রিজার্ভ চুরি : দুই দেশে তদন্তে বাংলাদেশের পুলিশ

প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০১৬

রিজার্ভ চুরি : দুই দেশে তদন্তে বাংলাদেশের পুলিশ

qam5amw62016030717191920160403143409

সুরমা মেইল নিউজ : ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা চুরির ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। ইন্টারপুলের মাধ্যমে দুই দেশের পুলিশ এবং ব্যাংকের সহায়তা নিয়ে এ তদন্ত কাজ করছে পুলিশের তদন্ত দল। ফিলিপাইনে তদন্ত করতে ইতোমধ্যে সেখানে রওয়ানা হয়েছেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল।

মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে তারা ঢাকা ত্যাগ করেন। এদিকে, বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে আরেকটি দল শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলা দায়েরের পর ১৬ মার্চ থেকে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করছেন সিআইডির তদন্তকারী দল। তারা বেশ কয়েকটি কম্পিউটারের ডাটা সংগ্রহ করেন। তদন্তকারীরা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। সব মিলে প্রায় ১২ টেরাবাইট ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করে কিছু তথ্য এবং আলামত নিয়েই বিদেশে গেছে তদন্তদল। তারা মূলত দুই দেশের পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যাবেন। সেখানে লেনদেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবেন তারা। প্রয়োজনে আলামত সংগ্রহ করবেন। পুলিশের তদন্তকারী দল অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে কোনো কাজ করবেন না। তারা মূলত অর্থ লেনদেন কীভাবে হয়েছে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত, তাই-ই খতিয়ে দেখবেন।

‘সুইফট মেসেজ হ্যাকিংয়ের’ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে মোট ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয় গত ফেব্রুয়ারির ৪ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার শ্রীলঙ্কায় শালিকা ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা হয়। চুরি যাওয়া বাকি আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের চারটি হিসাবে জমা হয়ে যায়। সেখান থেকে এই অর্থের বড় একটি অংশ পাচার হয়।

এই পাচারের বিষয়ে দেশটির সিনেটের একটি দল তদন্ত করছে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ফিলিপাইনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইনকোয়েরারে এ ঘটনাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তা বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এতে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এরই জের ধরে গত ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

ওই দিনই মতিঝিল থানায় মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ফিলিপাইনে সিনেটের শুনানিতে অংশ নিয়ে অর্থ চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যবসায়ী ও ক্যাসিনোর পরিচালক কিম ওয়ং পাচারের কিছু অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা বলেন। মঙ্গলবার ৯৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিম ওয়ং। এ অর্থ ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে ফেরত দেবেন তিনি। এর আগেও তিনি আট লাখ ৩০ হাজার ডলার ফেরত দিয়েছেন।

আইনজীবী ভিক্টর ফার্নান্দেজের মাধ্যমে সোমবার ওয়ং ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) কাছে এ অর্থ ফেরত দেন। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কায় পাচার হওয়া অর্থ ইতোমধ্যে ফেরত আনা হয়েছে বলে দাবি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com