সিলেট ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেত্রকোণার মো. ওবায়দুল হক ওরফে আবু তাহের এবং আতাউর রহমান ননীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।
এসব অভিযোগের মধ্যে চার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
নেত্রোকোণার মুক্তিযোদ্ধা আলী রেজা কাঞ্চন একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১০ সালে ননী ও তাহেরসহ ১২ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে আসে।
২০১৩ সালের ৬ জুন এ দুই আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে প্রসিকিউশনের তদন্ত সংস্থা। এক বছর চার মাস ২৮ দিন তদন্তের পরে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর ৬৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। গত বছরের ১২ আগস্ট ওই দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের আদেশের ভিত্তিতে নেত্রকোণা পুলিশ ওই দিনই তাদের গ্রেপ্তার করে। ১৩ আগস্ট তাহের ও ননীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্র্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ১৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। প্রসিকিউশন এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এরপর গতবছর ২ মার্চ এ মামলায় অভিযোগ গঠন হয়।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাহের ও ননী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন এবং পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করতে গঠিত রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোণা জেলা সদর ও বারহাট্টা থানাসহ বিভিন্ন এলাকায় মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তারা কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে পরিচিতি পান বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এদের মধ্যে তাহের স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে ননীসহ অন্যান্য রাজাকার সদস্যদের নিয়ে নেত্রকোনা শহরের মোক্তার পাড়ার বলয় বিশ্বাসের বাড়ি দখল করে রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন বলে প্রসিকিউশনের তথ্য।
ছয় অভিযোগ:-
প্রথম অভিযোগ: ১৯৭১ সালের ১৭ আগস্ট তাহের ও ননীর নেতৃত্বে রাজাকাররা নেত্রকোণার বারহাট্টা থানার বাউসী বাজার থেকে ফজলুল রহমান তালুকদারকে অপহরণ করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় নির্যাতনের পর ত্রিমোহনি ব্রিজে হত্যা করে। একই সঙ্গে ৪০০ থেকে ৪৫০টি দোকানের মালামাল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ: একাত্তরের ৪ অক্টোবর জেলার বারহাট্টা রোডের শ্রী শ্রী জিউর আঁখড়ার সামনে থেকে তাহের ও ননী কৃতী ফুটবলার দবির হোসেনকে অপহরণ করেন। পরে নির্যাতনের পর মোক্তারপাড়া ব্রিজে গুলি করে হত্যা করা হয় দবিরকে।
তৃতীয় অভিযোগ: তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর তাহের ও ননীর নেতৃত্বে বারহাট্টা থানার লাউফা গ্রাম থেকে মশরফ আলী তালুকদারসহ ১০ জনকে অপহরণ করে ঠাকুরাকোনা ব্রিজে নিয়ে সাত জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
চতুর্থ অভিযোগ: ননী ও তাহের মলয় বিশ্বাস ও অ্যাডভোকেট শীষ চন্দ্র সরকারের বাড়ি দখল করে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে পরিবারসহ তাদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য করেন
পঞ্চম অভিযোগ: একাত্তরের ১৫ নভেম্বর দুই আসামি রাজাকার সদস্যদের নিয়ে বিরামপুর বাজারে হামলা চালায় এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বদিউজ্জামান মুক্তাসহ ছয় জনকে অপহরণ করে নেত্রোকোণা ডাকবাংলোর ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন চালায়। পরে আটক সবাইকে খোলা জিপে নিয়ে পুরো শহর ঘোরানো হয় এবং রাতে মোক্তারপাড়া ব্রিজে নিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর আসামিরা উল্লাস করে।
ষষ্ঠ অভিযোগ: একাত্তরের অক্টোবরে আসামিরা নেত্রোকোণা শহর থেকে ১৫ জন হিন্দুকে ধরে ত্রিমোহিনী ব্রিজে নিয়ে যায়। সেখানে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি