পলিথিন বিরোধী অভিযান জোরদার করা দরকার!

প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৬

পলিথিন বিরোধী অভিযান জোরদার করা দরকার!

72942_1সুনির্মল সেন :: পণ্যটি দেশে একেবারেই নিষিদ্ধ! অথচ এটি বহুল ব্যবহৃত পণ্যের মধ্যে একটি। সেটা হলো পলিথিনের শপিং ব্যাগ। দেশে সর্বত্র পলিথিনে ছেয়ে গেছে। সিলেটের বাজারেও তা ব্যতিক্রম নয়। পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী, শিঘ্রই সারাদেশে পলিথিন বিরোধী অভিযান জোরদার করা দরকার। এ ছাড়া অবৈধ পলিথিন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।

জানা গেছে, বাজারে যেকোনো পণ্য ক্রয় করতেই ব্যবহৃত হচ্ছে এই নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যাগ। শুকনো পণ্য যেমন বহন করা হচ্ছে পলিথিনে , তেমনি কাঁচামাল এবং তরল পণ্য বহন করা হচ্ছে পলিথিনে। বরং তরল পণ্য পলিথিনের মাধ্যমে বাজারজাত করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘সৃষ্টি আছে ধ্বংস নেই’ এমন পরিবেশঘাতি বস্তু পলিথিনে ছেয়ে গেছে দেশ। নিষিদ্ধ পলিথিন ছাড়া এখন বাজার অচল। ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই নির্ভরশীল পলিথিনের উপর।

পলিথিন হচ্ছে পরিবেশ বিধ্বংসী একটি দ্রব্য। ব্যবহৃত শপিং ব্যাগ মাটিতে ফেলে দিলে, তা মাটির উর্বরা শক্তি ধ্বংস করে ফেলে। কারণ পলিথিন পঁচনশীল বস্তু নয়। মাটিতে দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে তা চলে যায় মাটির নীচে। ফলে ‘প্রাকৃতিক লাঙ্গল’ বলে খ্যাত কেঁচো মাটির গভীর থেকে উর্বরা সম্পন্ন মাটি ওপরে তুলে আনতে পারছেনা। এতে জমির উর্বরতা বিনষ্ট হচ্ছে।

এই পলিথিন নদী, খাল, ড্রেন বন্ধ করে দিচ্ছে। পলিথিনে নদীর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বিঘিœত হচ্ছে। ব্যবহৃত পলিথিন ধ্বংস করার জন্য আগুনে পোড়ালেও শেষ রক্ষা হয়না। পোড়ানোর পর নির্গত ধোঁয়ার মাধ্যমে পলিথিনের বিষাক্ত পদার্থ বাতাসে মিশে গিয়ে বাতাস দূষিত করছে।

পলিথিনের ব্যবহার এদেশে নতুন নয়। অতীতে এই পলিথিনের ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়ে ছিলো। বিগত চার দলীয় জোট সরকারের আমলে পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন পাস করা হয়। এর পরে অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয় এর ব্যবহার। কিন্তু সেটা বেশীদিন স্থায়ী হয়নি। কিছু দিনের মধ্যেই পলিথিন ফিরে পূর্বাবস্থায়।

এর কারণ হলো, পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ সংক্রান্ত আইনটি করা হয়ে ছিলো ২০০২ সালে, সেটা কেউ এখন মানছেনা। সে আইনে পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয় এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এর কার্যাদেশ আজো বাস্তবায়ন হয়নি।

সবচেয়ে বড় কথা এর উৎস স্থল বন্ধ করা। উৎস স্থল হচ্ছে উৎপাদন। উৎপাদনকারী কারখানাগুলো বন্ধ হলে সাভাবিক ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে বিক্রয় ও ব্যবহার।

পলিথিন বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হয় মাঝে মধ্যে। এতে উদ্ধারও করা হয় নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ। কিন্তু এইসব বিচ্ছিন্ন লোক দেখানো অভিযানে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার ও বিক্রয় নিয়ন্ত্রনে আসেনা। নিষিদ্ধ পলিথিনকে বাজার থেকে সরাতে হলে, অভিযান প্রতিনিয়ত রাখতে হবে।

এ ছাড়া এ ব্যাপারে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশা-পাশি জরুরী হচ্ছে জনসচেতনতা। পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট বা চটের শপিং ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে হবে। কাগজের ব্যাগের ব্যবহারের উপর জোর দিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে একটি সু-সংবাদ জরুরী তা হচ্ছে, সরকার শিঘ্রই পলিথিনের বিরুদ্ধে সাড়াশী অভিযান শুরু করতে পারে। পলিথিনের উৎস স্থলে আঘাত করে তা চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে অভিযান পরিচালনা করবে বলে বিজ্ঞমহল আশা করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com