বেতন কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশকারীদের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৫:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫

বেতন কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশকারীদের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী

সুরমা মেইলঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বেতন কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশকারীদের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ ১০১ ভাগের মতো বেতন বাড়িয়েছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সরকার তা দিতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত বেতন বাড়ানোর পরও কেউ কেউ অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাহলে এর সমাধানের পথ কী? বেতন কমিশন বন্ধ করে দেওয়া? অথবা বেতন বৃদ্ধি অর্ধেকে নামিয়ে আনা? তিনি বলেন, প্রতিবছর নির্দিষ্ট হারে বেতন বাড়বে। এখানে কারও কোনো ক্ষতি হবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ভ্যাট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দিতে হবে না, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেবে। তারা ইতিমধ্যেই স্বীকার করে নিয়েছে যে এটা তারা দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনেক শর্ত আছে। ধানমন্ডি, গুলশানে একটা ভবনে তিনটা বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের বেতনের সুনির্দিষ্ট হিসাব-নিকাশ নেই।
প্রধানমন্ত্রী সরকারের মেয়াদের আগামী তিন বছর সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য সাংসদসহ জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যা করি, সততার সঙ্গে করি। সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করি বলেই বিশ্বব্যাংক নিয়ে কথা বলি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছি।’ তিনি সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, সরকারের আর তিন বছর বাকি আছে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন। উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত শেষ করেন।
শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্যের জবাবে বলেন, ‘দেশে পাঁচ কোটি বেকার, এটা ঠিক নয়। আমরা এক কোটি লোকের চাকরি দিয়েছি। কর্মসংস্থানের যথেষ্ট সংস্থান করা হয়েছে।’ ময়মনসিংহ বিভাগ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুটি জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের সঙ্গে যেতে চায় না। এখন চারটি জেলা নিয়েই বিভাগ হবে।
বিরোধীদলীয় নেতার বক্তব্য খণ্ডন করে শেখ হাসিনা বলেন, বন্যায় আক্রান্ত সব কটি জেলায় ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আশ্রয়ণকেন্দ্রে কেউ আসতে চায় না। আর নারী নির্যাতন ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ধানমন্ডি ও গুলশানের লেক ভরাট করে বাড়িঘর করা হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এটা করেছেন বিরোধীদলীয় নেতার স্বামী। কারণ, তিনি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিলেন। তা ছাড়া জিয়া ও খালেদা জিয়ার সময়ও লেক ভরাট করা হয়েছে। আমরা মাঝখানে ভরাট ঠেকাতে চেষ্টা করেছি।’
জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দল সংসদে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে। এখন খিস্তিখেউড় নেই। এটা সত্যিকারের সংসদীয় গণতন্ত্র। তিনি বলেন, যাঁরা বিরোধী দল নেই বলেন, তাঁদের হয়তো পরচর্চা, গালাগাল শুনতে ভালো লাগে। এটা না শুনলে মনে হয় তাঁদের মন ভরে না।
এর আগে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমরা সহযোগিতায় বিরোধী দল নই। আমরা জনগণের সহযোগিতা করি। আমরা বাজেট পাসের সময় সংসদে থাকি, যা আগে কখনো হয়নি। আমরা প্রত্যেক নির্বাচনে অংশ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আগে সংসদে স্বাধীনতার ঘোষক কে, তা নিয়ে দিনের পর দিন বিতর্ক হয়েছে। এখন সেই বিতর্ক নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কথা আমি আগে সংসদে বলেছি।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সংসদের সপ্তম অধিবেশন সমাপ্তি-সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির ভাষণ পড়ে শোনান।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com