সিলেট ১৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৩৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১, ২০১৯
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাতে মদন মোহন কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. সাইফুর রহমান (২৯) কে নিয়ে সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটস্থ হোটেল মেহেরপুরে ওঠেন প্রেমিকা নিশাত তাসনীম রুপা। হোটেলে ওঠার পর রাতেই সাইফুরকে বিষ ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন রুপা। এরপর গলায় রশি পেচিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
মৃত্যু নিশ্চিতের পর রুপা হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে (রিসিপশন) এসে জানান, তাঁর স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, হাসপাতালে নিতে হবে। এসময় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক রুপার প্রেমিক মোজাম্মিল হোসেন একটি অটোরিকশা নিয়ে হোটেলের সামনে আসেন। পরে অটোরিকশায় করে রুপা, মোজাম্মিল এবং চালক মিলে সাইফুরের লাশ দক্ষিণ সুরমায় সড়কের পাশে ফেলে আসেন।
সোমবার (০১ এপ্রিল) সিলেট মহানগর ৩য় আদালতের হাকিম সাইফুর রহমানের আদালতে এমনটি জবানবন্দি দেন গরীর শাহপরান এলাকার খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের মেয়ে নিশাত তাসনীম রুপা (২০)। একই আদালতে রুপার কথিত প্রেমিক ছাতক উপজেলার আলমপুর গ্রামের মোজাম্মিল হোসেনও (২৪) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারাপ্রপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল।
দু’জনের জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বাসায় লজিং থেকে রুপাকে পড়াতেন সাইফুর। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সম্প্রতি মোজাম্মিলের সাথে প্রেমে জড়ান রুপা। এতে বাঁধা দেন সাইফুর। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে মোজাম্মিল ও রুপা পরিকল্পনা করে সাইফুরকে হত্যা করেন।
কলেজ শিক্ষক সাইফুর হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বলেন, সাইফুরের লাশ উদ্ধারের পরই তদন্তে নামে পুলিশ। এতে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি উঠে আসে।
উল্লেখ্য, রোববার (৩১ মার্চ) ভোরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকার সড়কের পাশ থেকে নগরীর মদন মোহন কলেজের প্রভাষক সাইফুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নগরীর টিলাগড় থেকে কথিত প্রেমিক মোজাম্মিল হোসেন (২৪) ও শাহপরান এলাকার খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের মেয়ে নিশাত তাসনীমকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় সোমবার (০১ এপ্রিল) নিহতের মা রনিফা বেগম বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-০১ (০১/০৪/২০১৯)। গ্রেপ্তারকৃত দুইজনকে দুপুরে আদালতে হাজির করলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
নিহত মদন মোহন কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সাইফুর রহমান গোয়াইনঘাট উপজেলার ফলতইল গ্রামের মো. ইউসুব আলীর ছেলে। গত শনিবার সকাল ১১টার দিকে মেস থেকে বের হন সাইফুর রহমান। রাতে তিনি আর বাসায় ফিরেননি। রোববার সকালে দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকায় তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।
এদিকে, এই হতাকান্ডের বিচার দাবিতে সোমবার নগরীর টিলাগড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের শিক্ষার্থীরা।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি