সিলেট ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৮, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এদিকে এ রায় বহাল থাকার প্রতিবাদে বুধবার (৯ মার্চ) দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
এর আগে ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ৬ জনকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তবে মুক্তিযোদ্ধা রণজিৎ দাস ও টুন্টু সেনকে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে ধরে নিয়ে নির্যাতন শেষে হত্যার দায়ে মীর কাসেমকে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদন্ড দিলেও আপিল বিভাগ তা বাতিল করে দিয়েছে। এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগ ( একাত্তরের নভেম্বরে চট্টগ্রামের চাগতাই এলাকা থেকে লুৎফর ও সিরাজকে আটক করে নির্যাতন), ৩ নম্বর অভিযোগ (নভেম্বরে জাহাঙ্গীর আলমকে ধরে নিয়ে নির্যাতন) ৭ নম্বর অভিযোগ (ডবলমুরিং থানা থেকে সানাউল্লাহ চৌধুরী সহ ৩ জনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন), ৯ নম্বর অভিযোগ (২৯ নভেম্বর নুরুজ্জামান সহ ৭ জনকে অপহরণ ও নির্যাতন) ১০ নম্বর অভিযোগ (আসামির নির্দেশে জাকারিয়া সহ চারজনকে অপহরণ ও নির্যাতন) ও ১৪ নম্বর অভিযোগ (নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে আটক করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন এই সাত অভিযোগে মীর কাসেমকে দেয়া বিভিন্ন মেয়াদে যে কারাদন্ড দিয়েছিল আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছে।
২ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর, ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর ও ৩,৭,৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছিল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২। তবে ৪ ও ৬ নম্বর অভিযোগে মীর কাসেমকে ৭ বছর দন্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। আপিল বিভাগ এই দুই অভিযোগ থেকে মীর কাসেমকে অব্যাহতি দিয়েছে আপিল বিভাগ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আলবদর কমান্ডার ও জামায়াতের শুরা সদস্য মীর কাসেম আলীকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মৃত্যুদন্ড দেয় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। রাষ্ট্রপক্ষের আনীত ১৪টি অভিযোগের মধ্যে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জন (১১ নম্বর অভিযোগ) এবং একাত্তরের শেষ দিকে একই স্থানে নির্যাতনের পর রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে হত্যার অভিযোগ (১২ নম্বর) দুটি প্রমাণিত হওয়ায় মীর কাসেমকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। ১১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধকালে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরদিন মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে আটক করে আলবদর সদস্যরা। ২৮ নভেম্বর মীর কাসেমের নির্দেশে আলবদররা তাকে দিনভর নির্যাতন করে। নির্মম অত্যাচারে জসিম মারা যান। পরে নিহত আরও পাঁচজনের সঙ্গে জসিমের মরদেহ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেয়া হয়। ১২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, একাত্তর সালের নভেম্বরের কোনো একদিন হাজারী লেনের বাসা থেকে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে আটক করে মীর কাসেমের নেতৃত্বাধীন আলবদর সদস্যরা। ওই সময় হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হাজারী লেনের ২৫০ থেকে ৩০০ ঘরে আগুন দেয়া হয়। পরে জাহাঙ্গীর আলমকে আলবদররা ছেড়ে দিলেও রঞ্জিত ও টুন্টুকে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতন ও পরে হত্যা করা হয়।
এছাড়া আরো আটটি (২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০ ও ১৪ নম্বর) অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মীর কাসেমকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ছয়টি অভিযোগে সাত বছর করে, একটি অভিযোগে ২০ বছর ও অপর অভিযোগে ১০ বছর কারাদন্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। চারটি অভিযোগ (১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর) প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ ব্যর্থ হওয়ায় সেসব অভিযোগ থেকে মীর কাসেমকে বেকসুর খালাস দেয় ট্রাইব্যুনাল।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি