১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনা কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০২৫

১৫ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনা কর্তৃপক্ষ

Manual8 Ad Code

সুরমামেইল ডেস্ক :
গুম ও খুনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে একজন পিআরএল বা অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ নামে এক কর্মকর্তা ৯ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নোটিশ ছাড়া অনুপস্থিত থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

 

শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেস-১-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

 

মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘গত ৮ অক্টোবর (বুধবার) আইসিটিত তিনটি রিপোর্ট জমা হয়। যার একটা ছিল গুম সংক্রান্ত। যারা তখন ডিজিএফআই এ কর্মরত ছিল, সেখানকার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আরেকটা ছিল র‍্যাবের টিএফআই সেলে গুম নিয়ে। তৃতীয়টি ছিল গত বছরের ৪ ও ৫ আগস্ট রামপুরায় গুলি বর্ষণের ঘটনায়। এসব রিপোর্ট গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এসব সংবাদ গণমাধ্যমে আসা শুরু করে বেলা ১১টা থেকে ১ টার মধ্যে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সেটি কার্যকর করার জন্য আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে পাঠানো হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের আদেশ অনুযায়ী আগামী ২২ অক্টোবর তাদের আদালতে হাজির করতে বলা হয়।

Manual3 Ad Code

 

তবে সেনা কর্তৃপক্ষ শনিবার (১১ অক্টোবর) পর্যন্ত কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা কিংবা আদালতের আদেশের কপি হাতে পায়নি। তারপরও গণমাধ্যমে তথ্য পাওয়ার পর সেনা কর্তৃপক্ষ ৮ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যেই সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে ৯ অক্টোবর সকালের মধ্যে সেনা সদরে সংযুক্ত হতে বলা হয়।’

 

Manual1 Ad Code

এই শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘যথা সময়ে সবাই সেনা সদরে উপস্থিত হয়ে রিপোর্ট করলেও একজন সেনা কর্মকর্তা অদ্যাবদি অনুপস্থিত রয়েছেন। তার কোনও সন্ধান এখনও কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। তিনি হলেন- মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ। এই বিষয়ে সেনা সদর থেকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ৯ অক্টোবর সকালে তিনি আইনজীবির সঙ্গে কথা বলবেন বলে বেরিয়ে আর ঘরে ফেরেননি। হাসপাতাল ও তার নিকটাত্মীয়সহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করা হয়েছে। কিন্তু তার কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। নোটিশ ছাড়া অনুপস্থিত থাকার কারণে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ হিসেবে তার বিরুদ্ধে সেনা আইন অনুযায়ী পদেক্ষপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে বলা হয়েছে, তার প্রতি নজরদারি বাড়াতে। স্থল, বিমান ও সমুদ্র বন্দর দিয়ে যেন উনি অবৈধভাবে দেশের বাইরে না যেত পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উনার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনাতেও লোক পাঠানো হয়েছে। উনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন, বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা খোঁজ রাখছি।’

 

সেনা সদরে যে ১৫ জন কর্মকর্তা সংযুক্ত হয়েছেন তাদের সেনা কাস্টডিতে (হেফাজতে) রাখা হয়েছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে এখনও তাদের যোগাযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। একজন আছেন যিনি পিআরএল ও অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। তাদের কোন প্রক্রিয়ায় আদালতে সোপর্দ করা হবে কিংবা আদৌ করা হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তার আগে গত ৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে যে সংশোধনী আনা হয়েছে সেখানকার ধারা-উপধারার বিষয়ে ব্যাখ্যা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।’

 

এসব সেনা কর্মকর্তার অপরাধের দায় সেনাবাহিনী নেবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে এই মেজর জেনারেল পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘এ দায় কি নেওয়া উচিত?’

 

Manual2 Ad Code

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সংবিধান স্বীকৃত সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যে কারণে গত ৮ অক্টোবর এসব সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে আসার জন্য আদেশ দেওয়া হয়। আদেশে তাদের বলা হয়েছে ৯ তারিখে তারা যেন ঢাকা সেনানিবাসে সেনাসদরের হেফাজতে চলে আসে। গ্রেফতারি পরোয়ানা না পাওয়ার পরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’

 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও চায় গুম ও খুনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সঠিক বিচার হোক। সেনাবাহিনীর চায় ইনসাফ। ন্যায়বিচার বা ইনসাফের প্রশ্নে সেনাবাহিনী আপসহীন। সেনা প্রধানেরও নির্দেশনা এমনই।’

 

মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এমন অনেক সেনসিটিভ কেসের মধ্য দিয়ে বিগত ৫৪ বছর পার করে এসেছে। যাদের নামে অভিযোগ উঠে প্রথমে তাদেরকে আমরা হেফাজতে নিয়ে নেই। তখন বিভিন্ন কোর্ট মার্শাল হয় কোর্ট মার্শালের রায় অনুযায়ী তখন বিচারের রায় অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’

 

Manual8 Ad Code

(সুরমামেইল/এমকে)


সংবাদটি শেয়ার করুন

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code