সিলেট ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০১৬
সুরমা মেইল নিউজ : রাজধানী ঢাকা থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রক্রিয়াধীন পদ্মা বহুমুখী সেতু হবে এ রেলপথের গতিপথ। বিশাল এ কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ১০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আর বিদেশি সহায়তা হিসেবে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা চীনের ঋণ ব্যবহার করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পদ্মা সেতু হয়ে রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা-যশোর করিডোরে অপারেশনাল সুবিধাসমূহের আঞ্চলিক উন্নয়নসহ সংক্ষিপ্ত রুটে যোগাযোগ স্থাপন, বাংলাদেশের মধ্যে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অন্য একটি অংশে উপরুট স্থাপন, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইলসহ নতুন পাঁচ জেলা রেলওয়ের আওতায় নিয়ে আসা যাত্রীসেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ভবিষ্যতে বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরকেও রেললাইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। দেশের পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ বাড়াতে এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুর উপরের লাইনে চার লেনের সড়কপথ ও নিচের লেনে ব্রডগেজ রেললাইনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে ঢাকা থেকে সরাসরি খুলনা, যশোর, বেনাপোল ও সরাসরি মংলা পর্যন্ত রেলযোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। এ অবস্থায় ঢাকা-যশোর পথের দূরত্ব কমাতে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, আবার ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রয়োজন।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, রেলপথটি ঢাকা রেলস্টেশন থেকে গেণ্ডারিয়া-মাওয়া-পদ্মা সেতু ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত সংযুক্ত করবে এবং ভাঙ্গা জংশন থেকে কাশিয়ানী জংশন হয়ে রূপদিয়া ও সিঙিনগয়া স্টেশনকে যুক্ত করবে। ঢাকা গেণ্ডারিয়ার তিন কিলোমিটার ডাবল লাইনসহ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ১৭২ কিলোমিটার।
জানা যায়, প্রকল্পটি ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মোট দেশজ আয়ের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এক শতাংশ বাড়বে বলে প্রস্তাবনায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। প্রকল্পটির আওতায় ১৬৯ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ করা হবে। ২০টি স্টেশন নির্মাণ, ১০০ ব্রডগেজ গাড়ি সংগ্রহসহ বেশ কিছু কাজ করা হবে প্রকল্পের আওতায়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প তালিকা ফাস্টট্র্যাকে সংযোজনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি ২০২২ সালের মধ্যে শেষ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর ওপর ভিত্তি করে রাজধানী ঢাকা থেকে বরিশালে সরাসরি রেলযোগাযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। আর পদ্মা সেতুর ঢাকা থেকে সংযোগ স্থাপন করা হবে ভাঙ্গা পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ৯ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে প্রথমবারের মতো বরিশাল বিভাগ রেল যোগাযোগের আওতায় আসবে।
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি