বাংলাদেশ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০১৫

বাংলাদেশ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
Hasina 2
সুরমা মেইলঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের অস্বিত্ব রয়েছে-এটা অনেকেই আমাদের মুখ দিয়ে বলিয়ে নিতে চায়। আর যদি তারা এটা করিয়ে নিতে পারে তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কী হবে তা অনুধাবন করার জন্য আমি সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। আর এই ষড়যন্ত্রে আমাদের দেশের মানুষও জড়িত।

নেদারল্যান্ডস সফর দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান প্রধানমন্ত্রী। এতে দেশি-বিদেশি বিপুলসংখ্যক সাংবাদিক যোগ দেন। লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী তার নেদারল্যান্ডস সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন। এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ প্রধনমন্ত্রীর উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যা্চ্ছে ঠিক তখন এই ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে আজ সচেতন হতে হবে। বাংলাদেশে আইএস আছে, জঙ্গি আছে- এসব তো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রী গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাইলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দিয়ে জোর করে বলানোর চেষ্টা হচ্ছে যে, এদেশে আইএস আছে, আইএস আছে। আর আমরা যদি এটা একবার বলি তাহলে পরিস্থিতি কী হতে পারে তা ভেবে দেখার আহ্বান জানাই সবাইকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে এসব করা হচ্ছে। তা আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে, অনুধাবন করতে হবে।

দেশে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব দেশেই হত্যাকাণ্ড ঘটছে। তবে আমাদের দেশে যেভাবে এসব নিয়ে শোরগোল হচ্ছে ওইসব উন্নত দেশেতো এতো শোরগোল হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী ঘাতকদের ধরিয়ে দিতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান। তার মতে, আমাদের দেশে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটছে তা পরিকল্পিত, এটা ঠিক। তবে এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনাই বলতে হবে।

দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিরাপত্তা নিয়ে যতটুকু করা সম্ভব তা করে যাচ্ছি। লেখালেখি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোনো লেখালেখি যেন আমরা না করি। সব ধর্মের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ করতে হবে। অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া চলবে না। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এটাই ধর্মনিরপেক্ষতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সকালে কোরআন তেলাওয়াত করে দিনের কাজ শুরু করি। কেউ যদি কোনো ধর্মে বিশ্বাস না করেন সেটা তার ব্যাপার। তাই বলে আরেকজনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া চলবে না।

প্রধানমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্যে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বিভিন্ন দিকে বাংলাদেশের মিল তুলে ধরেন। এছাড়া তিন দিনের সফরে সেখানকার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আহবান জানানো এবং বাংলাদেশে সে দেশের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে আগ্রহের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিন দিনের সফর শেষে গত শুক্রবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের আমন্ত্রণে গত ৩ নভেম্বর এই সফরে গিয়েছিলেন তিনি।

সফরে ইউরোপের দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের চারটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি সইয়ের আগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। অন্যপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com