সিলেট ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : সুনামগঞ্জের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ২০০৫ সালে দুই দফা বিস্ফোরণে টেংরা উচ্চবিদ্যালয় ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তখন গ্যাস উত্তোলন কাজে নিয়োজিত কানাডীয় কোম্পানি নাইকো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার। তবে ১১ বছরেও নাইকো কথা রাখেনি। ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে প্রথম দফা বিস্ফোরণের পর টানা এক সপ্তাহ কূপে আগুন জ্বলে। একই বছরের ২৪ জুন দ্বিতীয় দফায় গ্যাসক্ষেত্রে আবার আগুন জ্বলে ওঠে। দুই দফা বিস্ফোরণের ফলে ভয়ে-আতঙ্কে এলাকার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনে কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী নেই। গ্যাসক্ষেত্রের উত্তরের সীমানাদেয়াল ঘেঁষা এক কক্ষের একটি আধা পাকা ঘরে কিছু শিক্ষার্থীকে পড়ানো হচ্ছে। মূল ভবনের উত্তর দিকে টিলার ওপর আরেকটি পুরোনো আধা পাকা ভবন আছে, যার একটি কক্ষে শিক্ষকেরা বসেন। পাশের আরেকটি কক্ষে ছিল ছাত্রীদের মিলনায়তন। এখন এটিতে ক্লাস করছে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। ভবন-সংকটের কারণে বিদ্যালয়ের মাঠের পশ্চিম দিকের ছাত্রাবাসের একটি কক্ষেও ক্লাস নিতে হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে প্রতিদিন এক শ্রেণির ক্লাস (পাঠদান) বন্ধ থাকে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাদেকুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাধ্য হয়ে তাঁরা পড়াচ্ছেন। গত বছরের ২৯ এপ্রিলের ভূমিকম্পে ভবনের দোতলার কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। এখন ভবনের যে অবস্থা, তাতে কোনোভাবেই এখানে কার্যক্রম চালানো নিরাপদ নয়। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ভবনের ভেতরের মেঝেতে এখনো গ্যাসের বুদ্বুদ উঠছে, এতে সমস্যা হচ্ছে। টেংরা উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষকের বলেন, গ্যাসক্ষেত্রে অগ্নিকান্ডের পর তৎকালীন সাংসদ, প্রশাসন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয় ৬০ লাখ টাকা। এ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে দাবি জানালে নাইকো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয়নি।একসময় নাইকো বলেছিল নতুন ভবন নির্মাণ করে দেবে। কিন্তু নাইকোর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর তারা বলে, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু করা যাবে না। ২০০৫ সালে স্থানীয় সাংসদ ছিলেন আহমদ মিলন। তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য নাইকোর কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছিলাম।’ টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রের বর্তমান ফিল্ড ইনচার্জ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিস্ফোরণের পর কয়েক দফা নাইকোর পক্ষ থেকে স্কুলের ভবনটি সংস্কার করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতোদিন সেটিতেই ক্লাস হয়েছে। এখন কেন হচ্ছে না তা তিনি জানেন না। ক্ষতিপূরণের ৬০ লাখ টাকা বা নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি বেশি দিন হয়নি। তাই স্কুলের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব না। এলাকার সাধারণ মানুষ বলেন নাইকো আগে ছিলো এখন নাই (কথা দিয়ে কথা রাখেনি)।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি