‘মা ও শিশু বান্ধব খ্যাত চিকিৎসক’ হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রদীপ কুমার

প্রকাশিত: ১০:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২৩

‘মা ও শিশু বান্ধব খ্যাত চিকিৎসক’ হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন প্রদীপ কুমার

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ মজুবুর রহমানের হাত থেকে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পদক’ গ্রহণ করছেন প্রদীপ কুমার দাশ।


সুনির্মল সেন, সিনিয়র রিপোর্টার :
সিলেটে পরিবার-পরিকল্পনা কর্মসূচি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সকল বাঁধা দূর করে ‘মা ও শিশু বান্ধব খ্যাত চিকিৎসক’ হিসেবে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জৈন্তাপুর উপজেলা ‘ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’র উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার প্রদীপ কুমার দাশ।

 

প্রবাসী পরিবারের অধিক সন্তান জন্ম দেওয়ার প্রবণতা, অন্ধ-কুসংস্কার গোঁড়ামি আর ধর্মীয় রক্ষণশীলতায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে অনীহাকে তিনি দূর করে মা ও শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনার বার্তা দিয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে বারংবার “শ্রেষ্ঠ স্বাস্থ্যকর্মী পুরস্কার” নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন।

 

প্রদীপ কুমার দাশ প্রবাসী অধ্যূষিত সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার একনসময়ের স্বাধীন রাজ্য তথা আজকের জৈন্তাপুরের ‘ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র’র উপ-সহকারী কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পদে কর্মরত।

 

সিলেট জেলার ফতেহপুর ইউনিয়নটি একসময় ‘ধর্মীয় রক্ষণশীলতার কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের ব্যাপারে খুবই অনীহা ছিলো। প্রদীপ কুমার দাশ এখানে যোগদান করার পর ধীরে ধীরে এই সমস্যা দূর হয়েছে। বর্তমানে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণে এখন আর কোন বাধা নেই।

 

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ থেকে জানা যায়, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসকে সামনে রেখে প্রতিবছর তৃনমুলে কর্মরত-কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের ১০টি শ্রেণীতে ১০ জনকে ‘শ্রেষ্ঠ কর্মী’ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বছর ২০২৩ সালে প্রদীপ কুমার দাশ এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন, পরিবার পরিকল্পনার বার্তা তার কর্মরত এলাকায় পৌঁছানোর জন্য।

 

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে গত ১৯ জুলাই জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রধান অতিথি সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ মজুবুর রহমানের হাত থেকে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার প্রদক’ গ্রহণ করেন ‘ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার প্রদীপ কুমার দাশ।

 

পদক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিচালক বিপ্লব বড়ুয়া। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক তপন কুমার ঘোষ। এ সময় অন্যান্য জেলা কর্মকর্তা ও জৈন্তাপুর উপজেলার কর্মরত কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

জৈন্তাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় থেকে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনার বার্তা পৌঁছে দিয়ে সচেতনতা এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা (এম সি এইচ) শ্রেণীতে ২০১৯ সালে ডাঃ প্রদীপ কুমার দাশ ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯৭ এবং আরও বোনাস মার্ক ‘১৫ পেয়ে ‘শ্রেষ্ঠ কর্মী’ নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রদীপ কুমার দাশ ১২ বছর ধরে কর্মরত আছেন। এরআগে ২০০৯ সালে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ.ফ.ম রুহুল হকের কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেন। ২0১০ সালেও অনুরূপ পুরস্কার গ্রহণ করেন মাননীয় রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে। প্রতিবারই ‘শ্রেষ্ঠ কর্মীর’ পুরস্কার পাওয়ার পেছনে পুর্ব বছরের কর্মতৎপরতা মূল্যায়ন হয়েছে।

 

প্রদীপ কুমার দাশ জানান, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা দিতে গিয়ে মানুষের আস্থায় আসতে সক্ষম হন। এই আস্হা থেকে সাধারণ মানুষের কাছে পরিবার পরিকল্পনার বার্তা পৌঁছানোর কাজ করছেন। ফতেহপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইতোপূর্বে একটি ‘ বিশেষ কর্ণার’ তিনি স্থাপন করেছেন। এখান থেকে কিশোর -কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সর্বত্র সচেতন করা হচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়ার জন্য অামি আমার কর্মরত এলাকার মানুষের কাছে ঋনী। আমার কাজকে আমি বিশেষ সম্মান করি বলে, মা ও শিশু সেবায় আমি এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। আগে যেখানে কোনো মাদ্রাসায় গিয়ে আমি পরিবার পরিকল্পনার কথা বলতে সংকোচ করতাম, এখন সেখানে অনায়াসে সেই কথা বলতে পারছি।

 

(সুরমামেইল/এফএ)


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  
WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com