সিলেটের কো.গঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক নয় মরণফাঁদ

প্রকাশিত: ৪:২৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০১৬

সিলেটের কো.গঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক নয় মরণফাঁদ

678-2
সুরমা মেইল নিউজ : সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক নয় মরণফাঁদে পরিনীত হয়েছে এ সড়কের সংস্কারের দাবিতে আবারো ফুঁসে উঠছেন স্থানীয় জনতা। শুষ্ক মৌসুমে যাত্রীরা কোনভাবে চলাচল করলেও বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় নরক যন্ত্রনায় পড়েছেন।

দীর্ঘদিন স্মারকলিপিসহ বিভিন্নভাবে সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসার পরও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় মানুষ রাস্তায় নেমে আসা ছাড়া আর কোন গতি না পাচ্ছেন না। যে কারণে বেশ কয়েকটি পরিবহণ সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সামাজিক অনেক সংগঠন আবারো অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘটসহ নানা আন্দোলনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাস্তা না ছাড়ারও হুমকি দিয়েছে।

২০১৪ সালের সর্বশেষ একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিলেট ভোলাড়ঞ্জ সড়ক সংস্কার ও জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষে ৪৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেন। গত জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কোম্পানীগঞ্জ ভোলাগঞ্জ সড়কের উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন। চরম দুর্ভোগে পোহাতে থাকা মানুষ আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু সময় গড়িয়ে গেলেও সড়ক সংস্কারে কোন অগ্রগতি জনসাধারণের চোখে পরিলক্ষিত হয়নি।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল সিলেট-ভোলাগঞ্জ জাতীয় মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ। ইতিমধ্যে রাস্তাটির কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং দরপত্র গুলো যাচাই-বাছাই চলছে। নির্মাণ কাজ শুরুর জন্য বাকি সব কাজ গুছিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই মাস আগে কোম্পানিগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে ভূক্তভোগী জনসাধারনের প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর-কোম্পানীঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ। সে আশ্বাসেরও কোন মিল পাওয়া যায়নি।

গত বছরের ১৫ মে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা পরিদর্শনে এসে যোগাযোগ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রাস্তাটির অবস্থা দেখে বলেছিলেন, ‘এই সড়ক ক্যান্সারে আক্রান্ত’। ডিসেম্বরের মধ্যে রাস্তাটির কাজ শুরু হবে বলে তিনি বিক্ষুব্ধ জনগনকে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু ঘোষনা মত কাজ শুরু করতে ঠিকাদার নিয়োগ বা অত্র কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন কার্যক্রম জন সাধারণের চোখে না পড়ায় যাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ এবং ব্যবসা-বানিজ্যে ধস নামায় সাধারণ মানুষ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।

যোগাযোগ ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রীর কথা মত ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসেই মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু, জানুয়ারী গিয়ে এপ্রিল চলে আসলেও কাজ শুরুর কোন লক্ষণ দেখা যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি ২০১৬ সালেও সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না?

গত ৩ এপ্রিল আম্বরখানাস্থ একটি হোটেলে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়ক সংস্কারের দাবিতে এক যৌথ সভায় ৬ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরণের পরিবহন ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়। তার আগে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সিলেট শহরতলির ধোপাগুল পয়েন্ট সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। ৬/৭ তারিখ অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহণ ধর্মঘট, ৮ এপ্রিল থেকে বিমানবন্দর রোড অবরোধ এবং সওজ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ও গ্রহণ করা হয়েছে।

কর্মসূচিতে সিলেট জেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, জেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক গ্রুপ, মজুমদারি-সালুটিকর কোম্পানীঞ্জ-গোয়াইনঘাট বাস মালিক সমিতি, আম্বরখানা-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন ৭০৭, ধোপাগুল পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমবায় সমিতি, সালুটিকর পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমবায় সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন যৌথভাবে এ ধর্মঘটে অংশ নেবে। এছাড়া জনগনের এ দাবির সাথে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমদও একাত্মতা পোষণ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান- সিলেট সদরের ধোপাগুল-ছালিয়া, গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর বাজার টু পিয়াইনগুল এবং কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ মাত্র ৩২ কিলোমিটার রাস্তার কারনে তিন উপজেলার জনসাধারণের পিট দেয়ালে ঠেকার মত অবস্থা দাঁড়িয়েছে। গোঠা সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। রাস্তার পিচ একেবারে উঠে গেছে। সড়কটির জীর্ণ দশার কারণে ভোলাগঞ্জ ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি থেকে পাথর পরিবহন তো দূরের কথা-যাত্রী পরিবহন ঝুঁকির্পূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com