বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার নবীগঞ্জের তরুণী

প্রকাশিত: ৯:৪৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫

বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার নবীগঞ্জের তরুণী

ছবি : প্রতীকী


এম,এ আহমদ আজাদ :
বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাড়ি ফিরছিলেন ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী। অটোরিকশা করে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। তাঁকে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। তাঁর সঙ্গে থাকা অপর এক তরুণীকেও লাঞ্ছিত ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।

 

গত ১৫ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ঘটনাটি ঘটে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এ ঘটনায় চুনারুঘাট থানায় একটি মামলা হয়েছে।

 

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পারভেজ মিয়া (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী জেলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

 

পুলিশ ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দুই তরুণী ঢাকায় একটি বাসায় পরিচারিকার কাজ করেন। সম্পর্কে তাঁরা একে অপরের চাচাতো বোন। একজনের বয়স ১৮, অপরজনের ১৭। যাঁর বয়স ১৮ তাঁর সম্প্রতি বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে উপলক্ষে দুই তরুণী গত বুধবার ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত ১১টার দিকে তাঁরা একটি যাত্রীবাহী বাসে করে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এসে পৌঁছান।

 

পরে তাঁরা নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত তাঁদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি অটোরিকশা ভাড়া করেন। শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ এলাকা পাড়ি দিয়েই চালক অটোরিকশার গতি কমিয়ে তিনজন যুবককে অটোরিকশায় তুলা হয়।

 

এ সময় তরুণীরা চালকের কাছে জানতে চান তাঁদের ভাড়া করা অটোরিকশায় কেন অতিরিক্ত লোকজন ওঠানো হলো। তখন চালক বলেন, ওরা সামনে গিয়ে নেমে যাবে। এ কথা বলে কিছুক্ষণ পরে অটোরিকশার চালক ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে থেকে নেমে অন্য রাস্তায় প্রবেশ করে। অটোরিকশাটি কোন পথে যাচ্ছে, তা আঁচ করতে পারেননি দুই তরুণী। একপর্যায়ে চালক চুনারুঘাট উপজেলার একটি স্থানে গিয়ে অটোরিকশাটি থামিয়ে দেন।

 

তরুণীরা কিছু বোঝার আগেই চালক ও সঙ্গে থাকা অপর তিনজন ১৮ বছরের তরুণীকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। সঙ্গে থাকা ১৭ বছরের অপর তরুণীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই তরুণী চিৎকার করে দৌড়ে পালাতে থাকলে ধর্ষকারীরা ভয়ে নিজেরাও ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরেই ধর্ষণ থেকে রক্ষা পাওয়া ওই তরুণী পুনরায় ঘটনাস্থলে এসে তাঁর চাচাতো বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে দুই তরুণী ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থিত গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন।

 

তাঁরা মধ্যরাতে গ্রামবাসীদের কাছে তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়টি জানালে দল বেঁধে লোকজন ঘটনাস্থলে এসে কাউকে পাননি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা তাঁদের বাড়ি পৌঁছান। বাড়িতে গিয়ে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের জানালে মানসম্মানের ভয়ে দুই দিন তাঁরা নীরব থাকেন।

 

পরে ধর্ষিতা তরুণীর চাপে তাঁর মা বাদী হয়ে শনিবার চুনারুঘাট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। এ মামলায় অটোরিকশার চালকসহ চারজনকে আসামি করা হয়।

 

মামলার বাদী ও ধর্ষিতা তরুণীর মা বলেন, তাঁর মেয়ের বিয়ের দিন–তারিখ ঠিক হয়েছিল। তাঁর মেয়ে ঢাকায় একটি বাসায় পরিচারিকার কাজ করে ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন। সেই টাকা সঙ্গে করে নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে এ ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় তাঁদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে।

 

চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর আলম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অটোরিকশাচালককে শনাক্ত করা গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় চারজনের নামে মামলা করেছেন ধর্ষিতার মা। এ মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে পারভেজ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষিতা তরুণী চিকিৎসাধীন।

 

(সুরমামেইল/এফএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com