সিলেট ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:০৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
ফয়সল আহমদ :: আজ বৃহস্পতিবার দীর্ঘ তিন যুগ পর সিলেটে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী তাবলিগ জামাতের সব চেয়ে বড় জেলা ইজতেমা। ‘আমিন’ ‘আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে লাখো মুসল্লীর ঢল দক্ষিণ সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়ক সংলগ্ন খিদিরপুরের পশ্চিম, লতিপুরের উত্তর ও হাজরাইয়ের দক্ষিণ এলাকার বিশাল মাঠে।
বিশ্ব ইজতেমার অংশ হিসেবে আজ শুরু হওয়া ইজতেমা শনিবার শেষ হবে আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে।
আজ ফজরের নামাজের পর থেকে আম (সাধারণ) বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার অংশ হিসেবে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার তিন দিনব্যাপী ইজতেমার শেষদিন শনিবার সকালে আখেরি মুনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আগে থেকেই আসতে শুরু করেছেন। ৫ থেকে ৬ লক্ষ মুসল্লির জন্য প্রায় সাড়ে ৯ লাখ বর্গফুট মাঠের প্যান্ডেল নির্মাণ করা হলেও শেষের দিনে আখেরি মুনাজাতে অংশ নিতে আশপাশের এলাকা জুড়ে ১০ থেকে ১২ লক্ষ মুসল্লির সমাগম ঘটবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে ইজতেমার মাঠে ঘুরে দেখা যায়, ৬শ’ কেদার (প্রায় ২’শ একর) জমির উপর সিলেট জেলার ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মপ্রাণ মানুষের সুবিধার্থে প্যান্ডেল দিয়ে সাজানো হয়েছে বিশাল মাঠ। ওই মাঠে মোট ১১টি খিত্তা (এলাকা) রয়েছে। ১৬টি করে প্রত্যেকটি পয়েন্টে সাজানো মাঠে রয়েছে ২শ’টি মসজিদ ওয়ালি। এ ছাড়া মাঠের দক্ষিণ পাশে ৮ থেকে ১০ হাজার মুসল্লি যাতে এক সাথে ওজু করতে পারেন, সেজন্য করা হয়েছে একটি বিশাল ওজুখানা। এই ওজুখানা ছাড়াও আরো ২০ থেকে ২৫টি ছোট ওজু খানার ব্যবস্থা আছে। মাঠের একপাশে অন্তত ১৪’শ শৌচাগার রয়েছে; ১০টি গভীর নলকূপসহ প্রায় ১২ থেকে ১৫টি নলকূপ বসানো হয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য বসানো হয়েছে ১৮’শ অস্থায়ী শৌচাগার।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ, সিলেট সদর, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট উপজেলার ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের মুসল্লিরা ইজতেমার মাঠে জমায়েত হবেন। ইজতেমায় দেশি-বিদেশি ইসলামি চিন্তাবিদ ও ওলামায়ে কেরামগণ ঈমান, আকিদা, ইসলামের দ্বিনের দাওয়াত, ইসলাম ধর্ম ও আখিরাত সম্পর্কে বয়ান দেবেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ানের সঙ্গে সঙ্গে তা বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দু ও আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, ইজতেমার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। মুসল্লিরা যাতে নির্বিঘ্নে ইজতেমায় অংশ নিতে পারেন, সেজন্য পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইজতেমার মাঠে দু’টি অস্থায়ী ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে।
সিসিকি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বলেন, ইজতেমা মাঠে নলকূপ বসানোসহ পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। লাইট লাগানোর পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, ৩২ বছর পর সিলেটে ইজতেমা হচ্ছে। এর আগে ১৯৬৫ ও ১৯৮৪ সালে সিলেট জেলার সুরমা নদীর দক্ষিণ তীর সংলগ্ন টেকনিক্যাল মাঠে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমবার আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন ইউসূফ জি (রহ.) এবং দ্বিতীয়বার আখেরি মোনাজাত করেন এনামুল হাসান (রহ.)। তিনি বলেন, শেষবার ৮৪ সালে পলিটেকনিক মাঠে জেলা পর্যায়ে একটি ইজতেমা হয়েছিল। এবার ৩২ বছর পর সিলেটের ইজতেমা সফল করতে সবাই সহযোগিতা করেছেন।
সিলেটের ইজতেমাকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে নগর পুলিশ। ইজতেমার মাঠসহ পুরো এলাকাজুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে প্রায় এক হাজারেরও বেশি পুলিশ। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করবে র্যাবের সদস্যরা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইজতেমার মাঠসহ আশপাশ এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে। আর পুলিশের সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করবেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ইজতেমার মাঠসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেড়শতাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশের দুটি ওয়াচ টাওয়ার ও দুটি কন্ট্রোল রুমও স্থাপন করা হয়েছে তদারকি করার জন্য। এছাড়াও মাঠে ও মাঠের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে গোয়েন্দা ও সাদা পোশাকধারী বিপুলসংখ্যক পুলিশ। দক্ষিণ সুরমাসহ সুনামগঞ্জ বাইপাস, তেলিবাজার বাইপাস পয়েন্ট, লামাহাজরাই, চন্ডিপুল পয়েন্ট ও হুমায়ুন রশিদ চত্বরসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতেও বসবে পুলিশের চেকপোস্ট। বিভিন্ন যানবাহন ও সন্দেহজনক ব্যক্তিদের করা হবে তল্লাশি।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা জানান, ইজতেমার মাঠসহ আশপাশ এলাকায় প্রায় ১ হাজারেরও বেশি পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। ইজতেমায় তিন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা দেয়ার জন্য পোশাকি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
র্যাব সূত্র জানায়, র্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে ইজতেমার মাঠসহ আশপাশ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল ও গাড়ি দিয়ে র্যাবের ২৪ ঘণ্টা মনিটিরং থাকবে। ইজতেমা মাঠের পাশেই রয়েছে র্যাবের কন্ট্রোল রুম।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি