ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারকে খরচ কমানোর পরামর্শ বিএনপির

প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫

ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারকে খরচ কমানোর পরামর্শ বিএনপির

সুরমামেইল ডেস্ক :
ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থায় কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ভ্যাট বাড়িয়ে খরচ মেটানোর চেষ্টা করছে বলে মনে করে বিএনপি। বর্তমান পরিস্থিতিতে খরচ কমানো এবং বিকল্প আয়ের উৎস খোঁজার প্রতি সরকারকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দলটি।

 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) গুলশানে দলের চেয়ারপাসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ পরামর্শ দেন।

 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসীবাদের পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতের মতো আর্থিক খাতেও বিশৃঙ্খলা ও ভঙ্গুর অবস্থা পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো সৃষ্টি করেছে। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ জনগণের জীবনের ওপর প্রভাব নিয়ে বিএনপি উদ্বিগ্ন।’

 

আওয়ামী লীগ শাসনামলে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ভঙ্গুর অবস্থায় ভ্যাটের হার তথা কর বাড়িয়ে সহজ পথে হেঁটে সরকার খরচ মেটানোর চেষ্টা করলে তা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে না।’

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারকে প্রথম নজর দিতে হবে খরচ কমানোর দিকে। উন্নয়ন বাজেট পুনর্বিবেচনা করে অপ্রয়োজনীয় ও আর্থিকভাবে অযৌক্তিক প্রকল্পগুলো বাদ দিলে প্রায় ২০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব। এতে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে।’

 

তিনি বলেন, ‘পরিচালন ব্যয়ের ক্ষেত্রে সরকার যদি স্থানীয় সরকারের বাজেট এবং ভর্তুকি খাতে খরচ কমায় এবং সার্বিকভাবে পরিচালন ব্যয় ১০ শতাংশ কমাতে পারে, তাহলে ন্যূনতম ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব। তাছাড়া স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া ঋণের বাজেট কমিয়ে সাময়িকভাবে ব্যয় সাশ্রয় করতে পারে। অপ্রয়োজনীয় ও দুর্নীতিগ্রস্ত মেগা প্রজেক্টের বিপরীতে বরাদ্দ অর্থ আপাতত বন্ধ রেখে এবং ক্যাপাসিটি চার্জের হরিলুট বন্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব।’

 

খরচ কমানোর পাশাপাশি সরকারকে নতুন উৎস ও উপায় খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভ্যাটের হার না বাড়িয়ে বরং ভ্যাটের আওতা বাড়ানো যেতে পারে। দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সম্পদ, যা জব্দ করা হয়েছে বা একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে, আইনানুগ উপায়ে সেই অর্থ ব্যবহার করা হতে পারে একটি কার্যকর পদক্ষেপ। যেসব সরকারি সেক্টরে অব্যবহৃত ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ রয়েছে, তা চিহ্নিত করে ওই সব অর্থের যথাযথ আইনানুগ ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে।’

 

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে কালো টাকা উদ্ধারের জোরালো চেষ্টা করা, ব্যাংকের লুণ্ঠিত টাকা এবং নন-পারফরম্যান্স লোনের টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। দাতা দেশ ও দাতা সংস্থাগুলো ঘোষিত অনুদান বা ঋণের অর্থ ছাড় করানোর ক্ষেত্রে সরকারকে আরও সক্রিয় হতে হবে। সরকারের উচিত, ঋণ খেলাপি অলিগার্কদের অপরিশোধিত ঋণ পরিশোধে এবং বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে বাধ্য করা।’

 

তিনি আরও পরামর্শ দেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কর অব্যাহতি পাওয়া ও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। বর্তমান ভ্যাট ও রাজস্ব প্রশাসনে অব্যবস্থাপনা, অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রাজস্ব প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত এবং কৃষি খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

 

(সুরমামেইল/এফএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com