সিলেট ৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪
ওসমানীনগর প্রতিনিধি :
সিলেটের ওসমানীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাইদের হাতে আনোয়ার হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছে। এ সময় হামলায় নারীসহ আরও আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এরমধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে উছমানপুর ইউনিয়নের বেতখাই গ্রামে অতর্কিত হামলার ঘটনাটি ঘটে।
নিহত আনোয়ার হোসেন বেতখাই গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই নুরুল হোসেন বাদি হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ১৪ জনকে আসামী করে শনিবার সন্ধ্যায় ওসমানীনগর থানায় একটি হত্যা (মামলা নং-৪) দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মামলার এজাহার নামীয় ৬ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামি বেতখাই গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে শাহিন মিয়া (৩০), একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সিরাজুল ইসলাম বাদশা (৫০), আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল কাদির (৫০), সিরাজুল ইসলাম বাদশার স্ত্রী সুলতানা বেগম (৩৩), আব্দুল গণি স্ত্রী আফিয়া বেগম (৪০) ও আব্দুল কাদিরের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৪৫)।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেনগংদের সাথে একই বাড়ির চাচাতো ভাই গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া ও শাহিন মিয়া গংদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার জিলু মিয়া তার মেয়ের কবর জিয়ারত করে প্রতিপক্ষের ঘরের সামন দিয়ে আসার সময় তাকে মারপিট করা হয়। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মিমাংসা করে দেয়ার জন্য আগামীকাল রোববার দিন তারিখ ধার্য করেন।
কিন্তু মিমাংসার পূর্বেই শনিবার সকাল ৮টায় জিলু মিয়া গংরা ঘুমে থাকাবস্থায় গণি মিয়া, বাদশা মিয়া, কাদির মিয়া, শাহিন মিয়া ও সুমন মিয়া গংরা রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জিলু মিয়া ও আনোয়ার হোসেন গংদের ঘরে হামলা চালায়। এসময় অনেকেই ঘুমে ছিলেন। হামলাকারীরা তাদের ঘর-দরজা ভাঙচুর করে নারী-পুরুষকে টেনে বাইরে বের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।
তাদের হামলায় জিলু মিয়া, তার স্ত্রী হেনা বেগম, ছেলে রাসেল মিয়া, জাকির মিয়ার ছেলে মাহিদ ও নুরুল, ঝুনু মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম, শফিক মিয়ার মেয়ে হাছনা বেগম ও নাজমা বেগম আহত হয়। হামলাকারীরা আহত রাসেলের পায়ুপথ দিয়ে লোহার রডও ঢুকিয়ে দেয়। হামলার সময় আনোয়ার হোসেন গরু চড়াতে বাড়ির নিকটবর্তী মাঠে ছিলেন। প্রতিপক্ষ সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেন মারা যান। এছাড়া আহত রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
নিহত আনোয়ার হোসেনের চাচাতো বোন তাহমিনা বেগম বলেন, সুমন মিয়া, বাদশা মিয়া, গণি মিয়া, শাহিন মিয়া ও কাদির মিয়া গংরা রামদাসহ অস্ত্র নিয়ে সকাল ৮টায় আমাদের ঘরে হামলা চালায়। ঘর দোয়ার ভাঙচুর করে আমার পিতা জিলু মিয়া, ভাই রাসেল মিয়াসহ মহিলাদের ঘর থেকে টেনে বের করে কুপাতে শুরু করে। এসময় আমার চাচাতো ভাই আনোয়ার হোসেন বাড়ির পাশের মাঠে গরু নিয়ে গিয়েছিলেন। হামলাকারীরা সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্যাহ বদরুল বলেন, তাদের দুই পক্ষের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার ঘরের সামন দিয়ে যাওয়া নিয়ে জিলু মিয়ার ওপর হামলার ঘটনাটি মিমাংসার জন্য রবিবার ইউনিয়ন পরিষদে বিচারের দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু শনিবার সকালেই গণি মিয়া, কাদির মিয়া ও বাদশা মিয়া গংরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আনোয়ার হোসেনকে হত্যাসহ অনেক নারীপুরুষকে আহত করে। হামলাকারীরা রাসেল নামক যুবকের পায়ুপথ দিয়ে লোহার রড ডুকিয়ে দেয়ায় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক হত্যাকান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত এজাহার নামীয় ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করা রয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
(সুরমামেইল/এমএনআই)
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি