সিলেট ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০১৭
মানুষের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে গড়ে ওঠেছে ক্লিনিকগুলোর গলাকাটা বাণিজ্য। সিলেট নগরীতে চিকিৎসা সেবার নামে চলছে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম। মানব সেবার ব্রত নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় আর ভূয়া চিকিৎসার চড়াচড়ি চালিয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট ক্লিনিক। এইসব ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।
মানুষ ভালো চিকিৎসার আসায় বুক বেঁধে ভর্তি হয় প্রাইভেট ক্লিনিকে। কিন্তু এসব ক্লিনিকে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ঘটে বিপত্তি। নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ক্লিনিকগুলো বাইরের চিকিৎসকদের সিডিউলের উপর নির্ভর করতে হয়। অতিরিক্ত টাকা আদায় আর ভূল চিকিৎসার ও অবহেলার চড়াচড়ি চলে এসেছে এসব প্রতিষ্টানে দীর্ঘদিন থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নজরদারী করার কথা থাকলেও কার্য ক্ষেত্রে কোনো কার্যক্রম নেই সরকারী স্বাস্থ্য বিভাগের। তাদের কার্যক্রম না থাকার পিছনে রহস্য জনক ভুমিকা রয়েছে।
সিলেট নগরীতে অসংখ্য প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে। প্রায়-প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে এসব ক্লিনিকে অসংখ্য রোগি আসছে। এদের মাঝ থেকে অনেকেই সরকারী হাসপাতালে না গিয়ে বাধ্য হয়েই প্রাইভেট ক্লিনিকের আশ্রয় নেয় সু-চিকিৎসার আসয়।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট নগরীতে অবস্থিত অধিকাংশ ক্লিনিকের মালিকরা হচ্ছেন ডাক্তার। যারা বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালগুলোতে চাকুরীরত আছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক জানান, এইসব চিকিৎসকরা তাদের বেশীর ভাগই ক্লিনিক ও ডায়াগষ্টিক সেন্টারের ব্যবসার সাথে জড়িত। এর কারণ সরকারী হাসপাতালে নামে মাত্র ডিউটি করেই ওরা চলে আসেন ক্লিনিকে। এধরণের অসংখ্য অভিযোগ সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
তিনি আরো জানান, শুধু সিলেট নগরী নয়, সারা সিলেট বিভাগের জেলা-উপজেলার সরকারী চিকিৎসকরা এসব ক্লিনিকের সাথে জড়িত।
এদিকে চিকিৎসার জন্য আসা বেশ ক’জন রোগির সাথে আলাপকালে তারা জানান, চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বারে আসলে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করার জন্য তাদের নিজস্ব বা কমিশন প্রাপ্ত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের টোকেন ধরিয়ে দেন, সেখান থেকে পরিক্ষা করিয়ে আনার জন্য। পরিক্ষায় রোগির অবস্থা বে-গতিক দেখলে সাথে সাথে তাদেরকে সরকারী হাসপাতালে না পাঠিয়ে তাদের নিজস্ব ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
প্রাইভেট ক্লিনিকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখালে ফি বাবত রোগির কাছ থেকে ২/৩ হাজার এমনকি কোনো কোনো সময় ৪/৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়। ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়া রোগির কয়েকজন স্বজন অভিযোগ করে বলেছেন, অনেক ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিল আদায় করতে গিয়ে রোগি এবং রোগির আত্মিয়-স্বজনদের নাজেহাল করেছেন। এধরণের অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে ক্লিনিকে।
রোগি সাধারণদের দাবী, বে-সরকারী ক্লিনিক পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারী মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার। এছাড়া বে-সরকারী ক্লিনিক পরিচালনায় সরকারী নীতিমালা প্রনয়ণ তথা বাস্তবায়নের দাবী তাদের।
তাদের আরো অভিযোগ, সরকারী ও বে-সরকারী মেডিক্যাল কলেজের এম.বি.বি.এস তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ইন্টার্নী শিক্ষার্থীদের দিয়েই চলছে প্রাইভেট ক্লিনিক।
সাম্প্রতিককালে সিলেট নগরীর সোবহানীঘাটে অবস্থিত ‘ইবনে সিনা হাসপাতালে’ একজন রোগি ডাক্তারদের অবহেলায় মৃত্যু বরণ করে। নর্থইষ্ট ও উইমেন্স মেডিক্যালেও এ ধরণের বহু ঘটনা ইতোপূর্বে ঘটেছে। যা শেষ পর্যন্ত মামলা মোকাদ্দমা পর্যন্ত গড়িয়েছে। এভাবে ডাক্তারদের ভূল রিপোর্টের কারণে প্রায়ই সিলেট নগরীসহ বিভাগের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ক্লিনিকগুলোতে রোগি সাধারণ মৃত্যু বরণ করেন।
কিন্তু এসব ঘটনার অনেক সংবাদ কিছু পত্রিকার পাতা কিংবা অনলাইন, ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ায় রহস্যজনক কারণে সংবাদ হিসেবে স্থান পায়না। স্থান না পাওয়ার কারণ, এর পিছনের ইতিহাস অনেক অনেক।
সাংবাদিক নামধারী কিছু মুরব্বিদের কারণে সত্য সংবাদ ধামাচাপা পড়ে আসল সংবাদ আলোর মূখ দেখেনা। অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিটি ক্ষেত্রে যাতে সংবাদটি প্রকাশিত না হয়।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি