বটেশ্বরে কাঠ মিস্ত্রী সিতেনকে প্রাণ নাশের হুমকী: নিরাপত্তায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৬

বটেশ্বরে কাঠ মিস্ত্রী সিতেনকে প্রাণ নাশের হুমকী: নিরাপত্তায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ

siten

সুরমা মেইল নিউজ :: সিলেট শহরতলীর শাহপরাণ থানার অন্তর্গত বটেশ্বরের কানুগুল গ্রামের এক হত দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রীর ভূমি দখলের পায়তারা করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।

একটি আবাসন প্রকল্পের কর্তা ব্যাক্তিরা ওই ভূমি জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

সম্প্রতি সিলেট প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, কানুগুল গ্রামের মৃত মহেন্দ্র দেব নাথের পুত্র সিতেন দেব নাথ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি আমার ভূ-সম্পত্তির একটি অংশের দখল হতে দীর্ঘদিন হতে বঞ্চিত রয়েছি। মৌরসী সুত্রের ভূমির মালিক হওয়া সত্যেও ভূমি খেকোদের উৎপাত ও জবরদখল চেষ্টার কারনে আমার সম্পত্তি ভোগদখল করতে পারছি না। উপরোক্ত ওই চক্র আমাকে প্রতিনিয়ত প্রাণ নামের হুমকী দিচ্ছে। আমি আমার স্বত্ত্ব ৩৬১০নং দলিলের অধিনে ১৪৪২ দাগের ২৯.৫০ শতাংশ ভূমি দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘেœ ভোগদখল করে আসছিলাম। কিন্তু ২০১৩ সালের জুন মাসের মাঝামাজি সময়ে কিছু লোক এসে আমার ভূমির উপর ইট, বালু, রডসহ নির্মাণ সামগ্রী রেখে যায়। আমি ভেবে ছিলাম তারা হয়তো পাশের কোনো জায়গায় ভবন নির্মাণের উদ্দেশ্যে এসব অস্থায়ী ভাবে রেখেছে। পরবর্তিতে আমি দেখি এই সামগ্রী দিয়ে আমার ভূমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে শুরু করে। আমি এ ব্যাপারে মৌখিক ভাবে বাধা প্রদান করলে তারা তা শুনেনি। এতে কোনো প্রতিকার না পেয়ে আমি ১৯ জুন শাহপরাণ (রহ.) থানায় একটি মামলা দায়ের করি।

পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দেয়। মামলা দায়ের করার তিনদিন পর তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আবারো নির্মাণ কাজ চালাতে থাকে। এ সময় আমি ঘটনাটি পুলিশকে অবগত করি। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এমতাবস্থায় একই বছরের ২ জুলাই মহামাণ্য অতিরিক্ত জেলা হাকিম আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। ওই মামলাটি শুনানী না করে নথিজারী করলে আমি শুনানীর জন্য মহামাণ্য সিলেট দায়রা জজ আদালতে আপিল করি। এই মামলাটি এখনো বিচারাধীন রয়েছে।

বিগত ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর উক্ত আবাসন প্রকল্পের সেক্রেটারী সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল নিজে উপস্থিত থেকে তার লোক দিয়ে আমার ভূমির উপর লাগানো প্রায় ৪০টি মেহগুণী গাছের ছারা উপড়ে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায়ও আমি মামলা করলে পুলিশ কোনো তদন্ত করেনি।

সিতেন দেব নাথ আরো বলেন, এই চক্র আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। ভূমি থেকে সরে না গেলে তারা আমাকে গুম অথবা খুন করবে বলেও হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। বটেশ্বর বাজারে আমার কাঠ মিস্ত্রির দোকানে প্রায়ই ভিন্ন ভিন্ন লোক এসে আমাকে প্রাণে মারার হুমকী দিয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

সাংবাদিক সম্মেলনে কাঠ মিস্ত্রি সিতেন দেব তার ভূমি রক্ষা এবং জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন- মাসুম আহমদ চৌধুরী, জালাল আহমদ ও জয়নাল মিয়া।

উল্লেখ্য যে, এই চক্রের প্রধান সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল সু-চতুর প্রকৃতির লোক। তার বিরুদ্ধে সিলেটে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি মুক্তিযোদ্ধা। এ যাবত তিনি প্রমান করতে পারেননি তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা।

রাণাঙ্গনে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তারা বলেছেন- সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েলকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ কালীন সময়ে রণাঙ্গনে পাইনি। তিনি আপাদমস্তক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। ক্ষমতার জুড়ে মুক্তিযোদ্ধা সেজেছেন।

একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিয়ানীবাজার উপজেলার প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল খালিক বলেছিলেন, জুয়েলকে আমরা বা আমাদের সহযোদ্ধারা কখনো মুক্তিযুদ্ধ করতে দেখেনি।

এই জুয়েল সম্বন্ধে সিলেটে নানান মুখরোচক কথাবার্তা রয়েছে। সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েলের ভাগ্যের দুয়ার খুলে যায়, ওয়ান ইলেভেন এর সময়। তখনই তিনি পেয়ে যান সিলেট বিভাগীয় কমান্ডারের পদ। মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদে এ ধরনের কোনো পদই নেই। পদ না থাকলেও ‘বিশেষ বিবেচনা’য় সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েলেরজন্য তৈরি হয় ‘বিভাগীয় কমান্ডার’র পদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com