সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: নিজের বাড়ি তৈরির জন্য মাটি খুঁড়ছিলেন। ভাবতেও পারেননি মাটির নীচে এমন ‘আশ্চর্য’ লুকিয়ে থাকতে পারে। ৫৩ বছর আগে ১,০০০ বছরের পুরনো এই ভূগর্ভস্থ শহর খুঁজে পেয়েছিলেন তুরস্কের এক বাসিন্দা। তারপর থেকেই মাটির তলার এই বিস্ময় আলাদা জায়গা করে নেয় পৃথিবীর পর্যটন মানচিত্রে। কেমন সে শহর? কী কী আছে সেই শহরের অন্দরমহলে? চলুন ছোট্ট সফরে ঘুরে আসা যাক।
তুরস্কের সেন্ট্রাল অ্যানাটোলিয়ার ক্যাপাডোসিয়া অঞ্চল। মাটির নীচের এই গুপ্ত শহর খুঁজে পাওয়ার আগে থেকেই এই অঞ্চলের প্রকৃতিক গঠন, পাথরের অদ্ভূত বিন্যাস এবং ঐতিহাসিক সম্পদ আকর্ষণ করত পর্যটকদের।
কিন্তু ১৯৬৩ সালে এই শহরের আবিষ্কারের পর এই জায়গার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ। তুরস্কের কাপাডোসিয়া অঞ্চলে মাটির নীচ থেকে পাওয়া গিয়েছিল এই বিশাল শহর। নিজের বাড়ির বেসমেন্ট খুঁড়তে গিয়েই এই শহরের খোঁজ পেয়েছিলেন তুরস্কের ওই জনৈক ভদ্রলোক।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটাই নাকি এখনও পর্যন্ত মাটির তলা থেকে আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় শহর। বর্তমানে দেরিনকুয়ু তুরস্কের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই প্রাচীন শহরের নাম দেরিনকুয়ু। শহরটিতে ১৮টি স্তর রয়েছে। মাটির ২০০ ফুট গভীরে রয়েছে এই শহরটি। কিন্তু কেন মাটির নীচে তৈরি করা হয়েছিল এই শহর?
তুরস্কের সংস্কৃতি বিভাগ জানাচ্ছে, সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে বাইজেন্টাইন যুগে তৈরি হয়েছিল এই শহর।নরম আগ্নেয় শিলা দিয়ে এই শহর তৈরি করেছিলেন ফ্রিজিয়ানরা।
সম্পূর্ণ আধুনিক ব্যবস্থা সম্পন্ন এই শহরে ছিল আলাদা আলাদা রান্নাঘর, ভাঁড়ার ঘর, আস্তাবল, চার্চ, কমিউনিটি হল, স্কুল, সমাধিস্থল, কুয়ো, প্রার্থনা কক্ষ, এমনকী অন্য শহরে যাওয়ার আলাদা সুড়ঙ্গও।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ৭৮০ থেকে ১১৮০ খ্রীস্টাব্দে আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধের সময় আরবিদের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্যই তৈরি হয়েছিল এই শহর। একসঙ্গে ২০,০০০ মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে এই শহরে। পাশাপাশি শহরটিতে রয়েছে একাধিক টানেল। সুড়ঙ্গগুলো গ্রিক স্থাপত্যরীতিতে তৈরি। অনেকগুলো আর্চ ও চ্যাপেল রয়েছে টানেলগুলোতে।
নেভসেহির প্রদেশে দেরিনকুয়ু শহরের পাশে প্রায় ২০০টি ভূগর্ভস্থ শহর ছিল। আর এই শহরের সুড়ঙ্গগুলো মাটির তলা দিয়েই যুক্ত থাকত অন্য শহরের সঙ্গে। ৮ কিলোমিটার দূরের কেমাকলি শহরের সঙ্গে যোগ ছিল দেরিনকুয়ু শহরের। চতুর্দশ শতক পর্যন্ত মঙ্গোলিয়ানদের হাত থেকে বাঁচতে খ্রীস্টানরা এই শহর ব্যবহার করত বলে জানা গিয়েছে।
বিভিন্ন দিক থেকে প্রায় ৬০০টি প্রবেশপথ রয়েছে শহরটিতে। দোতলাটিতে রয়েছে খিলান দেওয়া বড় ঘর। এগুলি স্কুল হিসাবে ব্যবহৃত হত। তৃতীয় এবং চতুর্থ স্তরে রয়েছে লম্বা সিঁড়ি। এই সিঁড়ি আসলে পাঁচ তলার চার্চে যাওয়ার পথ। ভারী পাথরের দরজা রয়েছে প্রতিটি প্রবেশপথে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি তলায় আলাদা আলাদা সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। একটি ৫৫ মিটার গভীর কুয়ো রয়েছে এখানে। যা এই শহরের বাসিন্দাদের জল সরবরাহ করত।
মনে করা হয়, কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল শহরটি। তবে দৈনন্দিন ব্যবহার বন্ধ হলেও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়নি দেরিনকুয়ু। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কাপাডোসিয়ান গ্রিকরা (অভিবাসী দল) আশ্রয় নিয়েছিল এই শহরে। তবে
১৯২৩ সালের পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়েছিল এই শহর। ১৯৬৩-তে তা পুনরায় আবিষ্কৃত হয়।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি