বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবনে ছিলেন দুরন্ত প্রতিবাদী সাহসী

প্রকাশিত: ৪:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০১৬

বঙ্গবন্ধু স্কুল জীবনে ছিলেন দুরন্ত প্রতিবাদী সাহসী

pc-4_152149

সুরমা মেইর নিউজ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কুল জীবনে ছিলেন দুরন্ত, প্রতিবাদী, সাহসী ও অধিকার আদায়ে সোচ্চার। ১৯৩৯ সালে তিনি গোপালগঞ্জ এম এন ইনস্টিটিউশনে ৮ম শ্রেণিতে ভর্তি হন ( প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ)। ভর্তি হয়েই তিনি ওই শ্রেণির ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হন।

১৯৪০ সালে অবিভক্ত বাংলার খাদ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ এম এন ইনস্টিটিউশন পরিদর্শনে এলে শেখ মুজিবুর রহমান স্কুলের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য শুনে সেদিন সোহরাওয়ার্দী অভিভূত হয়েছিলেন। ওই দিন থেকে তিনি তার নজরে পড়েন। এখান থেকেই তার রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ আসে। ১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু এ স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে কোলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি সোহরাওয়ার্দীর সংস্পর্শে আসার সুযোগ পান। এভাবেই তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। কথাগুলো বললেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম সমাদ্দার ও গোপালগঞ্জ শহরের ইতিকথা এবং বঙ্গবন্ধুর দাফন কাফন বইয়ের রচয়িতা,তার একনিষ্ঠ কর্মী আবুল হোসেন ভূইয়া।
আবুল হোসেন ভূইয়া বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি চারণ করে বলেন,১৯৪১ সালের দিকে গোপালগঞ্জ মুন্সেফ কোর্ট চত্বরে বাইসকোপ দেখানো হতো। বাইসকোপ দেখার জন্য সাধারণ মানুষ মাটিতে পাটি পেতে বসতেন। সেখানে অফিসারদের জন্য ৬ টি চেয়ার সংরক্ষিত ছিলো। বঙ্গবন্ধু ৬ টি চেয়ার ভেঙে ফেলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মানুষ সবাই সমান। তাই এক কাতারে বসে সবাই বাইসকোপ দেখবে। ওই দিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার প্রথম কথা হয়। তারপর থেকেই আমি নিবেদিত কর্মী হিসেবে তার সঙ্গে কাজ শুরু করি। ছাত্র জীবনে তিনি টিফিন নিজে না খেয়ে গরীব মেধাবীদের খাওয়াতেন। টাকা জমিয়ে সহপাঠীদের সাধ্য মত বই,খাতা,কলম ও টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করতেন। সে সময় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। খেলাধূলা,স্কাউটসহ অন্যান্য বিষয়ে সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। কর্মীদের আকৃষ্ট করতে তার মধ্যে চম্বুকের মত আকর্ষণ ক্ষমতা ছিলো। তিনি একবার যার সঙ্গে পরিচিত হতেন, তাকে তিনি ভুলতেন না। তিনি আমার মতো কর্মীকে বেশি মূল্যায়ন করতেন।

আবুল হোসেন আরও বলেন,  আমি বঙ্গবন্ধুর কর্মী ছিলাম। স্নাতক পাশ করার পরও পাকিস্তান সরকার আমাকে চাকরি দেয়নি। বঙ্গবন্ধু আমিসহ ফরিদপুর জেলার এরকম ১০ কর্মীকে তার নিজ তহবিল থেকে ভাতা দিতেন। পরে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু কলেজে প্রদর্শক পদে আমার চাকরি হয়। ১৯৭২ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়া আসেন। বঙ্গবন্ধু কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে তার সঙ্গে দেখা করি। তার সঙ্গে ওই দিন আমার শেষ কথা হয়। তিনি সে দিন আমাকে বলেছিলেন মহকুমা পর্যায়ের কলেজ সরকারি করার ক্ষমতা আমার নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com