুন গ্যাসের সন্ধান প্রাপ্তির পর এবার সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকালে জাতীয় সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া হয় কূপটিকে। এরমধ্য দিয়ে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হলো দৈনিক ৮০ লাখ ঘনফুট গ্যাস।

 

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে জাতীয় গ্রিডে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড। যার পরিমাণ এবার আরও বাড়ল। সিলেট-৭ নম্বর গ্যাসকূপ থেকে ১৯৮৬ সালে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়ে ১৯৯৪ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। চলতি বছরের জুলাইয়ে বাপেক্স এই কূপের পুনঃখনন কাজ শুরু করে ২২ অক্টোবর গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। এরপর সব আনুষাঙ্গিক কাজ শেষে আজ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হয়েছে।

 

জানা গেছে, সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানির ১৫তম গ্যাস কূপ সিলেট-৭ নম্বর কূপ থেকে ১৫-২০ বছর গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। কূপে ৯৪ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত আছে। কূপ থেকে দৈনিক চার লাখ টাকার কনডেনসেট এবং ৫০ কোটি টাকার গ্যাস উত্তোলন করা হবে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরোনো গ্যাসকূপ সিলেট-৭ নম্বরে জুলাই মাস থেকে অনুসন্ধান চলে। গত ১৪ অক্টোবর কূপের ২০১০ মিটার গভীরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান মেলে। এরপর ২২ অক্টোবর ওই কূপের ১২০০ মিটার গভীরে আরও সাড়ে আট মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এই টেস্ট হিসেবে এক সপ্তাহ গ্যাস উত্তোলন করা হয়। পরে ওই কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।

 

সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৮৬ সালে জৈন্তাপুরের হরিপুর সিলেট-৭ নম্বর কূপে তেল উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়। এরপর তেল উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এবার পুরানো কূপে দুটি লেয়ারে গ্যাসের সন্ধান মেলে। সিলেট থেকে এ পর্যন্ত জাতীয় গ্রিডে ১৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়ে আসছিল। এখন সেটি আরও বাড়ছে।

 

সিলেটে ১৪টি কূপে খনন ও গ্যাস উত্তোলন করে দেশীয় তেল গ্যাস উৎপাদনকারী কোম্পানি বাপেক্স। এরমধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে দুটি কূপে, গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলার তিনটিতে, রশিদপুরের সাতটি ও বিয়ানীবাজারের দুটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন অব্যাহত আছে।

 

এর মধ্যে জৈন্তাপুরের হরিপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৫৫ সালে ৯টি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে দুটিতে গ্যাস পাওয়া যায় এবং ১৯৬১ সালে এই কূপ দুটি উৎপাদনে যায়। গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা ১৯৬২ সালে সাতটি কূপে পরীক্ষা চালিয়ে তিনটিতে গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৮৩ সালে উৎপাদনে যায়। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডে ১৯৬০ সালে ১১টি কূপ খনন করে সাতটিতে গ্যাস উৎপাদনে যায় ১৯৯৩ সালে। বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ডে ১৯৮১ সালে দুটি কূপ খনন করে দুটিতেই গ্যাসের সন্ধান মেলে এবং ১৯৯৯ সালে উৎপাদনে যায়।

 

(সুরমামেইল/এমএইচ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com