সিলেট ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৬, ২০২৪
সুরমামেইল ডেস্ক :
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের ১৫টি জেলা বন্যার কবলে পড়েছে। এতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।
শনিবার (০৭ জুলাই) সচিবালয়ে সাম্প্রতিক উজান থেকে নেমে আসা পানি এবং ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর, গাইবান্ধা, ফেনী, রাঙ্গামাটি, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট ও কক্সবাজারসহ দেশের ১৫ জেলা জেলা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। ফলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ এছাড়াও প্রতিদিনই বন্যা বিস্তৃতি লাভ করছে বলেও জানান তিনি।
মহিববুর রহমান জানান, বন্যা আক্রান্ত ১৫ জেলায় এ পর্যন্ত নগদ তিন কোটি ১০ লাখ টাকা, ৮ হাজার ৭০০ টন ত্রাণের চাল, ৫৮ হাজার ৫০০ ব্যাগ শুকনো ও অন্যান্য খাবার এবং শিশু খাদ্য কেনার জন্য ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে এর তীরবর্তী অঞ্চল জামালপুরের চারটি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে ২২ হাজার পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়াও কয়েক দিনে অবিরাম ভারী বর্ষণে উজার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে জামালপুরের ইসলামপুরে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। ফলে গত কয়েকদিনে যমুনা নদী ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তিন শতাধিক বাড়ি ঘর। এছাড়াও ভাঙনের মুখে পড়েছে ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ব্রহ্মপুত্র নদের পর এবার ধরলা ও দুধকুমার নদের পানিও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন তিন লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া ২০ টি স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। দুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্লাবিত হয়েছে। পাঠদান ও পরীক্ষা সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। ছয়টি কলেজও প্লাবিত হয়েছে।
শেরপুর সদর উপজেলার গাজীরখামার ও নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের কমপক্ষে ৪০টি গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ফলে হাজারও মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৫২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাটেরই পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলসহ লোকালয়ে পানি প্রবেশ শুরু হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে হাজার হাজার পরিবার।
সিলেটের জকিগঞ্জে ৪টি বাঁধ ভেঙে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। পাহাড়ি ঢল আর অতিবৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বেশ কয়েক জায়গায় বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে সিলেটের প্রায় ২৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
(সুরমামেইল/এফএ)
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি