চীনা রসুনের সঙ্গে দাম বেড়েছে দেশি রসুনেরও। কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে দাম উঠেছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ার কারণ চীনা রসুনের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে এটা স্থায়ী হবে না, শিগগিরই দাম কমে যাবে।
রান্নার প্রাথমিক মসলাগুলোর একটি রসুন। পণ্যটির চাহিদার সিংহভাগ দেশেই উৎপাদিত হয়। গত কয়েক বছরে চীন থেকে আমদানি করা বড় আকারের রসুন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ঢাকার বাজারে ওই রসুন কয়েক মাস ধরে কেজিপ্রতি ১৮০ টাকার কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছিল।
কারওয়ান বাজারের মসলাজাতীয় পণ্যের খুচরা বিক্রেতা আবদুল জব্বার গতকাল ভালো মানের চীনা রসুন প্রতি কেজি ২৭০ টাকা চেয়েছেন। তিনি দাবি করেন, কয়েক দিন আগেও একই মানের রসুন তিনি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি করেছেন।
কারওয়ান বাজারের মসলার আড়তের ২৭ নম্বর দোকানের বিক্রেতা মো. শাহিন চীনা রসুন ২৫০ টাকা ও দেশি রসুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন। অবশ্য এ দর পাইকারি ক্রেতাদের জন্য। তিনি বলেন, বাজারে চীনা রসুনের সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সরবরাহ বাড়লেই আবার দাম কমে যাবে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক বছর আগের তুলনায় এখন চীনা রসুনের দাম প্রায় ১৬৭ শতাংশ বেশি। চীনা রসুনের দাম শনিবার কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংস্থাটির বাজার দরের তালিকায়।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভার কার্যপত্রে বলা হয়, দেশে বছরে ৫ লাখ টন রসুনের চাহিদা আছে। এর সিংহভাগই দেশে উৎপাদিত হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রসুন উৎপাদিত হয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টন। গত নয় মাসে আমদানি হয়েছে ৩৮ হাজার টন রসুন।
কৃষিপণ্যের আমদানিকারক রতন সাহা বলেন, মাসখানেক পরে চীনে নতুন মৌসুমের রসুন বাজারে আসতে শুরু করবে। তখন দাম কমে যাবে। এ কারণে এখন কেউ আমদানি করতে চাইছে না।
এখন যেসব চীনা রসুন বাজারে আছে সেগুলোর আমদানি খরচ কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা পড়েছে উল্লেখ করে রতন সাহা বলেন, ‘চীনা রসুন খেতে হবে কেন? আমাদের দেশি রসুন বাজারে আছে। সেগুলোর দাম অনেক কম। মানুষ দেশি রসুন খেলেই আমদানি করা রসুনের ওপর চাপ কমবে।’
রাজধানীর বাজারে দেশি এক গোটার রসুনও বিক্রি হয়। সেটার দাম আরও বেশি। বাছাই করা এক গোটার রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা দরে। এদিকে হলুদ ও মরিচের দামও বেড়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। অন্যদিকে ২০ টাকা বেড়ে মানভেদে শুকনা মরিচ ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আবু হুরায়রা।
আদার দাম কমেছে। প্রতি কেজি চীনা আদা ৬০ টাকা ও দেশি আদা ৮০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা, যা আগে কেজিতে ২০ টাকা বেশি ছিল। পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত আছে। কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।