সিলেট ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:১০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এরপর এক বছর যেতে না যেতেই আবারও কিছু সচিবকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া শুরু হয়। ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মনঞ্জুরুল ইসলাম এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপারের অবসর উত্তর ছুটি বাতিল করে তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপারের চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। গত ১ আগস্ট তার চাকরির মেয়াদ শেষ হয়।
মরিশাসের হাইকমিশনার (সচিব) মো. আব্দুল মান্নান হাওলাদারকেও তার অবসর-উত্তর ছুটি বাতিলক্রমে আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য মরিশাসের হাইকমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরও কিছু সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। এ নিয়ে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হওয়ার কথা উল্লেখ করে একটি গোয়েন্দা রির্পোট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেয়ার পর সরকার সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া থেকে দূরে সরে আসে।
এ নিয়ে গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে পদোন্নতি প্রক্রিয়া ও রদবদল নিয়ে কথা বলেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
এর পর জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী পদোন্নতি প্রক্রিয়া ও বিভিন্ন ক্যাডার এবং ব্যাচের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মধ্যপর্যায়ের এক কর্মকর্তা জানান।
এদিকে প্রশাসনে সচিব পদে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ফাঁকা হয়েছে।গুলো হচ্ছে- ভূমি সচিব, পিএসসি সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার পদ।
এসব পদে আসার জন্য ডজন খানেক
সিনিয়র কর্মকর্তা তদবির শুরু করেছেন। এছাড়া আগামী ৩০ নভেম্বর শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম খান অবসরে যাচ্ছেন। তার স্থলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ভূমি সচিব পদে খাদ্য সচিবকে দেয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
আজ-কালের মধ্যেই ভূমি সচিবের শূন্য পদে এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সচিবের শূন্য পদে ও যুব ও ক্রীড়া সচিব শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভূমি সচিব হিসেবে ’৮২ ব্যাচের একজন সিনিয়র সচিবকে এবং পিএসসি’র সচিব পদে ’৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া যেকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে রদবদল হচ্ছে তাদের মধ্যে বস্ত্র ও পাট সচিব ফরিদ আহমেদ চৌধুরী কথা শোনা যাচ্ছে। তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। সচিব মর্যাদার বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর সোহরাব হোসাইনকে সচিবালয়ে কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা, ও চট্টগ্রামে বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যাহার করে সেখানে নতুন বিভাগীয় কমিশনার দেয়া হচ্ছে।এছাড়া নবগঠিত বিভাগ ময়মনসিংহে নতুন বিভাগীয় কমিশনার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার জেলা প্রশাসক পদে রদবদল আসছে বলে জল্পনা রয়েছে। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) মহিবুল হকের। সেক্ষেত্রে যুগ্ম-সচিব (এপিডি) হিসেবে নিয়োগ পাবেন ’৮৬ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের এক কর্মকর্তা।
অপরদিকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কমিয়ে আনতে চাপ প্রয়োগ করছে ’৮৪, ’৮৫ ও ’৮৬ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।ইতোমধ্যে ব্যাচভিত্তিক কর্মকর্তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের কাছে তাদের মনোভাব জানিয়েছেন। তাদের দাবি, প্রশাসনে সচিব পর্যায়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিলে ৬ ধাপে পদোন্নতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৬ এপ্রিল প্রশাসন ক্যাডারের ৮৭৩ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয় সরকার। এটা ছিল বর্তমান সরকারের আমলে সবচেয়ে বড়সংখ্যক পদোন্নতি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা চাই না পলিটিক্যাল ব্যুরোক্র্যাট তৈরি হোক। জনপ্রশাসন স্বাভাবিক গতিতে চলবে-এটাই সবার চাওয়া। শক্তিশালী রাজনৈতিক সরকারের জন্য স্ট্রং ব্যুরোক্র্যাসি অপরিহার্য।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি